BN/Prabhupada 0081 - সূর্য লোকে শরীর অগ্নি দিয়ে তৈরি

The printable version is no longer supported and may have rendering errors. Please update your browser bookmarks and please use the default browser print function instead.


Lecture on BG 2.13 -- New York, March 11, 1966

তাই এখানে, এখানে বলা হয়েছে যে ধীর, ধীর।

দেহিনোস্মিন যথা দেহে
কৌমারং যৌবনং জড়া
তথা দেহং তরো প্রাপ্তির
ধীরস্তত্র ন মুহ্যতে
(ভ.গী.২.১৩)

দেহিনঃ। দেহিনঃ এর অর্থ হল যিনি এই জড় শরীর গ্রহণ করেছেন।" অস্মিন, অস্মিন কথার অর্থ হল এই জগতে অথবা এই জীবনে। যথা যেমন দেহে। দেহের অর্থ এই শরীরে। কারন দেহিন সুতরাং এখানে এটি বলা হয়েছে যে, ধীর। দেহিনোহস্মিন্‌ যথা দেহে কৌমারং যৌবনং জরা তথা দেহান্তরপ্রাপ্তির্ধীরস্তত্র ণ মুহ্যতি।। (ভগবদ্গীতা ২.১৩)। দেহিনঃ। দেহিনঃ মানে "সে, যে এই জড় দেহ ধারণ করেছে।" অস্মিন। অস্মিন মানে "এই জড় জগতে" অথবা "এই জীবনে।" যথা, "যেমন।" দেহে। দেহে মানে "এই দেহের অভ্যন্তরে।" কারণ দেহিনঃ মানে "যে এই জড় দেহ ধারণ করেছে," আর দেহে, "এই দেহের অভ্যন্তরে।" সুতরাং আমি এই দেহের অভ্যন্তরে বসে আছি। কিন্তু আমি আমি এই দেহ নই। ঠিক যেমন তোমরা এই শার্ট এবং কোর্টের ভিতরে রয়েছে, একইভাবে আমিও এই দেহের ভিতরে রয়েছি, স্থুল দেহ আর সূক্ষ্ম দেহ। ভূমি, জল, অগ্নি, বায়ু, এবং আকাশ দিয়ে এই স্থুল দেহ তৈরি হয়েছে, আমাদের স্থুল দেহটা হচ্ছে সম্পূর্ণ জড় দেহ। পৃথিবী নামক এই গ্রহের প্রধান বৈশিষ্ট্য বা লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে মাটি। যে কোন জায়গায় এই জড় দেহটি মাটি, জল, আকাশ, বায়ু ও অগ্নি দিয়ে তৈরি। এগুলো হচ্ছে পাঁচটি উপাদান। ঠিক যেমন দালান। সম্পূর্ণ দালানটি মাটি, জল ও আগুন দিয়ে তৈরি। তোমরা কিছু মাটি নিয়ে সেটা দিয়ে ইট বানিয়ে আগুনে পোড়াও , মাটির সাথে জল মিশিয়ে ইটের আকারে বানিয়ে সেটাকে আগুনের মধ্যে দাও, যখন এটি অনেক শক্ত হয়ে যায়, তখন তোমরা এটিকে সাজিয়ে বড় বড় দালানে রূপ দাও। এটি শুধু মাটি, জল আর আগুনের প্রদর্শনী ছাড়া আর কিছুই নয়। এই যা। একইভাবে, আমাদের দেহটাও এইভাবে তৈরিঃ মাটি, জল, আগুন, বায়ু আর আকাশ। শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে বায়ু চলাচল করছে। তোমরা তা জান। বায়ু সবসময়ই সেখানে রয়েছে। এই বাইরের চামড়াটা হচ্ছে মাটি, আর