BN/Prabhupada 1078 - ভগবচ্চিন্তায় ২৪ ঘন্টা মন ও বুদ্ধি অর্পণ করে



660219-20 - Lecture BG Introduction - New York

ভগবচ্চিন্তায় ২৪ ঘন্টা মন ও বুদ্ধি অর্পণ করে যখন আপনি ভগবচ্চরণে প্রগাঢ় ভক্তি অর্জন করবেন, ঠিক তখনই জড় জাগতিক কর্তব্য কর্ম পালনের পাশাপাশি ভগবানকে স্মরণ করা সম্ভব হবে। আমাদেরকে সেই স্তরে উন্নীত হতে হবে। ঠিক যেমন অর্জুন সবসময় ভগবচ্চিন্তায় নিমগ্ন ছিলেন। ২৪ ঘন্টার মধ্যে তিনি এক সেকেন্ড ও কৃষ্ণ কে ভুলে যান নি। সর্বদা কৃষ্ণসঙ্গী , একই সাথে একজন যোদ্ধা। ভগবান কৃষ্ণ তাকে যুদ্ধ পরিত্যাগ করতে উপদেশ দেননি, বলেননি যে বনে অথবা হিমালয়ে গিয়ে ধ্যান কর। যোগের পন্থা অর্জুনকে উপদেশ করা হলে তিনি তা বর্জন করলেন- "এই পন্থা আমার দ্বারা সম্ভব নয়। " তারপর ভগবান বললেন " যোগীনাম অপি সর্বেসাম মদ গতেন অন্তরাত্মনা (ভ.গী.৬.৪৭)। মদ্‌ গতেন অন্তরাত্মনা শ্রদ্ধাবান ভজতে যো মাং স মে যুক্ততমো মতঃ তাই যিনি সর্বদা পরমেশ্বর ভগবানের চিন্তা করেন তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ যোগী, তিনিই সর্বাধিক জ্ঞানী এবং যুগপৎ তিনি একজন শ্রেষ্ঠ ভক্ত। ভগবান উপদেশ দিলেন যে তস্মাৎ সর্বেষু কালেষু মাম্‌ অনুস্মর যুদ্ধ চ (ভ.গী. ৮.৭)। ক্ষত্রিয় হিসেবে তুমি যুদ্ধ পরিত্যাগ করতে পার না। যুদ্ধ তোমাকে করতেই হবে। তাই একই সাথে তুমি যদি আমাকে স্মরণ করার চেষ্টা কর, তাহলে সেটা সম্ভবপর। অন্তকালে চ মামেব স্মরণ (ভ.গী. ৮.৫), " তাহলে মৃত্যু সময়ে ও আমাকে স্মরণ করা সম্ভব হবে।" ময্যার্পিত মনোবুদ্ধি মামেবৈষ্যসি অসংশয়। পুনরায় তিনি বললেন এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। কেউ যদি ভগবানের সেবায় পূর্ণ শরণাগত হয়, ভগবদভক্তি যুক্ত চিন্ময় সেবায় ব্রতী হয়, ময়া অর্পিত মন বুদ্ধি (ভ.গী.৮.৭)। কারণ আমরা দেহ দিয়ে কাজ করি না। আমরা কাজ করি মন ও বুদ্ধি দিয়ে। তাই আমাদের মন ও বুদ্ধি যদি সর্বদা ভগবানের চিন্তায় নিয়োজিত থাকে, তাহলে আমাদের ইন্দ্রিয়গুলি ও স্বাভাবিকভাবেই ভগবানের সেবায় নিয়োজিত থাকে। এটাই ভগবদগীতার রহস্য। এই কৌশল আয়ত্ত করতে হবে, কি করে একজন মন ও বুদ্ধি সহযোগে চব্বিশ ঘন্টা ভগবানের চিন্তায় ধ্যানস্থ হতে পারে . এবং এই কৌশলই একজনকে ভগবানের রাজ্যে অথবা চিন্ময় জগতে উন্নীত করতে পারে এই জড় শরীরটি ত্যাগ করার পর। আধুনিক বিজ্ঞানীগণ, বছরের পর বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, চন্দ্র গ্রহে পৌছাতে, কিন্ত এখনও সফল হয় নি। কিন্তু ভগবদগীতায় উপদেশ দেওয়া হয়েছে। ধরুন, একজন ব্যক্তি আরো ৫০ বছর বেঁচে থাকবে এবং সে..... কেউই তাকে ৫০ বছর ধরে চিৎজ্জগতের ধারণা দেয় নি। এটা খুব ভালো ধারণা। কিন্তু কেউ যদি ১০ বা ৫ বছর ধরেও আন্তরিকতার সহিত ভক্তিযোগ অনুশীলন করে , ময়া অর্পিত মনঃ বুদ্ধি (ভ.গী.৮.৭)... এটা শুধুমাত্র অনুশীলনের ব্যাপার। এবং সেই অনুশীলন খুব সহজেই ভক্তিযুক্ত পন্থা, শ্রবনের দ্বারা সম্ভব। শ্রবণম্‌, সহজতম পন্থাটি হলো শ্রবণ।

শ্রবণম্‌ কীর্তনম্‌ বিষ্ণু
স্মরণম্‌ পাদসেবনম্‌
অর্চনম্‌ বন্দনম্‌ দাস্যম্‌
সখ্যম্‌ আত্মনিবেদনম্‌
(শ্রী.ভা. ৭.৫.২৩)

এই হলো নববিধা ভক্তি। সবচাইতে সহজ পন্থা হলো শ্রবণ।