BN/Prabhupada 0407 - হরিদাস ঠাকুরের জীবনী এই ছিল যে তিনি এক মুসলমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন

The printable version is no longer supported and may have rendering errors. Please update your browser bookmarks and please use the default browser print function instead.


Discourse on Lord Caitanya Play Between Srila Prabhupada and Hayagriva -- April 5-6, 1967, San Francisco

প্রভুপাদঃ এর মধ্যে একজন ব্রাহ্মণ এসেছিলেন এবং ভগবান চৈতন্যকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, "আমি বেনারসের সকল সন্ন্যাসীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি, কিন্তু আমি জানি যে আপনি এই মাওবাদী সন্ন্যাসীদের সাথে দেখা করবেন না, কিন্তু তবুও আমি আপনাকে আমন্ত্রণ আসতে এসেছি। আমার আমন্ত্রণ গ্রহণ করুন দয়া করে।" তাই চৈতন্য মহাপ্রভু এই সুযোগে প্রকাশানন্দ সরস্বতী্র সাথে দেখা করতে যান। তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়, এবং বেদান্ত সুত্রের চর্চা হয় প্রকাশনন্দ সরস্বতীর সঙ্গে, এবং তিনি তাকে একজন বৈষ্ণবে পরিণত করেন এটি আরেকটি ঘটনা।

হয়গ্রীবঃ এই লোকটা কতো বয়সী ছিলো?

প্রভুপাদঃ প্রকাশনন্দ সরস্বতী? তিনি বৃদ্ধ ছিলেন। অন্তত ষাট বছরের কম ছিল না। হ্যাঁ।

হয়গ্রীবঃ এবং শহরে তার ভূমিকা কী ছিল? তিনি কি ছিলেন ... তিনি বেদান্তিবাদী ছিলেন?

প্রভুপাদঃ প্রকাশনন্দ সরস্বতী তিনি একজন মায়াবাদী সন্ন্যাসী ছিলেন। তিনি চৈতন্য মহাপ্রভুর নীতি গ্রহণ করে এবং তাকে সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি তার পা স্পর্শ করেন এবং তিনি যোগদান করেন। কিন্তু কোনও উল্লেখ নেই যে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে একজন বৈষ্ণব হন, কিন্তু তিনি চৈতন্য মহাপ্রভুর দর্শন গ্রহণ করেন। কিন্তু সার্বভৌম ভট্টাচার্য, তিনি বৈষ্ণব হন, আনুষ্ঠানিকভাবে, তারপর তিনি প্রভু হরিদাসের সাথে দেখা করেন...

হয়গ্রীবঃ পঞ্চম দৃশ্য।

প্রভুপাদঃ পঞ্চম দৃশ্য।

হয়গ্রীবঃ এই সেই হরিদাস ঠাকুর? প্রভুপাদঃ হরিদাস ঠাকুর।

হয়গ্রীবঃ কার মৃত্যুর সময়? হরিদাসের মৃত্যুর সময়?

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ।। হরিদাস ছিলেন খুব বৃদ্ধ মানুষ। তিনি ছিলেন মুসলমান।

হয়গ্রীবঃ তিনি সেই ব্যাক্তি ছিলেন যাকে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ।

হয়গ্রীবঃ তাই পঞ্চম দৃশ্যের শেষে তার মৃত্যু হয়,

প্রভুপাদঃ আমরা এর জন্য নই ... অবশ্যই, হরিদাস ঠাকুরের একটি ভিন্ন জীবন আছে, কিন্তু আমরা তা দেখাতে যাচ্ছি না।

