BN/Prabhupada 0390 - জয় রাধামাধব - তাৎপর্য

The printable version is no longer supported and may have rendering errors. Please update your browser bookmarks and please use the default browser print function instead.


Purport to Jaya Radha-Madhava -- New York, July 20, 1971

তাই এটা কৃষ্ণের মূল প্রকৃতি, কৃষ্ণের মূল স্বভাব। তিনি রাধা মাধব। তিনি শ্রীমতী রাধারাণীর প্রেমিক। এবং কুঞ্জবিহারী, সর্বদা গোপীদের সঙ্গে বৃন্দাবনের কুঞ্জে আনন্দ বিহার করছেন রাধা-মাধব কুঞ্জবিহারী। তাই তিনি শুধু রাধারাণীর প্রেমিক নন, তিনি ব্রজজনবল্লভ-ও। পুরো বৃন্দাবনের অধিবাসীরা, তারা কৃষ্ণকে ভালোবাসে। তাঁরা আর কিছু জানেন না। তাঁরা জানেন না কৃষ্ণ ভগবান কি না, তারা খুব ভীত হয় না যে, "যদি সে ভগবান হয় তবে আমি কৃষ্ণকে ভালবাসব"। তিনি ভগবান হতে পারে অথবা উনি যা কিছু হন। এটা কোন ব্যাপার নয়। কিন্তু আমরা কৃষ্ণকে ভালোবাসি। ব্যাস। একে বিশুদ্ধ প্রেম বলা হয়। "যদি কৃষ্ণ ভগবান হয়, তাহলে আমি তাকে ভালোবাসব"-এটি শর্তযুক্ত প্রেম। এটি শুদ্ধ প্রেম নয়। কৃষ্ণ ভগবান হতে পারে অথবা যা কিছু তিনি হন, কিন্তু তার অদ্ভুত কার্যের জন্য, ব্রজবাসী তারা ভাবছে, "ও কৃষ্ণ, সে খুব আশ্চর্য শিশু, মনে হয় কোন দেবতা। হতে পারে কোন দেবতা।" কারণ সাধারণত মানুষ ভাবে যে দেবতারা খুব শক্তিমান হয়। তারা এই ভৌতিক জগতে শক্তিমান। কিন্তু তারা জানে না যে কৃষ্ণ তাদের সবার উপরে। ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ (ব্র.সং৫.১) সর্ব্বোচ্চ দেবতা হচ্ছেন ব্রহ্মা, তিনি বলেছেন, "পরম নিয়ন্তা হচ্ছেন কৃষ্ণ।"

তাই বৃন্দাবনে অধিবাসীরা, তারা কৃষ্ণকে কোন শর্ত ছাড়াই ভালোবাসে, একইভাবে কৃষ্ণ তাদেরকে ভালোবাসেন। ব্রজ-জন-বল্লভ গিরীবরধারী। যখন বৃন্দাবনের অধিবাসীরা বিপদে ছিলেন কারন তিনি ইন্দ্র যজ্ঞ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এবং ইন্দ্র খুব রেগে গিয়েছিলেন, এবং তিনি বড় শক্তিশালী মেঘ পাঠান, এবং সাত দিন ধরে বৃন্দাবনে বৃষ্টি দেন, তাই যখন অধিবাসীরা বিপদে পড়েছিলেন, কৃষ্ণ যদিও সাত বছরের বালক ছিলেন, তিনি গোর্বধন পর্বত তুলে তাদের রক্ষা করেন। তাই তিনি ইন্দ্রকে শিক্ষা দিয়েছিলেন যে "তোমার উপদ্রব থামানো আমার সামান্য আঙুলের কাজ মাত্র। ব্যাস্‌।" তারপর ইন্দ্র তাঁর কাছে হাঁটু গেঁড়ে ক্ষমা চান। এইসব তোমরা কৃষ্ণ বইতে পাবে। তাই গোপীজনবল্লভ রূপে, তার একমাত্র কাজ কিভাবে গোপীজনদের রক্ষা করা যায়। তাই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন হচ্ছে কিভাবে গোপীজন হওয়া যায়। তাহলে তিনি পাহাড় বা পর্বত উত্তোলন দ্বারা, কৃষ্ণ যে কোন বিপদ থেকে আমাদের রক্ষা করবেন। কৃষ্ণ অত্যন্ত দয়ালু ও খুব শক্তিশালী। যখন কৃষ্ণ পাহাড় তুলেছেন, উনি কোন যোগ অভ্যাস করেন নি। এবং এই হচ্ছে ভগবান। যদিও তিনি বাচ্চা ছিলেন, তিনি শিশুর মতো খেলা করছিলেন, তিনি একটি শিশুর মতন কাজ করছিলেন, কিন্তু যখন প্রয়োজন হয় তিনি ভগবান রূপে প্রকট হন। এই হচ্ছে কৃষ্ণ। এই হচ্ছেন কৃষ্ণ, না কি তাঁকে কোন যোগ অভ্যাস করতে হয়েছে তারপর তিনি ভগবান হয়েছেন। না, তিনি সেই রকমের ভগবান নন, তৈরী করা ভগবান নন। তিনি ভগবান।