পাকস্থলীতে রয়েছে তাপ। তাপ ছাড়া তুমি কোন কিছু হজম করতে পারবে না। দেখেছ? যখনই অগ্নি নির্বাপিত হয়ে যায়, তোমার হজম শক্তি খারাপ হয়ে যায়। আরও অনেক বিষয়। এগুলো হচ্ছে আয়োজন। এই গ্রহে আমরা এরকম দেহ পেয়েছি, যেখানে মাটি হচ্ছে প্রধান উপাদান। একইভাবে, অন্যান্য গ্রহে, যেখানে জল হচ্ছে প্রধান বিষয় বা উপাদান, কোথাও আবার আগুন হচ্ছে প্রধান বৈশিষ্ট্য। সূর্য গ্রহে, সেখানকার দেহগুলো... সেখানেও জীব রয়েছে, কিন্তু সেখানকার দেহ গুলো হচ্ছে অগ্নিময়। তারা আগুনের মধ্যে বেঁচে থাকতে পারে। একইভাবে, বরুণলোক, ভেনাসে, সবগুলো গ্রহেই তাদের ভিন্ন ভিন্ন ধরণের দেহ রয়েছে। ঠিক যেমন এখানে তোমরা জলের মধ্যে এই অভিজ্ঞতা লাভ করতে পার। জলজ বা জলচর প্রাণী, তাদের রয়েছে ভিন্ন ধরণের দেহ। বছরের পর বছর ধরে জলচর প্রাণীরা সেখানে একত্রে বসবাস করে, তারা সেখানে খুব আরামদায়ক ভাবে থাকে। কিন্তু যেই মুহূর্তে তুমি এটিকে মাটিতে টেনে আনবে, এটি মরে যাবে। একইভাবে, তোমরা মাটিতে খুব আরামদায়ক ভাবে থাক, কিন্তু যখনই তোমাকে জলে ডুবানো হবে , তুমি মারা যাবে। কারণ তোমার দেহের গঠন ভিন্ন, ওদের দেহের গঠন ভিন্ন, পাখির দেহের গঠন... ভারী ভারী পাখিরাও আকাশে উড়তে পারে, কিন্তু এগুলো হচ্ছে ভগবান কৃতক তৈরি উড়ার যন্ত্র। কিন্তু তোমাদের মানুষের তৈরি যন্ত্র গুলো শুধু মড়মড় শব্দ করে, বিপর্যস্ত হয়ে যায়। তোমরা তা দেখেছ? কারণ এগুলো কৃত্রিম। সুতরাং এই হচ্ছে আয়োজন। প্রত্যেকটা জীবের বিশেষ ধরণের দেহ রয়েছে। দেহিনোহস্মিন যথা দেহে (ভগবদ্গীতা ২.১৩)। আর এই দেহের প্রকৃতি কি রকম? এখানে এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, কিভাবে আমরা আমাদের দেহ পরিবর্তন করি? কিভাবে... কিন্তু, কিন্তু এটি আমাদের জন্য একটি কঠিন সমস্যা কারণ আমরা নিমগ্ন হয়ে রয়েছি দেহ এবং আত্মা অভিন্ন এই চেতনার মধ্যে। আধ্যাত্মিক বিষয়ের ক্ষেত্রে A, B, C, D মানে প্রাথমিক জ্ঞান হলো এটি জানা যে "আমি এই দেহ নই।" যদি না কারো এই বিষয়ে দৃঢ় বিশ্বাস জন্মায় যে "আমি এই দেহ নই," তাহলে সে আধ্যাত্মিক জীবনে উন্নতি করতে পারবে না। তাই ভগবদ্গীতার প্রথম শিক্ষাকে এইভাবে গ্রহণ করা হয়। তো এখানে এই যে দেহিনোহস্মিন। দেহী বা আত্মা। দেহী মানে আত্মা। যে এই জড় দেহ ধারণ করেছে তাকে বলা হয় দেহী। অস্মিন্‌, সে এখানে রয়েছে , কিন্তু সে শুধু তার দেহটা পরিবর্তন করছে।