BN/Prabhupada 0447 - ভগবানকে নিয়ে জল্পনা কল্পনা করে এমন অভক্তদের সাথে মিশতে সাবধান থেকো



Lecture on SB 7.9.2 -- Mayapur, February 12, 1977

সুতরাং আমরা যদি শ্রীশ্রী লক্ষ্মী নারায়ণের চরিত্র অধ্যয়ন করি, তখন আমরা দরিদ্র-নারায়ণ বা তার মতো শব্দ তৈরি করা বন্ধ করব। না। সুতরাং আমাদের কখনই এই পাষণ্ডী অনুসরণ করা উচিত নয়।

যস্তু নারায়ণম্‌ দেবম্‌
ব্রহ্মরুদ্রাদি দৈবতাঃ
সমত্বেন বিকশেত
স পাষণ্ডী ভবেদ্‌ ধ্রুবম্‌
(CC Madhya 18.116)

পাষণ্ডী মানে নরাধম বা অভক্ত। অভক্ত হীন আচার। ভগবান সম্পর্কে কল্পনা করে এমন অভক্তের সাথে মিশ্রিত না হওয়ার বিষয়ে সাবধান থাকুন। তারা আসলে ভগবানকে বিশ্বাস করে না। পাষণ্ডী অর্থাৎ যারা ভগবানকে বিশ্বাস করে না। তারা মনে করে যে ভগবান নেই, তবে তারা সহজভাবে বলেন, "হ্যাঁ, ভগবান আছেন, কিন্তু ভগবানের কোন মস্তক নেই, কোনও পা নেই, মুখ নেই, কিছুই নেই।" এবং ভগবান কি তাহলে? কিন্তু এই দুর্বৃত্তরা বলে নিরাকার। নিরাকার অর্থাৎ ঈশ্বর নেই। খোলাখুলিভাবে বলেন যে ভগবান নেই। কেন আপনি বলেন, "হ্যাঁ, ভগবান আছেন, কিন্তু তাঁর কোন মস্তক নেই, কোনও পা নেই, কোনও হাত নেই"? তাহলে কি এটা? সুতরাং এটি আর একটি প্রতারণা। যারা নাস্তিক, তারা অকপটে বলে, "আমি ভগবানকে বিশ্বাস করি না। নেই ..." সেটা আমরা বুঝতে পারি। তবে এই দুর্বৃত্তরা বলে, "ভগবান আছেন তবে নিরাকার"। নিরাকার অর্থাৎ ভগবান নেই, তবে কখনও কখনও নিরাকার শব্দটি ব্যবহৃত হয়। তবে সেই নিরাকারের অর্থাৎ এই নয় যে ভগবানের কোনও আকার নেই। সেই নিরাকারের অর্থ ভৌতিক আকার নয়। ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণ সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ ( ব্রহ্মসংহিতা ৫।১ ) । তাঁর অঙ্গ হল সচ্চিদানন্দ । তা এই জড় জগতের মধ্যে দেখতে পাওয়া সম্পূর্ণ অসম্ভব। আমাদের দেহ সৎ নয়; তা অসৎ। এই দেহটি যেটা আমি এখন পেয়েছি বা আপনি পেয়েছেন, এটি ততদিন থাকবে যতদিন এই জীবন থাকবে ... এবং এটি শেষ হলে, তা চিরকালের জন্য শেষ হয়ে যাবে। আপনি আর কখনও এই শরীর পাবেন না। অতএব অসৎ।

তবে শ্রীকৃষ্ণের দেহ তেমন নয়। শ্রীকৃষ্ণের দেহ একই, সৎ ; সবসময় এক। শ্রীকৃষ্ণের অপর নাম নরাকৃতি। আমাদের দেহ শ্রীকৃষ্ণের দেহের রূপে বানানো, শ্রীকৃষ্ণের দেহ আমাদের দেহের রূপে বানানো নয়। না। শ্রীকৃষ্ণের তাঁর নিজের শরীর আছে, নরাকৃতি, নর-বপু। এগুলি রয়েছে । তবে সেই বপু এই অসৎ শরীরের মতো নয়। আমাদের শরীর অসৎ। এটা থাকবে না। তাঁর শরীর সচ্চিদানন্দ। আমাদের শরীর অসৎ, অচিৎ এবং নিরানন্দ - ঠিক বিপরীত। এটি থাকবে না, এবং কোন জ্ঞান নেই, অচিৎ , এবং কোন আনন্দ নেই। সর্বদা আমরা অসন্তুষ্ট থাকি। সুতরাং নিরাকার মানে এই ধরনের শরীর নয়। তাঁর শরীর আলাদা। আনন্দ চিন্ময় রস প্রতিভাবিতাভিঃ ( ব্রহ্মসংহিতা (৫।১ )। আনন্দ চিন্ময়। অঙ্গানি যস্য সকলেন্দ্রিয় বৃত্তিমন্তি পশ্যান্তি পান্তি কলয়ন্তি চিরম্‌ জগন্তি (ব্রহ্মসংহিতা ৫।৩২) তাঁর অঙ্গনি, অঙ্গনি, অঙ্গের বিভিন্ন অংশ বর্ণনা করা হয়েছে, সকলেন্দ্রিয় বৃত্তিমন্তি। আমি আমার চোখ দিয়ে দেখতে পারি। আমার, এই বিশেষ ক্রিয়া আমার, শরীরের এই অংশটির হল দেখা। তবে শ্রীকৃষ্ণ: সকলেন্দ্রিয়-বৃত্তিমন্তি - তিনি কেবল দেখতে পান না, তিনি খেতেও পারেন। এটাই হচ্ছে এর মানে। কেবল দেখে, আমরা খেতে পারি না, তবে আমরা যা কিছু অর্পণ করি, যদি শ্রীকৃষ্ণ তা দেখেন তবে তিনি ভক্ষণও করেন। অঙ্গানি যস্য সকলেন্দ্রিয়বৃত্তিমন্তি তাহলে কীভাবে আমরা শ্রীকৃষ্ণের দেহকে আমাদের দেহের সাথে তুলনা করতে পারি? তবে অবজানন্তি মাম্‌ মূঢ়াঃ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৯।১১)। যারা বদমাশ, তারা ভাবে যে "শ্রীকৃষ্ণের দুটি হাত আছে, দুটি পা আছে; তাই আমিও শ্রীকৃষ্ণ I আমিও।" সুতরাং বদমাশদের, পাষণ্ডীদের দ্বারা বিভ্রান্ত হবেন না। শাস্ত্রে যেমনভাবে বর্ণিত তেমনভাবেই গ্রহণ করুন, অনুমোদিত সূত্র থেকে তা শিখুন, এবং সুখী হন।

আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।

ভক্তগণ: জয় শ্রীল প্রভুপাদ !