BN/Prabhupada 0209 - কিভাবে বাড়িতে ফিরে যাওয়া যায়, ভগবদ্ধাম ফিরে যাওয়া যায়



Lecture on SB 6.1.16 -- Denver, June 29, 1975

তাই মানব জন্ম শুদ্ধিকরণের জন্য উদ্দিষ্ট আমরা আমাদের দৈনিক রুটি পেতে খুব কঠোর পরিশ্রম করছি। মানুষ অলসভাবে বসে থাকলে তাদের রুটি পাবে না। সেটা সম্ভব না। তারা খুব কঠিন কাজ করছে। ডেনভারের এই সুন্দর শহর এটি জঙ্গল বা মরুভূমি থেকে উত্থিত হয়নি। এই শহরটি এত সুন্দরভাবে তৈরি করতে খুব কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে, পুরোপুরি দাঁড়িয়ে থাকতে। তাই আমাদের কাজ করতে হবে। যদি আমরা সুখী হতে চাই, তাহলে আমাদের কাজ করতে হবে। এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু কৃষ্ণ বলেছেন যে যান্তিদেবা-ব্রতা দেবান (ভ.গী ৯.২৫) কেউ এই দুনিয়াতে কাজ করছে সুখী হবার জন্য জড় বায়ুমণ্ডলের মধ্যে, অনেক বড় মানুষ হয়ে, অথবা একটু বেশি বুদ্ধিমান হয়ে, তারা এই জীবনে সুখী হয় না, কিন্তু পরবর্তী জীবনে তারা খুশি হতে চায়। কখনও কখনও তারা উচ্চতর গ্রহে যেতে চান। তাই যান্তি দেব-ব্রতা দেবান পিতৃণ যান্তি পিতৃ-ব্রতা (গীতা. ৯.২৫) তাই যেমন আপনি কাজ করছেন, আপনি আপনার ইচ্ছামত ফল পাচ্ছেন। কিন্তু শেষে, কৃষ্ণ বলেছেন, মদ যাজীনো পি যান্তি মাং "যদি আপনি আমার জন্য কাজ করেন অথবা যদি আপনি আমাকে পূজা করেন, তাহলে আপনি আমার কাছে আসবেন।" তাই পার্থক্য কোথায় কৃষ্ণের কাছে যাওয়া এবং এই জড় জগতে থাকার মধ্যে। পার্থক্য হচ্ছে আব্রহ্ম-ভুবনাল্লোকে পুনর আবর্তনো অর্জুন (ভ.গী ৮.১৬) এই জড় জগতের যদি সর্বোচ্চ গ্রহলোক, ব্রহ্মলোকে যান, তবুও সেখানে জন্ম, মৃত্যু, জড়া এবং ব্যাধি আছে। আপনাকে আবার ফিরে আসতে হবে। যেমন এই মনুষরা চন্দ্রলোকে যাচ্ছেন এবং আবার এখানে ফিরে আসছেন। তাই এই প্রকার যাওয়া এবং আসা ভাল নয়, যদ গত্বান ন নির্বততে (ভ.গী ১৫.৬) যদি আপনি এই ধরনের গ্রহে যান যেখান থেকে আপনাকে আর ফিরে আসতে না হয় এই জড় জগতে, সেটা সর্বোচ্চ সফলতা, সেটা হচ্ছে কৃষ্ণলোক।

তাই কৃষ্ণ বলেছেন যে "যদি আপনি কঠোর পরিশ্রম করেন এই জগতে সুখী হবার জন্য।" একই পরিশ্রম, যদি আপনি আমার পূজায় করেন, কৃষ্ণ, তাহলে আপনি আমার কাছে আসবেন।" মদ-যাজীনো পি যান্তি মাম। বিশেষভাবে কি সুবিধা? মামেপেত্য কৌন্তেয় দুঃখালয়ম অশ্বাশতম নাপ্নুবন্তিঃ (ভ.গী ৮.১৫) "যে আমার কাছে আসবে, সে কখনো আর জড় জগতে ফিরে যাবে না।" তাই এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন মানুষদের শিক্ষা দিচ্ছেন কিভাবে বাড়ি ফিরে যেতে হয়, কিভাবে ভগবদ্ধাম ফিরে যেতে হয়। সেটা মানুষকে নিত্য সুখী করবে। তাই এই জীবনে, কৃষ্ণভাবনামৃত মানুষ, তারা অসুখী নয়। আপনি ব্যবহারিক রূপে দেখতে পারেন। আমরা খুব সুন্দর ঘরে বসে আছি এবং হরে কৃষ্ণ কীর্তন করছি এবং প্রসাদ পাচ্ছি। দুঃখ কোথায়? কোন দুঃখ নেই। এবং অন্য পদ্ধতিতে, তাদের এত দুঃখের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এদিকে কৃষ্ণ ভাবনামৃতে, কোন দুঃখ নেই। যেটা ভাগবত গীতাতে বলা হয়েছে ; সুসুখম কর্তুম অব্যয়ম (ভ.গী ৯.২) সুসুখম। যখন আপনি ভক্তিময় জীবন যাপন করেন, এটা শুধু সুখমই নয়- সুখম অর্থ খুশী- কিন্তু অন্য শব্দ যুক্ত হয়েছে, সুসুখম, " খুব আরামদায়ক ভাবে, খুব খুশী।" কর্তুম, ভক্তিমূলক সেবা চালানো, খুব আনন্দ, খুব খুশী। এবং অব্যয়ম। অব্যয়ম মানে যা কিছু আপনি করেন, সেটা আপনার স্থায়ী সম্পত্তি। অন্য কোন জিনিস স্থায়ী নয়। মনে করুন আপনি খুব উন্নত শিক্ষিত ব্যাক্তি। আপনি এম এ, পি এইচ ডি, এবং অন্য কিছু করেছেন। কিন্তু এটা অব্যয়ম নয়; এটা ব্য়য়ম, ব্যয়ম মানে এটা স্থায়ী নয়। যখনি আপনার শরীর শেষ হবে, আপনার তথাকথিত ডিগ্রীও শেষ হবে। তারপর আবার পরবর্তি জীবন, আপনি মানুষ্য জীবন পাবেন... অবশ্যই আবার এম. এ, পি.এইচ. ডি হবার সু্যোগ আছে। কিন্তু প্রথমে এম.এ, পি.এইচ.ডি এই জীবনে, শেষ হয়ে গেছে।