হয়গ্রীবঃ হ্যাঁ ঠিক আছে। এই বিশেষ ঘটনা। প্রভুপাদঃ বিশেষ ঘটনা, মহত্বপূর্ন, চৈতন্য মহাপ্রভু একজন ব্রাহ্মণ ছিলেন এবং তিনি ছিলেন সন্ন্যাসী। সামাজিক রীতিনীতি - অনুযায়ী তার একজন মুসলিমকে স্পর্শ করা উচিত নয়, কিন্তু এই হরিদাস ঠাকুর ছিলেন একজন মুসলিম এবং তাঁর মৃত্যুর পর তিনি তার শরীরটি নেন এবং নৃত্য করেন, এবং কবরস্থানে রাখেন এবং প্রসাদ বিতরণ করেন। এবং হরিদাস ঠাকুরের দুই তিনদিন স্বাস্থ্য ভালো ছিল না। কারণ তিনি মুসলমান, তাই জগন্নাথ মন্দিরের মধ্যে প্রবেশ করেননি। কারণ হিন্দুরা খুব কঠোর ছিল। তিনি ভক্ত ছিলেন, তিনি কিছুমনে করেন নি। কেন তিনি বিবাদ করবেন? তাই চৈতন্য মহাপ্রভু তাঁর আচরণের প্রশংসা করেন, তিনি আর কোন বিতর্ক সৃষ্টি করতে চান নি কারণ তিনি একজন ভক্ত হন। জোর করে তিনি মন্দির যেতে চান না। কিন্তু চৈতন্য মহাপ্রভু নিজেই প্রতিদিন আসেন এবং তাঁর সাথে দেখা করেন। সমুদ্রে স্নান করার আগে, তিনি প্রথমে হরিদাসের সাথে দেখা করে যেতেন। "হরিদাস? তুমি কি করছ?" হরিদাস তার সম্মান প্রদান করেন, এবং তিনি কিছুক্ষণ বসে বসে কথা বলতেন। তারপর চৈতন্য মহাপ্রভু তার স্নান গ্রহণ করতেন। এই ভাবে, একদিন তিনি এসেছিলেন এবং দেখেছিলেন যে হরিদাস খুব ভালো অনুভব করছে না। "হরিদাস, তোমার স্বাস্থ্য কেমন?" "হ্যাঁ প্রভু, এটা খুব ভাল না ... যদিও, এই শরীর।" তারপর তৃতীয় দিনে তিনি দেখেন হারিদাস দেহ ছেড়ে চলে যাবে। তারপর চৈতন্য মহাপ্রভু তাকে জিজ্ঞেস করলেন, "হরিদাস, তোমার ইচ্ছা কি? উভয়ই বুঝতে পারত। হরিদাস বললেন, "এই আমার শেষ মুহূর্ত, দয়া করে আমার সামনে দাঁড়াও।" তারপর চৈতন্য মহাপ্রভু তার সামনে দাঁড়ান এবং তিনি তার দেহ ত্যাগ করেন। (বিরতি)

হয়গ্রীবঃ আপনি উল্লেখ করেছেন...

প্রভুপাদঃ তার অপ্রকটের পর চৈতন্য মহাপ্রভু নিজে তার দেহটি উঠিয়ে নিয়ে যান, এবং অন্যান্য ভক্তরা তাদের সমুদ্র সৈকতে নিয়ে গিয়ে তাদের সমাধি খনন করেছিল। সেই সমাধি এখনও জগন্নাথ পুরীতে আছে। হরিদাস ঠাকুরের সমাধি। তারপর চৈতন্য মহাপ্রভু নাচতে লাগলেন। সেটা একটা বিশাল উৎসব ছিল। কারণ এটি একটি বৈষ্ণব উৎসব ছিল, সবকিছু কেবল কীর্তন এবং নৃত্য ছিল। তাই সেটা হরিদাস ঠাকুরের শেষ অনুষ্ঠান ছিল।

হয়গ্রীবঃ আপনি ভগবান শ্রীচৈতন্যের সাথে হরিদাস ঠাকুরের নৃত্যের কথা বলছিলেন।

প্রভুপাদঃ হরিদাসের দেহ। চৈতন্যদেব...মৃতদেহ নিয়ে। হরিদাসের মৃতদেহ নিয়ে

হয়গ্রীবঃ তাঁর মৃত দেহ নিয়ে?

