BN/Prabhupada 0738 - কৃষ্ণ এবং বলরাম পুনরায় নিত্যানন্দ এবং গৌরাঙ্গ রূপে অবতীর্ণ হয়েছেন



Lecture on CC Adi-lila 1.2 -- Mayapur, March 26, 1975

তো এখানে শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু এবং শ্রীনিত্যানন্দ প্রভু তাঁদের পরিচয় হচ্ছে, তাঁরা হলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং বলরাম। এখন কৃষ্ণ অবতারে, এই দুই ভাই রাখাল বালক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। গোপীদের বন্ধু আর নন্দ মহারাজ এবং যশোদা মায়ের পুত্র। এটি হচ্ছে বৃন্দাবনের প্রকৃত জীবন। কৃষ্ণ এবং বলরাম, তাঁরা গ্রামের রাখাল বালক। এটি হচ্ছে কৃষ্ণ এবং বলরামের প্রথম বয়সের ইতিহাস। এবং তাঁদের আরেকটি কার্য ছিল, যখন তাঁরা মথুরায় গিয়েছিলেন। তাঁরা কংস এবং কুস্তিগিরদের বধ করেছিলেন, এরপর তাঁরা যখন আবার দ্বারকায় গমন করলেন, তাঁদেরকে অনেক অসুরদের সাথে যুদ্ধ করতে হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের শৈশবে ষোল বছর পর্যন্ত তাঁরা বৃন্দাবনে ছিলেন। আনন্দময় জীবন, শুধু প্রেম। এটি হচ্ছে পরিত্রাণায় সাধূনাম (শ্রীমদ্ভগবতগীতা ৪.৮)। সাধুরা, ভক্তরা তাঁরা সবসময় উৎকণ্ঠিত থাকেন কৃষ্ণ, বলরামকে দর্শন করার জন্য এবং তাঁদের সঙ্গ লাভের জন্য। তাঁরা সর্বদাই বিরহের কারণে খুব ব্যথিত থাকেন। তাঁদেরকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য, কৃষ্ণ বলরাম তাঁদের শৈশবের দিনগুলোতে বৃন্দাবনে খেলা করেন। আর বৃন্দাবনের বাইরে, মথুরা থেকে শুরু করে অনান্য জায়গায়, কাজ হচ্ছে বিনাশায় চ দুষ্কৃতামঃ হত্যা। তাই তাঁদের দুটো উদ্দেশ্য রয়েছেঃ একটি হচ্ছে ভক্তদের আনন্দ দেয়া, আর অন্যটি হচ্ছে অসুরদের বধ করা। অবশ্যই, কৃষ্ণ এবং বলরাম হচ্ছেন পরম পুরুষোত্তম ভগবান। তাঁদের হত্যা আর ভালবাসার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। তাঁরা... পরম। যারা নিহত হচ্ছে, তোমরা জান, তারাও এই জড়-জগতের বন্ধন থেকে মুক্তি লাভ করছে।

এখন সেই একই দুই ভাই আবার অবতরণ করেছেন, শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য-নিত্যানন্দ। সহদিতৌঃ তাঁরা একসঙ্গে অবতরণ করেছেন। এমন নয় যে তাঁরা একজন এখানে আছেন আর অন্যজন নেই। না। তাঁরা উভয়ই আছেন, সহদিতৌ। তাঁদেরকে চন্দ্র এবং সূর্যের সাথে তুলনা করা হয়। চন্দ্র আর সূর্যের কাজ হচ্ছে অন্ধকার বিদূরিত করা। সূর্য দিনের বেলায় উদিত হয় আর চন্দ্র রাতের বেলায় উদিত হয়। কিন্তু এই চমৎকার চন্দ্র এবং সূর্য, চিত্রৌ, তাঁরা একসাথে আবির্ভূত হয়েছেন। কিন্তু উদ্দেশ্য একই, তমো নুদৌ। উদ্দেশ্য হচ্ছে অন্ধকার দূর করা, কারণ আমরা অন্ধকারে রয়েছি। আমরা, যে কেউ, যে জড়-জগতে রয়েছে, সেই অন্ধকারে রয়েছে। অন্ধকার মানে অজ্ঞানতা, জ্ঞানহীন। তারা চরম পর্যায়ের পশু। "কেন তারা পশু, এতো সভ্য মানুষ, এতো ভালো পোশাকে সুসজ্জিত আর বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষা? তারা কেন অন্ধকারে রয়েছে?" হ্যাঁ, তারা অন্ধকারে রয়েছে। "প্রমাণ কি?" প্রমাণ হচ্ছে যে তারা কৃষ্ণভাবনাময় নয়। এটি হচ্ছে প্রমাণ। এটিই হচ্ছে তাদের অন্ধকার। যে কাউকে জিজ্ঞাসা কর, জনে জনে জিজ্ঞাসা কর, যে... জিজ্ঞাসা কর, তারা কৃষ্ণ সম্বন্ধে কি জানে। প্রত্যেকেই অজ্ঞ, অন্ধকার। তাই এটি হচ্ছে প্রমাণ। কিভাবে এটি প্রমাণ? শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন। আমরা বলিনি, শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন।তিনি কি বলেছেন? ন মাম্‌ দুষ্কৃতিন মূঢ়াঃ প্রপদ্যন্তে নরাধমা, মায়াপহৃত জ্ঞানা (শ্রীমদ্ভগবতগীতা ৭.১৫)। অপহৃত জ্ঞানা মানে অন্ধকার। যদিও তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি লাভ করেছে, যদিও তাদেরকে সভ্য বলা হয়, উন্নত জড় সভ্যতা, কিন্তু মায়াপহৃত জ্ঞানা। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধি সমূহ...... কারণ তারা শ্রীকৃষ্ণকে যথাযথ ভাবে জানে না। যার কারণে শ্রীকৃষ্ণের নিকট আত্মসমর্পণ করে না। যা শ্রীকৃষ্ণ নিজেই বলেছেন। সর্ব ধর্মান পরিত্যজ্য মাম একং স্মরণং ব্রজ...... (শ্রীমদ্ভগবতগীতা ১৮।৬৬)। তিনি নিজে বলছেন। কারণ এই সমস্ত বদমাশ আর মূর্খরা, তারা অন্ধকারে রয়েছে, তারা জানে না জীবনের লক্ষ্য কি - শ্রীকৃষ্ণ এত দয়ালু যে তিনি নিজে ঘোষণা করছেনঃ সর্বধর্মান পরিত্যজ্য মাম একং স্মরণং ব্রজ. এটি হচ্ছে দর্শন। কিন্তু তবু তারা তা করছে না। কেন? নরাধমা। কারণ সর্ব নিম্ন পর্যায়ের মনুষ্য জাতি, নরাধম। তারা কিভাবে নরাধম হয়েছে? দুস্কৃতিন, সর্বদাই পাপময় জীবন-যাপন করে। পাপময় জীবন কি? অবৈধ যৌন সঙ্গ, মাংসাহার, নেশা আর জুয়া খেলা। কারণ তারা এই সমস্ত বিষয়ে আসক্ত, তারা দুস্কৃতি আর নরাধম, মানবজাতির মধ্যে সর্বনিম্ন। আর তথাকথিত শিক্ষার মাধ্যমে তারা যে জ্ঞান অর্জন করছে, এটি মিথ্যা জ্ঞান, মায়াপহৃত জ্ঞানা। এটিই হচ্ছে অবস্থান।