BN/Prabhupada 0448 - আমাদের উচিৎ ভগবান, সাধু, গুরু এবং শাস্ত্র থেকে শিক্ষা নেয়া



Lecture on SB 7.9.3 -- Mayapur, February 17, 1977

প্রদ্যুম্ন: অনুবাদ - "তারপর ব্রহ্মদেব প্রহ্লাদ মহারাজকে অনুরোধ করলেন, যিনি তাঁর খুব নিকটে দাঁড়িয়ে ছিলেন: প্রিয় পুত্র, ভগবান নৃসিংহদেব তোমার অসুর পিতার প্রতি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ। দয়া করে এগিয়ে যাও এবং প্রভুকে শান্ত কর। "

শ্রীল প্রভুপাদ :

প্রহরাদম প্রেসয়াম আস
ব্রাহ্মবাস্থিতম অন্তিকে
তাত প্রশময়োপেহী
স্বপিত্রে কুপিতম প্রভুম
(শ্রীমদ্ভাগবতম ৭।৯।৩)

সুতরাং শ্রীনৃসিংহদেব খুব, খুব ক্রুদ্ধ ছিলেন। এখন নাস্তিক মানুষেরা, যারা জানেন না পরম ভগবানের প্রকৃতি কী, তারা বলবেন, " ভগবান কেন ক্রুদ্ধ হবেন?" সুতরাং ভগবান তিনি রাগ করবেন না কেন? ভগবানের অবশ্যই সবকিছু থাকা উচিত; অন্যথায় তিনি সম্পূর্ণ ভগবান হবেন কিভাবে? পূর্ণম। রাগ হল জীবনের অন্যতম লক্ষণ। পাথর রাগ করে না, কারণ সেটা পাথর। তবে যে কোনও জীবই হোক না কেন, সে রাগ করে। এটি একটি গুণ। এবং ভগবানের রাগ করা উচিত নয় কেন? তারা ভগবানকে কল্পনা করেন ; এমন নয় যে তাদের ভগবানের ব্যাপারে কোন বাস্তবিক ধারণা আছে। তারা কল্পনা করে যে " ভগবান অবশ্যই এইরকম হবেন। ভগবানকে অবশ্যই অহিংস হওয়া উচিত। ভগবানকে অবশ্যই খুব শান্ত হওয়া উচিত।" কেন? রাগ কোথা থেকে আসে? এটা ভগবানের কাছ থেকে আসে। অন্যথায় ক্রোধের কোন অস্তিত্ব নেই।

সবকিছু আছে। জন্মাদি অস্য যথা (শ্রীমদ্ভাগবতম ১।১। ১)। এটাই ব্রহ্মের সংজ্ঞা। আমরা যা কিছু অনুভব করেছি এবং যা কিছু আমরা অনুভব করি নি ... আমরা সব অভিজ্ঞতা পাইনি। শ্রীনৃসিংহদেবের ব্যাপারে বলা হয় যে শ্রীলক্ষ্মীরও কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না, যে ভগবান অর্ধ সিংহ অর্ধ পুরুষ হয়ে উঠতে পারেন। এমনকি শ্রীলক্ষ্মীদেবীও, অন্যদের কথা কী বলবেন। শ্রীলক্ষ্মী, তিনি ভগবানের নিত্যসঙ্গী। তাই বলা হয়েছে , অশ্রুত। সেটা কী ? অদৃষ্ট। অদৃষ্ট অশ্রুতা পূর্বৎবৎ তিনি ভয় পেয়েছিলেন কারণ তিনি কখনও দেখেননি, এমন বিশাল রূপ, এবং অর্ধেক সিংহ, অর্ধেক মানুষ। ভগবানের অনেক রূপ আছে: অদ্বৈত অচ্যুত অনাদি অনন্ত-রূপম ( ব্রহ্মসংহিতা ৫।৩৩ )। অনন্ত-রূপম; তবুও, অদ্বৈত। সুতরাং শ্রীমদ্ভাগবতমে বলা হয়েছে যে ভগবানের অবতারগুলি হল নদী বা সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো। কেউ গুনতে পারে না। আপনি ঢেউয়ের সংখ্যা গণনা করতে চাইলে ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। সেটা অসম্ভব। সুতরাং যতগুলি ঢেউ রয়েছে ততগুলি ভগবানের অবতারও রয়েছে। সুতরাং আপনি ঢেউ গুনতে পারবেন না ; অতএব আপনি বুঝতে পারবেন না, তাঁর কতগুলি অবতার। এমনকি শ্রীলক্ষ্মী, এমনকি শ্রীঅনন্তদেব তাঁরাও পান নি। সুতরাং আমাদের অভিজ্ঞতা - খুব সীমাবদ্ধ। কেন আমরা বলব যে "ভগবানের এটি থাকতে পারে না, ভগবানের থাকতে পারে না ..." এইরকমভাবে ? এটাই নিরীশ্বর। তারা বিভাগ তৈরি করেন। তারা বলেন... এমনকি আমাদের তথাকথিত বৈদিক আর্য সমাজেও, তারা বলেন যে ভগবান অবতার নিতে পারেন না। কেন? যদি ভগবান সর্বশক্তিমান হন, তবে তিনি কেন অবতার গ্রহণ করতে সক্ষম হবেন না?

সুতরাং আমাদের এই মূর্খদের থেকে ভগবানের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত নয়। আমাদের শাস্ত্র থেকে, গুরুদেবের থেকে এবং সাধুর কাছ থেকে ভগবানের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত - যিনি ভগবানকে দেখেছেন, তত্ত্ব-দর্শীন। তদ্ বিদ্ধি প্রণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন সেবয়া উপদেক্ষ্যন্তি তদ্ জ্ঞানম্‌ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৪।৩।৪) তদ্‌ জ্ঞানম্‌ অর্থ আধ্যাত্মিক জ্ঞান। তদ্বি‌জ্ঞানম্‌।

তদ বিজ্ঞানম্‌ স গুরুমেবাভিগচ্ছেৎ
সমিৎপাণিঃ শ্রোত্রিয়ম্‌ ব্রহ্মনিষ্ঠম্‌
(মুণ্ডক উপনিষদ ১২।১২ )

তাই তদ্-বিজ্ঞানম্‌, আপনি কল্পনা করতে পারবেন না, অনুমান করতে পারবেন না। সেটা সম্ভব নয়। তত্ত্বদর্শিনঃ, যিনি ভগবানকে দেখেছেন এমন ব্যক্তির কাছ থেকে আপনাকে সেটি শিখতে হবে। এমনকি দেখলেও আপনি পারবেন না ... লক্ষ্মীদেবীর মতো তিনিও প্রতি মুহূর্তে দেখছেন, প্রতিনিয়ত। এমনকি তিনিও জানেন না। অশ্রুতা-পূর্ব। অদৃষ্টশ্রুতা পূর্ব। সুতরাং আমরা যা কিছু দেখি বা দেখতে পাই না, সব কিছুই আছে। অহম্‌ সর্বস্ব প্রভবঃ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১০।৮)। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন। "আপনি যা কিছু দেখেন, আপনি যা কিছু অনুভব করেন, আমিই সমস্ত কিছুর উৎস।" সুতরাং ক্রোধ থাকা উচিত। আপনি কীভাবে বলতে পারেন যে "ভগবানের ক্রোধিত হওয়া উচিত নয়। ভগবানের এরকম হওয়া উচিত নয়। ভগবানের উচিত নয় ... "না, সেটা সত্য নয়। সেটাই আমাদের অনভিজ্ঞতা।