BN/Prabhupada 1071 - আমরা যদি ভগবানের সঙ্গ করি, তাঁকে সহযোগিতা করি, তাহলেও আমরা সুখী হই



660219-20 - Lecture BG Introduction - New York

আমরা যদি ভগবানের সঙ্গ করি, তাঁকে সহযোগিতা করি, তাহলেও আমরা সুখী হই। আমাদের এটিও মনে রাখতে হবে যে, যখন আমরা "কৃষ্ণের" কথা বলি , এই নামটি অবশ্যই কোনো সম্প্রদায়ভুক্ত নাম নয়। কৃষ্ণ শব্দের অর্থ - সর্ব্বোচ্চ আনন্দ। এটি নিশ্চিত যে পরম পুরুষোত্তম ভগবান সকল আনন্দের আধার ও উৎস। আমরা সকলেই আনন্দের পিছনে ছুটছি , আনন্দময় অভ্যাসাৎ (বেদান্ত সূত্র ১.১.১২ )। জীবসমূহ অথবা ভগবান, কারণ আমরা সকলেই সচেতন, কাজেই আমাদের চেতনা সব সময় সুখের পিছনে ধাবিত হয়, সুখ। ভগবানও শ্বাশ্বত কাল ধরে সুখী, এবং আমরা যদি ভগবানের সঙ্গ করি, তাঁকে সহযোগিতা করি, তাঁর লীলায় অংশগ্রহন করি, তাহলে আমরা ও সুখী হই। এই মর্ত্য জগতে ভগবান অবতরণ করেন বৃন্দাবন লীলায় তাঁর সর্ব্বোচ্চ আনন্দ প্রদর্শন করার জন্য। যখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবনে ছিলেন, গোপ বালক ও সখাদের সাথে তার লীলা, গোপী ও সখীদের সাথে , বৃন্দাবন বাসীর সাথে, শৈশবে গোধেনু চারণ লীলা, এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই সমস্ত লীলা চিন্ময় আনন্দে পরিপূর্ণ। সমস্ত বৃন্দাবন, বৃন্দাবনের সমস্ত অধিবাসীগণ, শ্রীকৃষ্ণকে কেন্দ্র করেই দিব্য আনন্দে পরিপূর্ণ ছিল। তারা কৃষ্ণ ব্যতিরেকে অন্য কাউকে জানতেন না, এমনকি কৃষ্ণ তার পিতাকে নিষেধ করেছিলেন দেবরাজ ইন্দ্রের পূজা অর্চনা করতে , কারণ তিনি এটা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন যে, মানুষের পরম পুরুষোত্তম ভগবান ব্যতিত অন্য কোনো দেবতার পূজা করার প্রয়োজন নেই, কারণ জীবনের পরম উদ্দেশ্য হচ্ছে ভগবানের আলয়ে ফিরে যাওয়া | ভগবদ্ধাম সম্পর্কে ভগবদ্গীতায় বর্ণনা করা হয়েছে, পঞ্চদশ অধ্যায়ের, ষষ্ঠ শ্লোকে,

ন তদ্‌ ভাসয়তে সূর্য ,
ন শশাঙ্ক ন পাবক
যদ্‌ গত্বা ন নিবর্তন্তে,
তৎধাম পরমম্‌ মম
(ভগবদ্গীতা ১৫.৬)।

এখন চিদাকাশের বর্ণনা... যখন আমরা আকাশের কথা বলি, যেহেতু আমাদের জড়াকাশের ধারণা রয়েছে, যেহেতু আমরা সূর্য, চন্দ্র, গ্রহ নক্ষত্র সমন্বিত আকাশ বুঝি। কিন্ত ভগবান চিদাকাশের বর্ণনা দিচ্ছেন, সেখানে সূর্যের প্রয়োজন নেই, ন তদ্‌ ভাসয়তে সূর্য , ন শশাঙ্ক ন পাবক (ভগবদ্গীতা ১৫.৬)। চিদাকাশে চন্দ্রেরও প্রয়োজন নেই। ন পাবক মানে আলোকিত করার জন্য বিদ্যুত অথবা অগ্নির প্রয়োজন নেই কারণ চিদাকাশ ব্রম্ম জ্যোতির দ্বারা উদ্ভাসিত। ব্রহ্ম জ্যোতি, যস্য প্রভা (ব্রহ্ম্য সংহিতা ৫.৪০) -পরম ধামের রশ্মিচ্ছটা। এখনকার দিনে যখন মানুষ অন্য গ্রহে যাওয়ার চেষ্টা করছে, তখন পরম পুরুষোত্তম ভগবানের ধাম উপলব্ধি করা কঠিন নয়। ভগবদ্ধাম চিদাকাশে অবস্থিত এবং এটা গোলোক নামে অভিহিত। ব্রহ্ম সংহিতায় এটা সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, গোলোক এব নিবসতি অখিলাত্ম-ভূত: ( ব্রহ্ম সংহিতা ৫.৩৭)। যদিও ভগবান তাঁর সনাতন দিব্য ধাম, গোলোকে বাস করেন, তথাপিও তিনি অখিলাত্ম ভূতঃ, তাকে এখানেও পাওয়া যাবে, তাই ভগবান তার প্রকৃত রূপ, সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ (ব্রহ্ম সংহিতা ৫.১), প্রকাশ করতে এই জগতে আসেন, যাতে আমাদেরকে তার রূপ কল্পনা করতে না হয়। কল্পনার কোনো প্রশ্নই আসে না।