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ, ওনার মৃত দেহ নিয়ে

হয়গ্রীবঃ তার মৃত্যুর পর।

প্রভুপাদঃ তার মৃত্যুর পর।

হয়গ্রীবঃ চৈতন্য...

প্রভুপাদঃ আমি বলতে চাচ্ছি, যখন হরিদাস বেঁচে ছিলেন, তিনি নৃত্য করতেন কিন্তু হরিদাসের অপ্রকটের পর চৈতন্য মহাপ্রভু নিজে তাঁর দেহটি কোলে নিয়ে নৃত্য করতে লাগলেন এর মানে হচ্ছে চৈতন্য মহাপ্রভু নিজেই তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান পালন করেছেন। তিনি সমুদ্রের পাশে দেহকে নিয়ে গেলেন, এবং সমাধিস্থলে উনি ...

হয়গ্রীবঃ তিনি আয়োজন করেছিলেন...

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ অন্তিম সংস্কার অনুষ্ঠান, হ্যাঁ।

হয়গ্রীবঃ কীর্তনের সহিত।

প্রভুপাদঃ কীর্তনের সাথে। কীর্তন সর্বদা সর্বত্র এবং সমাধি দেবার পর প্রসাদ বিতরণ করেন এবং কীর্তন করেন। হরিদাস ঠাকুর। তাই এখানে তোমাকে হরিদাসের সঙ্গে কিছু কথোপকথন দেখাতে হবে, কতোটা প্রেমময় ভাবে ...

হয়গ্রীবঃ ঠিক আছে। অন্য কিছু আছে কি... হরিদাস সম্পর্কে অন্য কোন তথ্য?

প্রভুপাদঃ হরিদাসের জীবন ইতিহাস হল যে তিনি একটি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কোনভাবে তিনি একজন ভক্ত হন এবং রোজ তিন লক্ষ হরিনাম জপ করতেন, হরে কৃষ্ণ,হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ, হরে হরে, হরে রাম, হরে রাম, রাম রাম, হরে হরে, এবং চৈতন্য মহাপ্রভু তাকে আচার্য বানিয়েছেন, নামের আচার্য অতএব, আমরা তাঁহাকে মহিমান্বিত করি "নামাচার্য হরিদাস ঠাকুরের জয়"। কারণ তিনি আচার্য বানিয়েছিলেন, হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপের আচার্য তারপর, যখন ভগবান চৈতন্য সন্ন্যাস গ্রহণ করেন, তখন হরিদাস ঠাকুর চেয়েছিলেন, "আমার প্রিয় প্রভু, যদি আপনি নবদ্বীপ ছেড়ে চলে যান, তাহলে আমার জীবনের আর কিই বা মূল্য আছে?" আপনি আমাকে নিয়ে যান অথবা আমাকে মেরে ফেলুন।" তারপর চৈতন্য মহাপ্রভু বললেন, "না, কেন মারা যাবে? আমার সাথে আসো।" তাই তিনি তাকে জগন্নাথ পুরীতে নিয়ে গেলেন। জগন্নাথ পুরীতে, কারণ তিনি নিজেকে একজন মুসলিম পরিবারে জন্ম বলে বিবেচনা করেন, তিনি সেখানে প্রবেশ করেন নি। তারপর চৈতন্য মহাপ্রভু তাকে কাশীনাথ মিশ্রের বাড়ীতে থাকতে দেন। এবং সেখানে তিনি জপ করতেন এবং চৈতন্য মহাপ্রভু তাঁকে রোজ প্রসাদ পাঠাতেন। এভাবে তাঁর দিন কাটত। এবং চৈতন্য মহাপ্রভু দৈনিক তাঁর সাথে দেখা করতে আসতেন এবং এইভাবে একদিন তিনি অপ্রকট হলেন।