তাই যা কিছু আমরা এখানে অর্জন করছি, সেটা অব্যয়ম নয়। ব্যায়ম অর্থ খরচ, এবং অ মানে "না", যা ব্যয় করা যায় না। যদি আপনি কিছু টাকা পান, যদি আপনি খরচ করেন, তাহলে এটা ব্যায়ম, কিছু সময় পর এটা শেষ হবে। অব্যায়ম মানে আপনি যতখুশী আপনি খরচ করুন, তবুও শেষ হবে না। এটা অব্যায়ম। তাই কৃষ্ণের ভক্তিমূলক সেবা বর্ননা করেছেন সুসুখম কর্তুম অব্যায়ম। যাকিছু আপনি করছেন, যদি আপনি দশ শতাংশ লাভ করেন, সেই দশ শতাংশ আপনার স্থায়ী। তাইজন্য ভগবদ গীতাতে বলে হচ্ছে, শুচিনাম শ্রীমতাম গেহে যোগ-ভ্রষ্ট সঞ্জায়তে (ভ.গী ৬.৪১) যিনি ভক্তিযোগ এই জীবনে শেষ না করতে পারবেন, তিনি আরেকটা মানুষ্য জীবনের সুযোগ পাবে। শুধুমাত্র মানুষ্য জীবনে নয়, এটা বলা হয়েছে, তারা স্বর্গীয় গ্রহলোকে যায়, তারা সেখানে উপভোগ করে, এবং তারপর আবার এই গ্রহে ফিরে আসে। এবং এই তারাও সাধারণ মানুষ নয়। শুচিনাম শ্রীমতাম গেহেঃ তারা খুব পবিত্র পরিবারে জন্ম নেন, যেমন ব্রাহ্মণ-বৈষ্ণব, শুচিনাম্‌, এবং শ্রীমতাম, খুব ধনী পরিবার। তারপর এটা তার কর্তব্য। তাই যারা ধনী পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেছেন... আপনারা আমেরিকানরা, আপনারা মনে করুন জন্ম গ্রহণ করেছেন ধনী পরিবারে। প্রকৃতপক্ষে এটা তাই। তাই আপনাকে এইভাবে মনে করা উচিত যে, "আমাদের পূর্বের ভক্তিমূলক সেবার কারণে, কৃষ্ণের কৃপার কারনে আমরা এই দেশে জন্ম পেয়েছি । কোন দারিদ্র্য নেই, "শ্রীমতাম। তাই আপনাকে কৃষ্ণ ভাবনামৃত খুর গম্ভীর ভাবে গ্রহণ করা উচিত। আপনারা এই সু্যোগ পেয়েছেন। আপনারা দরিদ্র্য নয়। আপনাদের সময় নষ্ট করার প্রয়োজন নেই, "খাবার কোথায়? খাবার কোথায়? খাবার কোথায়?" অন্য দারিদ্র্যপীড়িত দেশের মতো, তারা খাবার খুঁজে পেতে বিব্রত হয়। কিন্তু আপনারা খুব সৌভাগ্যশালী, তাই হিপ্পি হয়ে এই সুযোগটি নষ্ট করবেন না। অপচয় করবেন না। ভক্ত হন, কৃষ্ণের ভক্ত। এটা কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন এবং আমাদের অনেক কেন্দ্র আছে। শুধু এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত বিজ্ঞান জানতে চেষ্টা করুন এবং আপনার জীবন পরিপুর্ন করুন। এটা আমাদের অনুরোধ।

আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।