BN/Prabhupada 0595 - যদি তুমি বৈচিত্র চাও, তোমাকে একটি গ্রহের আশ্রয় নিতে হবে



Lecture on BG 2.23 -- Hyderabad, November 27, 1972

সুতরাং ব্রহ্মজ্যোতিতে, এটি শুধু চিণ-মাত্র হওয়ায়, শুধু মাত্র চিদ্‌, কিন্তু কোন চিদ্‌ বৈচিত্র নেই। এটি শুধু চিন্ময়। ঠিক যেমন আকাশ। আকাশও জড় বস্তু। কিন্তু আকাশে কোন বৈচিত্র নেই। এমনকি জড় জগতেও যদি তুমি বৈচিত্র চাও, তাহলে তোমাকে কোন একটি গ্রহের আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে। তুমি পৃথিবী গ্রহেও আসতে পার অথবা চন্দ্র গ্রহ কিংবা সূর্য গ্রহেও যেতে পার। একইভাবে, ব্রহ্মজ্যোতি হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের দেহ নির্গত রশ্মিচ্ছটা। যস্য প্রভা প্রভবতো জগদণ্ডকোটি ( ব্রহ্মসংহিতা ৫.৪০)। ঠিক যেমন সূর্যালোক হচ্ছে সূর্যগোলক থেকে বিচ্ছুরিত রশ্মিচ্ছটা। আর সূর্য গোলকের অভ্যন্তরে রয়েছেন সূর্যদেব, একইভাবে চিন্ময় জগতে রয়েছে অব্যক্ত ব্রহ্মজ্যোতি, আর ব্রহ্মজ্যোতির মধ্যে রয়েছে চিন্ময় গ্রহলোক। তাদেরকে বলা হয় বৈকুণ্ঠলোক। আর সর্বোচ্চ বৈকুণ্ঠলোক হচ্ছে কৃষ্ণলোক। সুতরাং শ্রীকৃষ্ণের দেহ থেকে ব্রহ্মজ্যোতি বিচ্ছুরিত হচ্ছে। যস্য প্রভা প্রভবতো জগদণ্ডকোটি ( ব্রহ্মসংহিতা ৫.৪০)। সবকিছুই এই ব্রহ্মজ্যোতিতে বিরাজমান রয়েছে। সর্বম্‌ খল্বিদম্‌ ব্রহ্ম। শ্রীমদ্ভগবত গীতাতেও এটি বলা হয়েছে, মৎস্থানি সর্বভূতানি ন চাহং তেষু অবস্থিতঃ (শ্রীমদ্ভগবতগীতা ৯.৪)। সবকিছুই তাঁর জ্যোতিতে বিরাজমান, ব্রহ্মজ্যোতি.........

ঠিক যেমন অসংখ্য গ্রহলোকসহ সম্পূর্ণ জড় জগত এই সূর্যজ্যোতিতে বিরাজমান। সূর্যালোক হচ্ছে সূর্যগোলকের অব্যক্ত রশ্মিচ্ছটা। আর এই সূর্যালোককে অবলম্বন করে রয়েছে অসংখ্য গ্রহলোক। সবকিছুই এই সূর্যালোকের কারণে ঘটে চলেছে। একইভাবে এই ব্রহ্মজ্যোতি, এই রশ্মিচ্ছটা শ্রীকৃষ্ণের দেহ থেকে নির্গত হচ্ছে। আর সব কিছুই এই ব্রহ্মজ্যোতিকে আশ্রয় করে রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন ধরণের শক্তি। ঠিক যেমন সূর্যালোক থেকে বিভিন্ন ধরণের রং আর শক্তি আসে। যা এই জড় জগত সৃষ্টি করছে। ঠিক যেমন আমরা ব্যবিহারিকভাবে এর অভিজ্ঞতা নিতে পারি। পাশ্চাত্যদেশগুলোতে যখন সূর্যালোক থাকে না, যখন সেখানে বরফ পড়ে, গাছের সমস্ত পাতা তৎক্ষণাৎ ঝরে পড়ে যায়, এটাকে বলে শরৎকাল। শুধু গাছটাই থাকে, কাঠের টুকরাটা থাকে মাত্র। পুনরায় যখন বসন্ত ঋতু আসে, সূর্যালোক পাওয়া যায়, তারা সব একত্রে সবুজ হয়ে উঠে। তো সূর্যালোক জড় জগতে এভাবে কাজ করছে। একইভাবে পরমেশ্বর ভগবানের দেহ নির্গত চূড়ান্ত রশ্মিচ্ছটাই হচ্ছে সমস্ত সৃষ্টির মূল উৎস। যস্য প্রভা প্রভবতো জগদণ্ডকোটি ( ব্রহ্মসংহিতা ৫.৪০)। ব্রহ্মজ্যোতি থেকে লক্ষ লক্ষ ব্রহ্মাণ্ড বেরিয়ে আসছে।