BN/Prabhupada 0670 - যখন তুমি শ্রীকৃষ্ণে চিত্ত স্থির করবে, আর কোন জড় বাসনার দ্বারা বিচলিত হবে না



Lecture on BG 6.16-24 -- Los Angeles, February 17, 1969

ভক্তঃ বায়ুশুন্য স্থানে দীপশিখা যেমন কম্পিত হয় না ... (গীতা ৬/১৯) ।

শ্রীল প্রভুপাদঃ এখানে উদাহরণ দেয়া হচ্ছে, দেখো।

ভক্তঃ তেমনই চিত্তবৃত্তির নিরোধ অভ্যাসকারী যোগীর চিত্তও তেমনভাবে অবিচলিত থাকে।

শ্রীল প্রভুপাদঃ এই কক্ষে যেহেতু কোন বায়ু সজোরে চলছে না তাই দেখ দীপশিখাটিও অবিচল আছে। একইভাবে, তোমার মনের শিখাটিও একইভাবে নিশ্চল থাকবে। যদি তুমি তোমার মনকে কৃষ্ণভাবনামৃতে মগ্ন রাখ। ঠিক যেভাবে দীপশিখা বিচলিত হয় না, তেমনই তখন তোমার মনও আর বিক্ষিপ্ত হবে না। আর সেটিই হচ্ছে যোগের সার্থকতা।

ভক্তঃ শ্লোক ২০ থেকে ২৩ঃ সিদ্ধির স্তরকে বলা হয় সমাধি, যে অবস্থায় ব্যক্তির চিত্ত যোগাভ্যাসের ফলে সম্পূর্ণরূপে জড় বিষয় থেকে প্রত্যাহৃত হয়। (গীতা ৬/২০)

শ্রীল প্রভুপাদঃ সমাধি মানে, সমাধির অর্থ... কোন শুন্য নয়, সেটি সম্ভব নয়। ক্লেশোহধিকতরস্তেষাম্‌ অব্যক্তাসক্তচেতসাম্‌ (গীতা 12.5) কোন কোন যোগীরা বলে থাকে তুমি তোমাকে স্তব্ধ করে দাও, নিশ্চল হয়ে যাও। কিভাবে আমাকে নিশ্চল করা সম্ভব? আমি একজন চলন্ত আত্মা। তা সম্ভব নয়। অবিচল হওয়া মানে যখন তোমার মন শ্রীকৃষ্ণে স্থিত। তাহলে আর কোন জড় বাসনার গতি থাকবে না। তাকেই বলা হয় অবিচল হওয়া। এই জড় প্রকৃতি ও স্বভাব তোমাকে আর বিক্ষিপ্ত করবে না একে বলা হয় স্থির। কিন্তু কৃষ্ণভাবনামৃতে তোমার কার্যক্রম বেড়ে যাবে কৃষ্ণ ভাবনামৃতে তোমার গতিশীলতা যতই বাড়বে, তুমি ততই জড়কর্মে নিশ্চল বা গতিহীন হয়ে যাবে। সেটিই হচ্ছে পন্থা । কিন্তু তুমি যদি নিশ্চল হতে চাও, ঠিক যেমন একটি শিশু, সে অত্যন্ত চঞ্চল একটি শিশুকে তুমি কখনও স্থির করতে পার না। তুমি তাকে কিছু একটা দাও, খেলার কিছু বা কোন সুন্দর ছবি। সে তা দেখবে, নিজেকে যুক্ত রাখবে আর তখন স্থির হবে। সেটি হচ্ছে পন্থা। লোকেরা নিশ্চল। ওহ্‌ না না... স্থির নয়, কি বলে, গতিশীল। কিন্তু তুমি যদি তাকে স্থির করতে চাও তাহলে কৃষ্ণ সম্পর্কিত কিছুতে নিযুক্ত কর। তাহলেই সে স্থির হবে। এবং সে (অস্পষ্ট)... আর সেটিই হচ্ছে উপলব্ধি। যদি না সে এটি বুঝতে পারে যে 'আমি শ্রীকৃষ্ণের' তাহলে কেনই বা সে কৃষ্ণভাবনামৃতে যুক্ত হবে? আমি এই জড় দেহের নই, আমি এই জাতির নই, আমি এই সমাজের নই, আমি এইসব বদমাশদের নই, আমি কেবল শ্রীকৃষ্ণের।" স্থির। তাঁর পূর্ণ জ্ঞান লাভ হল।

এটিই আমার স্থিতি। আমি অবিচ্ছেদ্য অংশ। মমৈবাংশ জীব (গীতা ১৫/৭) - এইসব জীবেরা আমারই নিত্য সনাতন অংশ। তাই যেই মুহূর্তে তুমি এই কথাটি বুঝতে পারবে যে, "আমি শ্রীকৃষ্ণের অবিচ্ছেদ্য অংশ।" তৎক্ষণাৎ তুমি জড় কার্যকলাপে নিশ্চল হয়ে যাবে। হ্যাঁ।