BN/Prabhupada 0701 - তোমার গুরুর প্রতি যদি তোমার ভালবাসা থাকে, তাহলে এই জন্মেই তোমার কাজ শেষ কর



Lecture on BG 6.46-47 -- Los Angeles, February 21, 1969

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ?

তমাল কৃষ্ণঃ প্রভুপাদ, আমি শুনেছি যে গুরুদেব সবসময়ই ফিরে আসবেন, যতদিন না ভক্ত, শিষ্য, ভগবদ্ উপলব্ধি না করছে। আপনি কি এটি ব্যাখ্যা করে বলবেন?

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। কিন্তু এর সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবে না। (হাসি) তোমার গুরুদেবকে এভাবে সমস্যায় ফেলতে চেষ্টা কোর না। এই জন্মেই তোমার কাজ শেষ কর। এটি বিশেষ করে তাদের জন্য যারা ঢিলে স্বভাবের। তাঁর ভক্তেরা, তাঁর শিষ্যেরা গুরুদেবকে সেবার জন্য ঐকান্তিক হবে। যদি সে সত্যিই বুদ্ধিমান হয়, তাহলে তাকে এটা জানতে হবে যে, "আমি কেন এইভাবে আচরণ করব, যে আমার গুরুদেবকে আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এতো সমস্যা পোহাতে হবে? আমার সমস্ত কাজ আমি এই জন্মেই শেষ করব।" সেটিই হচ্ছে প্রকৃত মনোভাব। এই রকম না যে, "ওহ্‌ আমি নিশ্চিত আমার গুরুদেব তো আসবেই, তাহলে আমি যত খুশি আজেবাজে করে বেড়াতে থাকি। না" যদি তোমার সত্যিই গুরুদেবের প্রতি এতোটুকুও ভালবাসা বা শ্রদ্ধা থেকে থাকে, তাহলে তোমার উচিত এই জন্মেই সব কাজ সম্পন্ন করা যাতে করে তোমাকে উদ্ধার করার জন্য গুরুদেবকে আবার দিরে আসতে না হয়। এটা কি ঠিক হবে? এসবের ফায়দা নেয়ার চেষ্টা কর না। বরং, ঐকান্তিক হও আর তোমার কাজ সম্পন্ন কর। সেটিই হচ্ছে বাস্তব সত্য।

বিল্বমঙ্গল ঠাকুরের একটি উদাহরণ আছে বিল্বমঙ্গল ঠাকুর তাঁর পূর্ব জন্মে, প্রায় প্রেমভক্তির স্তরে, ভক্তির সর্বোচ্চ স্তরে চলে গিয়েছিলেন, কিন্তু যে কোন সময়েই পতনের সম্ভাবনা থাকে। তো যে কোন ভাবেই হোক, তাঁর অধঃপতন হয়েছিল। আর পরের জন্মে তিনি এক অত্যন্ত ধনী পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন, যেমনটা ভগবদ্গীতায় বলা হয়েছে, শুচিনাম্‌ শ্রীমতাং গেহে (গীতা ৬/৪১) তিনি এক ধনী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি স্বাভাবিকভাবেই, ঠিক যেমন ধনী পরিবারের সন্তানদের হয়ে থাকে, নারী-শিকারী তাই বলা হয়েছে যে তাঁর গুরুদেব তাকে এক বেশ্যার মাধ্যমে শিক্ষা দিয়েছিলেন। সেই বেশ্যার মাধ্যমে তাঁর গুরুদেব তাকে বলেছিলেন, "ওহ্‌ আপনি এই রক্ত-মাংস-হাড়ের প্রতি এতোই আসক্ত যদি আপনি এতোটা শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আসক্ত হতেন, আপনি কতোই না ভাল কিছু পেতেন" তিনি তৎক্ষণাৎ সেই কথাটি গ্রহণ করেছিলেন। তাই সেটি গুরুদেবের দায়িত্ব। কিন্তু আমাদের সেটির ফায়দা নেয়া উচিত নয়। তা ঠিক নয়। আমাদের চেষ্টা করা উচিত, যস্য প্রসাদাদ্‌ ভগবদ্‌ প্রসাদঃ আমাদের গুরুদেবকে এমন কোন অবস্থায় ফেলা উচিত নয় যে আমাকে তাঁকে কোন বেশ্যার ঘর থেকে উদ্ধার করতে হয়। কিন্তু তাঁকে এটি করতেই হবে। কারণ তিনি শিষ্য গ্রহণ করেন তাই এটি তাঁর দায়িত্ব।