BN/Prabhupada 1074 - এই জড় আমরা জগতে যে সমস্ত দুঃখ দুর্দশা ভোগ করি - সব ই এই জড় শরীরের কারণে

The printable version is no longer supported and may have rendering errors. Please update your browser bookmarks and please use the default browser print function instead.


660219-20 - Lecture BG Introduction - New York

এই জড় জগতে আমরা যে সমস্ত দুঃখ দুর্দশা ভোগ করি - সবই এই জড় শরীরের কারণে। ভগবদ গীতায় অন্যত্র বলা হয়েছে যে,

অব্যক্তোহক্ষর ইত্যুক্তস্ত
মাহু পরমাং গতিম
যং প্রাপ্য ন নিবর্তন্তে
তদ্ধাম পরমং মম
(ভ.গী. ৮.২১)।

অব্যক্ত মানে অপ্রকাশিত। এমনকি জড় জগতের পুরো অংশ ও আমাদের নিকট প্রকাশিত নয়। আমাদের ইন্দ্রিয় গুলো এত অপূর্ণ যে, আমরা দেখতে পারি না কতগুলি গ্রহ নক্ষত্র রয়েছে, এই জড় বিশ্ব ব্রহ্মান্ডে। অবশ্যই, বৈদিক সাহিত্যের মাধ্যমে আমরা সব গ্রহ নক্ষত্রের তথ্য পাই। আমরা বিশ্বাস করতে পারি অথবা নাও পারি, কিন্ত সকল গুরুত্বপূর্ণ গ্রহগুলি যার সাথে আমাদের সন্মন্ধ রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে বৈদিক সাহিত্যে বর্ণনা রয়েছে, বিশেষ করে শ্রীমদ্ভাগবতে। কিন্ত চিৎজ্জগত, যা এই জড় জগতের অতীত, পরস্তস্মাৎ তু ভাবোহন্য (ভ.গী. ৮.২০) কিন্ত সেই অব্যক্ত, অপ্রকাশিত চিদাকাশ, হচ্ছে পরমাং গতিম, তার মানে, প্রত্যেককেই সেই সনাতন ধাম প্রাপ্তির জন্য লালায়িত হতে হবে। এবং একবার সেই ধামে গেলে, যম প্রাপ্য, কেউ সেই ধাম প্রাপ্তি হোলে, ন নিবর্তন্তে , তাহলে আর এই জগতে ফিরে আসতে হবে না। এবং সেই ধাম যা ভগবানের নিত্য আবাস, যেখান থেকে আমাদের আর ফিরে আসতে হবে না, সেটা আমাদের, সেটা আমাদের হওয়া উচিত ( বিরতি ..) এখন প্রশ্ন হলো, কিভাবে ভগবানের সেই ধামে যাওয়া যায়? সেটাও ভগবদ গীতায় বর্ণনা করা হয়েছে। অষ্টম অধ্যায়ে, শ্লোক ৫, ৬, ৭, ৮ বর্ণনা করা হয়েছে, কিভাবে ভগবান অথবা ভগবদ্ধামে অগ্রসর হওয়া যায়। এইভাবে বলা হয়েছে যে,

অন্ত কালে চ মামেব
স্মরন্মুক্তা কলেবরম্‌ ,
যঃ প্রয়াতি স মদ ভাবং
যাতি নাস্তত্র সংশয়ঃ
(ভ.গী. ৮.৫)

অন্তকালে, জীবনের শেষ সময়ে, মৃত্য সময়ে। অন্তকালে চ মামেব। যে কৃষ্ণ চিন্তা করে, কৃষ্ণ স্মরণ যদি কেউ করতে পারে, মৃত্যু পথযাত্রী, মৃত্যর সময়ে, যদি সে কৃষ্ণের রূপের চিন্তা করে, এবং এইভাবে স্মরণ সময়ে যদি কেউ দেহত্যাগ করে, তাহলে, সে অবশ্যই চিৎজ্জগতে প্রবেশ করবে, মদ ভাবং। ভাবং মানে চিন্ময় প্রকৃতি। যঃ প্রয়াতি স মদ ভাবং যাতি। মদ ভাবং মানে পরম পুরুষোত্তম ভগবানের চিন্ময় প্রকৃতি। যেমনটি উপরে বর্ণনা করা হয়েছে যে, পরম পুরুষোত্তম ভগবান সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ (ব্র.সং. ৫.১) তার রূপ রয়েছে, কিন্ত সেই রূপ নিত্য, সৎ, এবং পূর্ণ জ্ঞান, চিৎ এবং পূর্ণ আনন্দ, আনন্দ। এখন যেমন আমরা আমাদের শরীরের সাথে তুলনা করতে পারি, আমাদের শরীরটি সচ্চিদানন্দ কি না। না, এই শরীরটি অসৎ, সতৎ নয়, এটা অসৎ। অন্তবন্ত ইমে দেহা (ভ.গী. ২.১৮) , ভগবদ গীতায় বলা হয়েছে, এই শরীরটি নশ্বর। এবং.... সচ্চিদানন্দ। সৎ হওয়ার পরিবর্তে এটা অসৎ, ঠিক বিপরীত। এবং চিৎ, পূর্ণ জ্ঞানী হওয়ার পরিবর্তে এটা অজ্ঞানে পরিপূর্ণ। চিৎজ্জগত সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারনাই নেই। এমনকি এই জড় জগত সম্পর্কেও আমাদের নিখুঁত জ্ঞান নেই। অনেক কিছুই অজানা, তাই এই শরীর টি অজ্ঞতায় পূর্ণ। পূর্ণ জ্ঞানী হওয়ার পরিবর্তে এটা অনভিজ্ঞ। শরীরটি নশ্বর, অজ্ঞতায় পূর্ণ এবং নিরানন্দ। পূর্ণ আনন্দের পরিবর্তে এটা দুঃখ দুর্দশায় পূর্ণ। এই জড় জগতে যা দুঃখ দুর্দশা আমরা ভোগ করি, তা সবই এই শরীরের জন্য।