BN/Prabhupada 0599 - কৃষ্ণভাবনামৃত এতো সহজ নয়, তুমি শরণাগত না হলে তা পাবে না



Lecture on BG 2.23 -- Hyderabad, November 27, 1972

তো ব্রহ্মসংহিতার আরেক জায়গায় বলা হয়েছেঃ বেদেষু দুর্লভমদুর্লভমাত্মভক্তৌ(ব্রহ্মসংহিতা ৫.৩৩)। বেদেষু। যদি তুমি শুধু বেদ অধ্যয়ন কর, যদিও বেদ অধ্যয়নের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণকে জানা, কিন্তু তুমি যদি নিজের কল্পিত উপায়ে বেদ অধ্যয়ন কর, তাহলে তিনি সর্বদাই তোমার কাছে সুদুর্লভই রয়ে যাবেন। বেদেষু দুর্লভমদুর্লভমাত্মভক্তৌ (ব্রহ্মসংহিতা ৫.৩৩)। কিন্তু তুমি যদি ভগবানের একজন ভক্তের নিকট উপনীত হও, তিনি দিতে পারবেন, তিনি দান করতে পারবেন। মহীয়সাং পাদরজোহভিষেকং নিস্কিঞ্চনানাং ন বৃণীত যাবৎ, ন এষাম্‌ মতিঃ তাবৎ উরুক্রম-অংঘ্রিম্‌ (শ্রীমদ্ভাগবতম ৭.৫.৩২)। প্রহ্লাদ মহারাজ বলেছেন যে, " তুমি কৃষ্ণভাবনামৃত লাভ করতে পারনা......" ন এষাম্‌ মতিঃ তাবৎ উরুক্রম। কৃষ্ণভাবনামৃত খুব সহজ নয়। যদি তুমি নিজেকে সমর্পণ না কর, তাহলে তুমি তা পেতে পারনা। নিস্কিঞ্চনানাং, মহীয়সাং পাদরজোহভিষেকং নিস্কিঞ্চনানাং ন বৃণীত যাবৎ। যতদিন না তুমি একজন ভক্তের পদধূলি লাভ করতে পারছ, নিস্কিঞ্চনানাং, যার এই জড়জগতে কিছুই করার নেই- যিনি শুধুমাত্র ভগবানের সেবায় নিয়োজিত থাকেন- যদি এই ধরনের ব্যক্তির সংস্পর্শে না আস, তাহলে কৃষ্ণভাবনামৃত লাভ করা অসম্ভব। এগুলো হচ্ছে শাস্ত্রবাক্য।

সুতরাং শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরম সত্য এবং তিনি একজন ব্যক্তি। কিন্তু আমরা তাঁকে উপলব্ধি করতে পারবনা, যদি আমরা একজন ভক্তের মাধ্যমে না যাই। তাই শ্রীকৃষ্ণকে বোঝানোর জন্য, শ্রীকৃষ্ণ একজন ভক্ত রূপে এসেছেন, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু। শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ শ্রীঅদ্বৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌর ভক্তবৃন্দ। সুতরাং আমাদেরকে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর মধ্য দিয়ে শ্রীকৃষ্ণকে জানতে হবে। কারণ শ্রীকৃষ্ণ নিজে এসেছেন...... কৃষ্ণায় কৃষ্ণচৈতন্যনাম্নে। শ্রীল রূপগোস্বামী যখন প্রথম শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সঙ্গে মিলিত হন ...... প্রথমবার নয় দ্বিতীয়বার। প্রথমবার যখন তিনি মিলিত হন, তখন তিনি নবাব হুসেন শাহ্‌র রাজ মন্ত্রী ছিলেন। আর তখন তাঁদের সাক্ষাৎ হওয়ার পর, শ্রীচোইত্ন্য মহাপ্রভু তাঁর এই মিশনকে সফল করার জন্য তাঁদেরকে চেয়েছিলেন। তাই তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, সরকারি চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন প্রসারে অংশগ্রহণ করবেন। তাই রূপগোস্বামী যখন এলাহাবাদের প্রয়াগে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সাথে সাক্ষাৎ করেন, এই সম্পর্কে প্রথম শ্লোকটি তিনি রচনা করেন, তিনি বলেন, নমো মহাবদান্যায় কৃষ্ণপ্রেমপ্রদায়তে (চৈচ মধ্য ১৯.৫৩) " হে আমার প্রভু, আপনি হচ্ছেন সবচেয়ে বদান্য অবতার।" কেন? কারণ আপনি কৃষ্ণপ্রেম বিতরণ করছেন। মানুষ কৃষ্ণকেই জানতে পারেনা, কৃষ্ণপ্রেমের আর কি কথা। কিন্তু এই কৃষ্ণপ্রেম আপনি অন্য যে কোন কিছুর মতো বিতরণ করছেন। নমো মহাবদান্...... " তাই আপনি হচ্ছেন সবচেয়ে উদার, সবচেয়ে দানশীল ব্যক্তি।" নমো মহাবদান্যায়। বদান্য মানে যিনি খুব দানশীল। তুমি যত চাও তত পরিমাণে দান।