BN/Prabhupada 1080 - ভগবদ গীতার সারমর্ম অনুযায়ী -কৃষ্ণ হচ্ছেন ভগবান। কৃষ্ণ কোন সাম্প্রদায়িক ভগবান নন



660219-20 - Lecture BG Introduction - New York

ভগবদ গীতার সারমর্ম অনুযায়ী -কৃষ্ণ হচ্ছেন ভগবান। কৃষ্ণ কোন সাম্প্রদায়িক ভগবান নন। ভগবদ গীতার শেষাংশে ভগবান স্পষ্টভাবেই বলেছেন, অহম্‌ ত্বাম্‌ সর্ব পাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ (ভ.গী. ১৮.৬৬)। ভগবান দায়িত্ব নিচ্ছেন। যিনি ভগবৎ চরণে শরণাগত হন, ভগবান তার রক্ষার দায়িত্ব নেন, পূর্বকৃত সমস্ত পাপকর্মের ফল থেকে রক্ষা করেন।

মল নির্মচনম্‌ পুংসাং
জল স্নানং দিনে দিনে
সকৃদ গীতামৃত-স্নানম
সংসার মল নাশনম্‌
(গীতা মাহাত্ম্য ৩)

জলে স্নান করে যেমন যে কেউ পবিত্র হয়, কিন্তু কেউ যদি ভগবদ গীতার অমৃত গঙ্গা জলে একবার ও স্নান করেন, তার জড় কদর্য জীবন সম্পূর্ণ রূপে দূরীভূত হবে।

গীতা সুগীতা কর্তব্য
কিম্‌ অন্য শাস্ত্র বিস্তারৈহ
য স্বয়ম্‌ পদ্মনাভস্য
মুখ পদ্মাদ বিনিঃসৃতা
( গীতা মাহাত্ম্য ৪ )

যেহেতু ভগবদ গীতা পরমেশ্বর ভগবান কর্তৃক উক্ত হয়েছে, তাই মানুষের অন্য কোন বৈদিক সাহিত্য পড়ার প্রয়োজন নেই। যদি কেউ কেবলমাত্র নিয়মিত মনোযোগের সহিত ভগবদ গীতা শ্রবণ ও অধ্যয়ন করেন, গীতা সু গীতা কর্তব্যা ... এবং যেকোন উপায়ে প্রত্যেকেরই এই পন্থা অবলম্বন করা উচিত। গীতা সু গীতা কর্তব্য কিম অন্য শাস্ত্র বিস্তারৈহ কারণ এই যুগে মানুষ অনেক কিছুর দ্বারা বিমোহিত, সমস্ত বৈদিক সাহিত্যের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করা একেবারেই সম্ভব নয়। এই একটা মাত্র সাহিত্য দিয়েই সম্ভব কারণ গীতা সকল বৈদিক শাস্ত্রের সারমর্ম, এবং এটা পরম পুরুষোত্তম ভগবান কর্তৃক প্রদত্ত হয়েছে।

ভারতামৃত সর্বসম্‌
বিষ্ণু বক্ত্রাদ বিনিশ্রিতম
গীতা গঙ্গদকম পীত্ব
পুনর জন্ম ন বিদ্যতে
( গীতা মাহাত্ম্য ৫)।

বলা হয়েছে, যে গঙ্গাজল পান করে, সে ও মুক্তি লাভ করে, তাহলে আর ভগবদ গীতার কি কথা ? ভগবদ গীতা সমস্ত মহাভারতের সারমর্ম এবং বিষ্ণু কর্তৃক উক্ত হয়েছে। ভগবান কৃষ্ণ হলেন আদি বিষ্ণু, বিষ্ণু বক্ত্রাদ বিনিশ্রিতম্‌ | এটা পরম পুরুষোত্তম ভগবানের মুখ নিঃসৃত বাণী। এবং গঙ্গোদকম্‌, গঙ্গা ভগবানের চরণ পদ্ম থেকে নিঃসৃত হয়েছে, এবং গীতা পরমেশ্বর ভগবানের মুখ থেকে নিঃসৃত হয়েছে। অবশ্যই পরমেশ্বর ভগবানের মুখ ও চরণে কোন ভেদ নেই। তবু ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করে আমরা বুঝতে পারি, ভগবদগীতা গঙ্গাজল থেকেও অধিক মহত্ত্বপূর্ণ।

সর্বোপনিষদো গাবো
দোগ্ধা গোপাল নন্দন
পার্থ বৎস সুধীঃ ভোক্তা
দুগ্ধম্‌ গীতামৃতম্‌ মহৎ
( গীতা মাহাত্ম্য ৬ )

এই গীতোপনিষদ হচ্ছে গাভীর মত, এবং ভগবান রাখাল বালক হিসেবে বিখ্যাত এবং তিনি গাভী দোহন করেন। সর্বোপনিষদো। এবং এটা সমস্ত উপনিষদের সার এবং গাভী হিসেবে প্রতিকায়িত। দক্ষ রাখল বালক হিসেবে ভাগবান এই গাভী দোহন করেন। এবং পার্থ বৎস, এবং অর্জুন বাছুরের ন্যায়। এবং সুধীর ভোক্তা, এবং তত্ত্বজ্ঞানী পন্ডিত ও শুদ্ধ ভক্ত, তারা দুগ্ধামৃত গ্রহণ করেন। সুধীর ভোক্তা দুগ্ধম গীতামৃতম মহৎ। ভগবদ গীতার দুগ্ধামৃত তত্তজ্ঞানী ভক্তের জন্য বরাদ্দ।

একং শাস্ত্রং দেবকী পুত্রং গীতম
এক দেব দেবকী পুত্র এব
এক মন্ত্রস্তস্য নামানি যানি
কর্মাপি একং তস্য দেবস্য সেবা
( গীতা মাহাত্ম্য ৭ )।

সমস্ত বিশ্ববাসীর ভগবদ গীতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। একম শাস্ত্রং দেবকী পুত্র গীতম। একটাই শাস্ত্র , সমগ্র পৃথিবীর জন্য একটাই শাস্ত্র, পুরো পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য, আর সেটা হলো ভগবদ গীতা। দেব দেবকী পুত্র এব। এবং সমগ্র বিশ্বের একজনই ইশ্বর , শ্রীকৃষ্ণ। এবং একো মন্ত্রস্তস্য নামানি। এবং একটাই মন্ত্র , একটাই প্রার্থনা, এক মন্ত্র, শুধু তাঁর নাম জপ করা, হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে | একো মন্ত্রস তস্য নামানি যানি কর্মাপি একম তস্য দেবস্য সেবা। এবং শুধু একটাই কাজ, পরমেশ্বর ভগবানের সেবা করা। যদি কেউ ভগবদ গীতা অধ্যয়ন করেন, তাহলে তারা একক ধর্ম একক ভগবান, একক শাস্ত্র , এবং একক কর্তব্য কর্মের জন্য উদগ্রীব থাকবে। এটাই ভগবদ গীতার সারমর্ম। সেই একক ভগবান হলেন কৃষ্ণ। কৃষ্ণ কোন সাম্প্রদায়িক ভগবান নন। কৃষ্ণ, কৃষ্ণ শব্দটির অর্থ.... কৃষ্ণ মানে, যেমনটি আমরা উপরে বর্ণনা করেছি, কৃষ্ণ শব্দের অর্থ সর্বোত্তম আনন্দ।