BN/Prabhupada 0221 - মায়াবাদীরা মনে করে যে তারা ভগবানের সাথে এক হয়ে যাবে



Janmastami Lord Sri Krsna's Appearance Day -- Bhagavad-gita 7.5 Lecture -- Vrndavana, August 11, 1974

যখন শ্রীকৃষ্ণকে অর্জুন জিজ্ঞাসা করলেন যে- "আপনি বলছেন যে ভগবদ্গীতার এই তত্ত্বজ্ঞান সূর্যদেবকে প্রদান করেছেন। আমি কিভাবে বিশ্বাস করব?" উত্তর হল যে "আমরা দুজন সেখানে উপস্থিত ছিলাম কিন্তু তুমি ভুলে গেছ কিন্তু আমি ভুলিনি।"

এটাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং সাধারণ জীবের মধ্যে পার্থক্য... তিনি পূর্ণ, আমরা পূর্ণ নই। আমরা অসম্পূর্ণ কৃষ্ণের অংশ। সেইজন্য আমরা অবশ্যই কৃষ্ণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। যদি আমরা কৃষ্ণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে স্বীকার না হই তাহলে আমাদেরকে জড় প্রকৃতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে হবে, এই ভূমিরাপনলো বায়ু (ভ.গী.৭.৪) প্রকৃতপক্ষে আমরা চিন্ময় শক্তি। আমাদের স্বেচ্ছায় কৃষ্ণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার জন্য স্বীকার করা উচিত। এটাই ভক্তিমূলক সেবা। এটাই ভক্তিমূলক সেবা। আমরা আধ্যাত্মিক শক্তি এবং কৃষ্ণ পরম আত্মা। যদি আমরা কৃষ্ণের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে রাজি হই তবে আমরা আধ্যাত্মিক জগতে যেতে পারব। যদি আমরা রাজি হই, কৃষ্ণ আমাদের ক্ষুদ্র স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেন না। যথেচ্ছসি তথা কুরু (ভ.গী.১৮.৬৩) ভগবান কৃষ্ণ অর্জুনকে বলছেন, "তুমি যা কিছু করতে চাও করতে পারো।"

এই স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি। তাই এই স্বাধীনতার কারণে আমরা এই জগতে এসেছি, আনন্দের জন্য। কৃষ্ণ আমাদের স্বতন্ত্রতা দিয়েছেন, "তুমি নিতে পার।" এবং আমরা এটা করার চেষ্টা করছি। কিন্তু ফলাফল হল আমরা বিভ্রান্ত হচ্ছি। আমাদের এই জড় জগতে কাজ করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক ব্যাক্তি এই জগতে প্রভু হবার জন্য চেষ্টা করছে। কেউ দাস হবার জন্য চেষ্টা করে না। শুধুমাত্র আমরা, বৈষ্ণবরা দাস হবার জন্য চেষ্টা করছি। কর্মী আর জ্ঞানী তারা দাস হওয়া পছন্দ করে না। তারা আমাদের সমালোচনা করে। "তোমাদের চাকরের মানসিকতা।" হ্যাঁ, আমাদের চাকরের মানসিকতা... চৈতন্য মহাপ্রভু শিখিয়েছেন, গোপীভর্ত্যু পদকমলয়ো দাস দাসানুদাস (চৈ.চ.মধ্য১৩.৮০) এটা আমাদের স্থিতি। "আমি মালিক"? কৃত্রিমভাবে এটা দাবি করে কি লাভ?" যদি আমি মালিক হতাম, তাহলে পাখার কি প্রয়োজন? আমি গ্রীষ্ম মৌসুমের এই প্রভাবের দাস। এইরকম আমি চাকর হয়ে যাব খুব ঠান্ডার মৌসুমে। তাই আমরা সবসময় দাস।

সেইজন্য চৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন, জীবের স্বরূপ হয় নিত্য কৃষ্ণ দাস (চৈ.চ.মধ্য ২০.১০৮-১০৯) প্রকৃতপক্ষে, আমাদের স্বরূপগত অবস্থানটি হচ্ছে কৃষ্ণের নিত্য দাস। কৃষ্ণ সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণকারী। এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন এই প্রয়োজনের জন্য, এই মূর্খ ব্যাক্তি দুষ্ট মূঢ়া... এই 'মূর্খ আর বদমাশ' শব্দগুলি আমরা বানাই নি, এটা কৃষ্ণ বলেছেন। ন মাং দুষ্কৃতিনো মূঢ়া প্রপদন্তে নরাধমাঃ (ভ.গী.৭.১৫) তিনি এইভাবে বলছেন। আপনারে দেখতে পারেন। দুষ্কৃতিনঃ, সবসময় পাপপূর্ন কাজ করা, আর মূঢ়াঃ, আর বদমাশ, গাধা। নরাধমা, মানব জাতির মধ্যে সবচেয়ে নীচ। "ওহ, তুমি ...? কৃষ্ণ, তুমি এই জড় বিজ্ঞানীদের এতো এতো খারাপ কথা বলছো? অনেক দার্শনিক আছে, তারা সব নরাধম?" "হ্যাঁ, তারা সব নরাধম।"কিন্তু তারা শিক্ষিত।" "হ্যাঁ তারাও..." কিন্তু কি ধরণের শিক্ষা? মায়ায়া অপহৃত জ্ঞানাঃ "ওদের জ্ঞানের ফলাফল হচ্ছে - মায়া দ্বারা সেই জ্ঞান হরণ হয়েছে।" যে যতবড় শিক্ষিত, সে তত বড় নাস্তিক। বর্তমান সময়ে... অবশ্যই শিক্ষার মানে এটা নয়... শিক্ষার অর্থ বোঝা, জ্ঞানী। শিক্ষিত, শিক্ষিত মানে বুদ্ধিমান লোক, শিক্ষিত লোক, জ্ঞানী। প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানী অর্থ মাং প্রপদ্যত্তে। বহুনাম্‌ জন্মনামন্তে জ্ঞানবান মাং প্রপদ্যত্তে (ভ.গী.৭.১৯) এই হছে শিক্ষা। শিক্ষার অর্থ নাস্তিক বানানো নয়, " কোন ভগবান নেই। আমি ভগবান, তুমি ভগবান, প্রত্যেকে ভগবান।" এটা শিক্ষিত নয়। এটা অজ্ঞানতা। মায়াবাদীরা ভাবে যে তারা ভগবানের সাথে এক হয়ে গেছে, এটা শিক্ষা নয়।