BN/Prabhupada 0638 - যিনি শ্রীকৃষ্ণের কথা সর্বদাই চিন্তা করেন, তিনিই সর্বোত্তম যোগী



Lecture on BG 2.30 -- London, August 31, 1973

সুতরাং তিনি সবকিছুতেই শ্রীকৃষ্ণ দর্শন করেন। প্রেমাঞ্জনচ্ছুরিত-ভক্তি-বিলোচনেন সন্ত-সদৈব হৃদয়েষু বিলোকয়ন্তি (ব্রহ্ম সংহিতা ৫.৩৮) সদৈব। মাঝে মাঝে লোকেরা প্রশ্ন করে, "আপনি কি ভগবানকে দেখেছেন?" যারা প্রকৃত ভক্ত, উন্নত ভক্ত, তাঁরা শুধু শ্রীকৃষ্ণকেই দর্শন করেন, তাঁকে ছাড়া আর কিছুই তাঁরা দেখেন না। প্রেমাঞ্জনচ্ছুরিত-ভক্তি-বিলোচনেন সন্ত-সদৈব হৃদয়েষু (ব্রহ্ম সংহিতা ৫.৩৮) সদৈব মানে সবসময়। হৃদয়েষু বিলোকয়ন্তি । যং শ্যামসুন্দরং অচিন্ত্যগুণস্বরূপং গোবিন্দমাদি-পুরুষং তমহং ভজামি। এই হচ্ছে...। তুমি যতই কৃষ্ণভাবনামৃতে উন্নতি লাভ করবে, ততই তুমি শুধু শ্রীকৃষ্ণকেই দেখতে পাবে। আর যদি তুমি সর্বদাই শ্রীকৃষ্ণকে দেখার অভ্যাস কর, সদা তদ্ভাব-ভাবিতঃ... যং যং বাপি স্মরণ ভাব ত্যাজত্যন্তে কলেবরম্ (গীতা ৮.৬) যদ্ যদ্ ভাবং। যদি তুমি সবসময়ই শ্রীকৃষ্ণের চিন্তা কর... শ্রীকৃষ্ণের নির্দেশও এটি, মন্মনা ভব মদ্ভক্ত মদ্-যাজী মাং নমস্কুরু (গীতা ১৮.৬৫) "সর্বদা আমার কথা চিন্তা কর।" তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ যোগী যিনি সর্বদাই শ্রীকৃষ্ণের কথা চিন্তা করেন। যোগীনাম্ অপি সর্বেষাম্ মদ্গতেনান্তরাত্মনা, শ্রদ্ধাবান্ ভজতে যো মাম্ স মে যুক্ততমো মতঃ (গীতা ৬.৪৭) তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ যোগী। ভক্ত হলেন ...যা আমরা ইতিমধ্যেই বলেছি ... তা না হলে তিনি কেন শ্রীকৃষ্ণের কথা চিন্তা করবেন। মন্মনা ভব মদ্ভক্ত মদযাজী। ভক্তরাই কেবলমাত্র সর্বক্ষণ শ্রীকৃষ্ণ চিন্তা করতে পারে। "যেহেতু তুমি আমার ভক্ত, তাই তোমার কর্তব্য হচ্ছে সর্বক্ষণ আমাকে স্মরণ করা"। এটি কি খুব একটা কঠিন কাজ? তোমরা মন্দিরে শ্রীকৃষ্ণকে দেখতে পাচ্ছ। তুমি যতই শ্রীকৃষ্ণকে দেখবে, যত বেশি শ্রীকৃষ্ণকে দেখবে, বারবার, ২৪ ঘণ্টা কৃষ্ণভাবনায় যুক্ত থাকা মানে হচ্ছে, তোমাকে সর্বদা শ্রীকৃষ্ণকে দেখার অভ্যাস করতে হবে। এরই নাম কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন। এক মুহূর্তের জন্যও কৃষ্ণকে ভোলা যাবে না। আর সেটিই হচ্ছে নির্দেশ। মন্মনা ভব মদ্ভক্ত মদ্-যাজী মাং নমস্কুরু (গীতা ১৮.৬৫)। এই চারটি জিনিস করতে হবে। তুমি যখনই মন্দিরে রয়েছ, তুমি শ্রীকৃষ্ণ দর্শন কর এবং সেই ছবিটি তোমার হৃদয়ে গেঁথে যাবে, যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভালোবাসা বাড়াতে পার, তবে যখন তুমি মন্দিরের বাইরে যাচ্ছ, তখন সেই ছবিটি তোমার হৃদয়ের অভ্যন্তরেই তুমি দেখতে পারবে। অন্যথায়, তুমি আনুষ্ঠানিকভাবে মন্দিরে এলে আর যেই মাত্র... "বিরক্তিকর, এটি ভুলে যাওয়া যাক।" সেটি অন্য মনোভাব। এই পূর্ণ পন্থাটিই দেয়া হয়েছে শ্রীকৃষ্ণের প্রতি প্রেম বৃদ্ধি করার জন্য। স বৈ পুংসাম্ পরো ধর্মো যতো ভক্তিরধোক্ষজে (শ্রীমদ্ভাগবত ১.২.৬) ভক্তিরধোক্ষজে। সেটিই হচ্ছে সর্বোত্তম ধর্মব্যবস্থা। এটিই সবচাইতে উন্নত ধর্ম। এই কৃষ্ণভাবনামৃত হচ্ছে সর্বোত্তম, সর্বোচ্চ স্তরের ধর্ম পন্থা। কেন? কারণ এটি লোকেদের শেখাচ্ছে কিভাবে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা চিন্তা করা যায়, সর্বক্ষণ। ভালোবাসা। শুধু চিন্তা করাই নয়। আমরা কাউকে ভালো না বাসলে তার কথা চিন্তা করতে পারব না। যদি তুমি কাউকে ভালোবাস, তবেই কেবল তুমি সর্বক্ষণ তার কথা চিন্তা করতে পারবে। ঠিক যেমন প্রেমিক-প্রেমিকার মতো। ধর, একটি ছেলে এবং আরেকটি মেয়ে। তারা একে অপরকে ভালোবাসে। তারা দুজনেই সবসময় দুজনের কথা ভাবছে। "আমরা কখন আবার দেখা করব, আবার কখন আমাদের দেখা হবে?" সুতরাং একইভাবে, মন্মনা ভব মদ্ভক্তঃ তুমি তখনই শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত হতে পারবে, সর্বদাই শ্রীকৃষ্ণের কথা ভাবতে পারবে যদি কেবল শ্রীকৃষ্ণের প্রতি তোমার ভালোবাসা থাকে। প্রেমাঞ্জনচ্ছুরিত-ভক্তি-বিলোচনেন (ব্রহ্ম সংহিতা ৫.৩৮) ভক্তির দ্বারাই কেবল শ্রীকৃষ্ণের প্রতি তুমি প্রেম লাভ করতে পার। সেটিই প্রয়োজন।