BN/Prabhupada 0558 - আমাদের অবস্থান হচ্ছে তটস্থা, আমরা যে কোন সময় অধঃপতিত হতে পারি



Lecture on BG 2.62-72 -- Los Angeles, December 19, 1968

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। বা সবার আগে, তার। হ্যাঁ।

ভক্তঃ বলা হয়েছে যে একবার যদি কেউ পরমেশ্বর ভগবানকে লাভ করতে পারেন এবং কৃষ্ণের কাছে ফিরে যেতে পারেন, তাহলে আর তাঁর পতন হবে না। তবে এটাও বলা হয়েছে যে আমরা মূলত সেখান থেকেই আসি। আমরা যদি সেখান থেকে এসে থাকি, আমরা যদি ইতঃপূর্বে সেখানেই থেকে থাকি তবে আমাদের অধঃপতন হল কিভাবে?

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। ঠিক এই উদাহরণটির মতোই যে ভগবান ব্রহ্মা এবং ভগবান শিবের মতো ব্যক্তিত্বরা, তাঁরাও কখনও কখনও মায়ার শিকার হন। সুতরাং আমাদের, আমি বলতে চাইছি, অধঃপতিত হওয়ার শক্তি সর্বদা থাকে, শক্তি। আর যেহেতু আমরা ভগবানের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং যেহেতু আমরা এখন জড় জগতে বিদ্যমান, এটা বুঝতে হবে যে আমরা পতিত হয়েছি। তবে তুমি তোমার পতিত হওয়ার ইতিহাসটি অনুসন্ধান করতে পারবে না। তা অসম্ভব। তবে আমাদের অবস্থান তটস্থ। যে কোনও মুহুর্তে, আমরা অধঃপতিত হতে পারি। সেই প্রবণতা রয়েছে। সুতরাং আমাদের তটস্থা বলা হয়। তবে একটি ... ঠিক যেমন এটি বুঝতে পারা খুব সহজ। প্রত্যেকেরই অসুস্থ হয়ে পড়ার প্রবণতা রয়েছে। তাই নয় কি? এখন যখন তুমি অসুস্থ হয়ে পড়েছ, তখন তোমার অসুস্থ হয়ে পড়ার ইতিহাস অনুসন্ধান করার কোনও দরকার নেই। তুমি অসুস্থ, চিকিৎসার ব্যবস্থা কর, ব্যাস। একইভাবে, আমরা জড় জগতের বদ্ধদশায় রয়েছি। কেবল এটির চিকিৎসা চালিয়ে যাও এবং যেইমাত্র তোমার রোগ নিরাময় হবে, সাবধানে থাক যাতে আবার অধঃপতিত না হও। তবে আবারও অধঃপতিত হওয়ার, অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন নয় যে তুমি একবার নিরাময় হওয়ার কারণে আবার অসুস্থ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। সম্ভাবনা আছে। সুতরাং আমাদের খুব সাবধান হতে হবে। হ্যাঁ।

ভক্তঃ শ্রীমদ্ভগবদগীতায় এটি ৪১ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে যে ভগবান ব্রহ্মা দ্বিতীয় আধ্যাত্মিক গুরু। আমি ভেবেছিলাম যে, সমস্ত আধ্যাত্মিক গুরুরা চিরকাল বেঁচে থাকেন; কিন্তু ভগবান ব্রহ্মা চিরকাল স্থায়ী থাকেন না।

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। আমরা চিরকাল বেঁচে থাকি। দেহের পরিবর্তনের ফলে আমরা প্রাণ হারাই না। তুমি চিরকাল বেঁচে থাক, আমি চিরকাল বেঁচে থাকি। মৃত্যু মানে আমরা এই দেহ বদলাই, এই যা। ঠিক যেমন তুমি নিজের পোশাক বদলাও। তুমি যখন নিজের পোশাক পরিবর্তন কর, তার অর্থ এই নয় যে তুমি মারা গেলে। একইভাবে এই দেহের পরিবর্তন মানেই আসলে মৃত্যু নয়। বা অন্য কোনও শরীরে উপস্থিত হওয়ার অর্থ আসলে জন্ম নয়। জীব সত্তার কোন জন্ম ও মৃত্যু নেই, তবে দেহের এই পরিবর্তনটি শুধু আমাদের জড় অবস্থাতেই চলছে। সেটিকে জন্ম ও মৃত্যু হিসাবে গ্রহণ করা হয়। আসলে জন্ম-মৃত্যু হয় না। ঠিক?

