BN/Prabhupada 0315 - আমরা খুব জিদ্দি, আমরা বার বার কৃষ্ণকে ভোলার চেষ্টা করি



City Hall Lecture -- Durban, October 7, 1975

এই মহান আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য মহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, আমি আপনাদের অনেক ধন্যবাদ জানাই। এই আন্দোলন আমার দ্বারা শুরু করা হয় নি। এইটা কৃষ্ণ নিজে বহু বহু বছর আগে দীর্ঘ শুরু করেন। প্রথমত, তিনি ভগবদগীতার এই তত্ত্বজ্ঞান সূর্য দেবতাকে দিয়েছেন। চতুর্থ অধ্যায়ে ভগবদ গীতাতে বলা হয়েছে,

ইমম্‌ বিবস্বতে যোগং
প্রক্তাবান অহম অব্যয়ম
বিবস্বান মনবে প্রাহুর
মনুর ঈক্ষাকবে অব্রবীৎ
(ভ.গী. ৪.১)
এবং পরম্পরা-প্রাপ্তম্‌
ইমম্‌ রাজর্ষয়ে বিদুঃ
(ভ.গী.৪.২)

সুতরাং যদি আমরা মনুর বয়স গণনা করি তাহলে, এটি চার লক্ষ বছর বয়স হবে। তাই কৃষ্ণ বলেন, অন্তত চল্লিশ মিলিয়ন বছর আগে, তিনি ভগবদ্‌ গীতার এই দর্শন সূর্য দেবতা বিবস্বানকে, দিয়েছেন। সূর্য গ্রহের প্রধান দেবতার নাম হল বিবস্বান। তার ছেলে, মনু, বৈবস্বত মনু ... তার পুত্র, ইক্ষ্বাকু, রাজবংশ, সূর্য বংশের মূল ব্যক্তি, যে বংশে ভগবান রামচন্দ্র অবতীর্ণ হয়েছেন, ইক্ষ্বাকু ... তাই এইভাবে এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন খুব দীর্ঘ সময়ের জন্য চলমান হয়ে আসছে। কিন্তু কৃষ্ণ বলেছেন, এবং পরম্পরা-প্রাপ্তম ইমম রজস্বয়ে বিদু (ভ.গী.৪.২)। "পূর্বে, রাজর্ষিরা, তারা উত্তরাধিকার প্রথার মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ করত।" এটি ছিল ভগবদ গীতা বুঝার উপায়। কিন্তু কৃষ্ণ বলছেন, স কালেনেহ যোগ নষ্টো পরন্তপ। এখন কৃষ্ণ পাঁচ হাজার বছর আগে, যখন কৃষ্ণ কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে অর্জুনের সাথে কথা বলেছিলেন, তিনি যুদ্ধ করবেন কি করবেন না এই নিয়ে বিভ্রান্ত ছিলেন, এবং যুদ্ধে তাকে উৎসাহিত করার জন্য, তিনি পাঁচ হাজার বছর আগে অর্জুনকে এই ভগবত গীতা বলেন। এবং তিনি সেখানে বলেন, "পরম্পরা পদ্ধতি, উত্তরাধিকার সূত্র এখন লুপ্ত হয়েছে, এজন্যই আমি তোমাদের সাথে আবার বলছি, যাতে লোকেরা আপনার কাছ থেকে জানতে পারে যে, কৃষ্ণ ভাবনামৃত এই দর্শনের অর্থ কি।"

তাই পাঁচ হাজার বছর আগে এই দর্শন অর্জুনকে বলেছিলেন এবং আমরা এই নির্দেশ পেয়েছি। দুর্ভাগ্যবশত এটি আবার বিকৃত হচ্ছে। কারণ আমরা পরম্পরা পদ্ধতির মাধ্যমে এটি পাই না,, তাই আমরা অনুমান করি, আমরা অনুমান করি আমাদের নিজস্বতা অনুসারে। এবং এইজন্য এটি আবার লুপ্ত হয়। তাই আবার, পাঁচশো বছর আগে, শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু একজন ভক্ত হিসাবে এই ভগবদ গীতার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু শ্রী কৃষ্ণের অবতার বলে মনে করা হয়। কৃষ্ণ রূপে, পরম পুরুষ ভগবান, তিনি একজন আদেশ গুরু হিসাবে নির্দেশে দেন, সর্ব-ধর্মান পরিত্যজ মাম একং শরণং ব্রজ (ভ.গী. ১৮.৬৬), তবুও মানুষ ভুল বোঝে। সুতরাং এই সময়, পাঁচশত বছর আগে, প্রভু চৈতন্য মহাপ্রভু, শ্রীকৃষ্ণ নিজে, ভগবান কৃষ্ণের ভক্ত হিসাবে আবিভুত হন।

শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ। এটা প্রামাণিক ধর্মগ্রন্থ বর্ণিত হয়েছে।

কৃষ্ণবর্ণং ত্বিষাকৃষ্ণং
সাঙ্গপাঙ্গস্ত্রপাষর্দম
যজ্ঞৈ সংকির্তনৈ পায়ৈ
যজন্তি হি সুমেধসা
(শ্রী.ভা. ১১.৫.৩২)

তাই এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন প্রকৃত পক্ষে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর আন্দোলন। এবং শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং। তাই কৃষ্ণ বদ্ধ আত্মাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু। তিনি বার বার শ্রীকৃষ্ণ ভবনামৃতের প্রকৃত স্তরে তাদের পরিবর্তন করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু আমরা খুব হতাশ, আমরা বার বার কৃষ্ণকে ভুলে যাবার চেষ্টা করছি। এটা চলছে।