তাই গোপী-জন-বল্লভ গিরী-বর-ধারী। আর একটি বাচ্চা রূপে, যশোদার শিশু রূপে, যশদা-নন্দন... কৃষ্ণ ভক্তের সন্তান হতে পছন্দ করেন। তিনি তার পিতা মাতা দ্বারা শাসন পছন্দ করেন। কারণ প্রত্যেকে তার পূজা করেন, কাউ তাকে শাসন করেন না, তাই তিনি আনন্দ পান, যখন ভক্ত তাকে শাসন করেন। এটা কৃষ্ণের সেবা যদি কৃষ্ণ শাসনের দ্বারা খুশী হন, তো একজন ভক্ত এই দায়িত্ব নেন। 'ঠিক আছে, আমি আপনার পিতা হব এবং আপনাকে শাসন করব।" যখন কৃষ্ণ যুদ্ধ করতে চান, তার একজন ভক্ত হিরণ্যকশিপু রূপে তারা সঙ্গে যুদ্ধ করেন। তাই কৃষ্ণের অনেক কার্যকলাপ ভক্তদের সাথে আছে। তিনি আছেন ... তাই, কৃষ্ণের অংশীদার হওয়ার জন্য ... কৃষ্ণ ভাবনামৃত বিকাশের জন্য, যশোদা-নন্দন ব্রজ-জন-রঞ্জন। তার কাজ হচ্ছে কিভাবে সন্তুষ্ট করা যায়.. ব্রজ-জনের কাজ কিভাবে কৃষ্ণকে সন্তুষ্ট করা যায়, একইভাবে কৃষ্ণের কাজ হচ্ছে কিভাবে ব্রজ-জনদের সন্তুষ্ট করা যায়। এই হচ্ছে ভালোবাসার আদানপ্রদান। যামুনাতীর বনচারী কৃষ্ণ পরম পুরুষ ভগবান, যমুনা তটে ঘুরছেন। গোপীদের, গোপ বালকদের, পাখীদের, গাভীদের, বাছুরদের আনন্দ দেবার জন্য, তারা সাধারণ পাখি, প্রাণী, বাছুর বা পুরুষ নয়। তারা আত্ম উপলব্ধির সর্বোচ্চ শিখরে অবস্থিত। কৃত-পূন্য-পূঞ্জঃ (শ্রী.ভ.১০.১২.১১) অনেক অনেক জন্মের পর তারা কৃষ্ণের সাথে খেলার করার মতো এই অবস্থানে এসেছেন ।

তাই আমাদের কৃষ্ণ ভাবনামৃত অন্দোলন খুব সুন্দর, যে প্রত্যেকে কৃষ্ণ লোকে যেতে পারেন। এবং তার পার্ষদ হতে পারেন, বন্ধু হিসাবে অথবা অন্য আর কিছু ভাবে, তার সেবক হিসাবে, পিতা হিসাবে, মাতা হিসাবে। এবং কৃষ্ণ এই প্রস্তাবগুলির যেকোনও কিছুতে সম্মত হন। এগুলি 'প্রভু চৈতন্যের শিক্ষার' মধ্যে খুব সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। তাই কৃষ্ণ বৃন্দাবন ছেড়ে এক পাও যান না। মূল কৃষ্ণ বৃন্দাবনে রয়েছে। এটি ব্রহ্ম সংহিতা বর্ণিত হয়েছে,

চিন্তামণি-প্রকর-সদ্মসু কল্প-বৃক্ষ-
লক্ষাবৃতেষু সুরভির অভিপালয়ন্তম
লক্ষ্মী-সহস্র-শত-সম্ভ্রম-সেব্যমানম
গোবিন্দম-আদি-পুরুষং...
(ব্র.সং৫.২৯)

ব্রহ্ম পরম ব্যক্তিত্ব গোবিন্দকে স্বীকার করছেন, কৃষ্ণ বৃন্দাবনে। বেণু কন্বন্তম্‌। "তিনি বাঁশি বাজাতে থাকেন।"

অরবিন্দ-দলায়তাক্ষ
বর্হাবতম্‌ সমসিতাম্বুদসুন্দরাঙ্গম্‌
কন্দর্পকোটিকমনীয়বিশেষশোভং
গোবিন্দং আদি পুরুষং তমহং ভজামি
(ব্র.সং৫.৩০)

সুতরাং এই বইগুলির সুবিধা গ্রহণ করুন, এই জ্ঞান, এবং এই প্রসাদের লাভ নিন, জপ কীর্তন করুন, আর সুখী হন এবং কৃষ্ণের কাছে যান। এসব এতোই সুন্দর।