মধুদ্বীশঃ প্রভুপাদ, যিনি ভগবান বুদ্ধের উপাসনা করেন, তাঁর গমনের জন্য কোনও গ্রহলোক আছে কি?

প্রভুপাদঃ হুম?

মধুদ্বীশঃ যিনি ভগবান বুদ্ধের উপাসনা করেন তাঁর জন্য,

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ?

মধুদ্বিষঃ ভক্তি-জ্ঞানে (?) তারা বলে, অথবা যেকোনো উপায়ে, ভগবান বুদ্ধের প্রতি একরকম কিছু ভক্তিমূলক সেবা করা হয়, তার গমনের জন্য কি কোনও গ্রহ রয়েছে, যেখানে ভগবান বুদ্ধ প্রভুত্ব করেন বা ...

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। একটি অনির্ণেয় স্তর রয়েছে। সেটি গ্রহ নয়। এটি হচ্ছে চিন্ময় জগত আর জড় জগতের মধ্যে প্রান্তিক অবস্থান। তবে তাকে আবার অধঃপতিত হতে হবে। চিন্ময় আকাশে প্রবেশ না করে এবং চিন্ময় কোন গ্রহলোকে যদি সে আশ্রয় গ্রহণ না করে ... ঠিক যেমন তুমি আকাশে উড়ছ । যতক্ষণ না তুমি কোনও গ্রহ পাচ্ছো, তোমাকে আবার অধঃপতিত হতে হবে। তুমি সারা দিন আকাশে উড়তে পারবে না। সেটা সম্ভব নয়। এটিই প্রান্তিক বা নিরপেক্ষ স্তর। না এই গ্রহে আর না অন্য কোন গ্রহে, শুধুই উড়তে থাকা। তুমি কতক্ষণ উড়বে? তোমাকে কোথাও একটা আশ্রয় নিতে হবে। তবে উচ্চতর গ্রহে যদি তোমার কোনও আশ্রয় না থাকে বা উচ্চতর অবস্থান, তবে তোমাকে অধঃপতিত হতে হবে। সুতরাং ... একই উদাহরণের পুনরাবৃত্তি করা যেতে পারে। মনে কর তুমি যদি মহাকাশে যাও ... ঠিক স্পুটনিক লোকেদের মতো তারাও কখনও কখনও যায়। লোকেরা মনে করে, " ওহ, সে কোথায় গেছে, কত উঁচুতে, কত উঁচুতে"। তবে তিনি কোথাও যান নি। তিনি আবার নেমে আসছেন। সুতরাং এটি মিথ্যা করতালি দেওয়া, "ওহ, সে কত উঁচুতে চলে গেছে, কত উঁচুতে"। এত উঁচুতে যাওয়ার কি মানে? তুমি পরের মুহূর্তেই নেমে আসবে। কারণ তোমার অন্য কোনও গ্রহে প্রবেশ করার ক্ষমতা নেই। সুতরাং তোমার যন্ত্রটি, এই স্পুটনিক বা এই বিমানগুলি তোমাকে কি সাহায্য করতে পারে? তোমাকে আবার নেমে আসতে হবে। বরং তুমি কোনও আটলান্টিক মহাসাগর বা প্রশান্ত মহাসাগরে পড়ে যাবে আর অন্য কেউ গিয়ে তোমাকে উদ্ধার করবে। দেখেছে তো? এটিই তোমার অবস্থান। সুতরাং শূন্যবাদী মানে আকাশে উড়ে যাওয়া এবং গর্বস্ফীত হওয়া, "আমি কত উঁচুতে এসেছি, কত উঁচুতে এসেছি, কত উঁচুতে।" (হেসে) সেই মূর্খ মানুষটি জানে না যে সে কতক্ষণ এই উচ্চ অবস্থানে থাকবে। দেখেছে? তাকে নেমে আসতে হবে।