BN/Prabhupada 0744 - যেই মুহূর্তে তুমি শ্রীকৃষ্ণের দর্শন পাবে, তোমার নিত্য জীবন পেয়ে যাবে



Lecture on SB 7.9.53 -- Vrndavana, April 8, 1976

তো প্রহ্লাদ মহারাজ তাঁর পিতা কর্তৃক বিভিন্ন ভাবে নির্যাতিত হয়েছিলেন, কিন্তু তিনি শ্রীকৃষ্ণকে ভুলে যাননি। তাঁর ভক্তি ছিল অবিচলিত। তাই শ্রীকৃষ্ণ অত্যন্ত খুশি হয়েছিলেন, প্রীতোহহং। প্রীতোহহং। প্রহ্লাদ ভদ্রম্‌ (শ্রীমদ্ভাগবতম ৭.৯.৫২)। তো... মামপ্রীণত আয়ুষ্মন্‌ (শ্রীমদ্ভাগবতম ৭.৯.৫৩)। আয়ুষ্মন, আশীর্বাদঃ "এখন তুমি দীর্ঘজীবী হও" অথবা "চিরজীবী হও", আয়ুষ্মন। আয়ুষ মানে জীবনের স্থায়িত্বকাল। যখন কেউ শ্রীকৃষ্ণের সান্নিধ্যে যায়... মামুপেত্য পুনর্জন্ম দুঃখালয়মশাশ্বতম্‌, নাপ্নুবন্তি। দুঃখালয়ম (শ্রীমদ্ভগবতগীতা ৮.১৫)। যতক্ষণ আমাদের এই জড় দেহ রয়েছে, এই জড়-জগত দুঃখালয়ম অশাশ্বতম। এটি দুঃখ-দুর্দশায় পূর্ণ, একই সাথে ক্ষণস্থায়ী। এমন কি আমরা এই দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে থেকেও... প্রত্যেকেই বেঁচে থাকতে চায়। একজন বৃদ্ধ মানুষ, সেও মরে যেতে চায় না। সে ডাক্তারের কাছে যায়, কিছু ঔষধ খায় যাতে করে সে বেঁচে থাকেতে পারে। কিন্তু সে এর জন্য অনুমোদন প্রাপ্ত হবে না। অশাশ্বতম। তুমি খুব ধনী ব্যাক্তি হতে পার, তুমি অনেক ঔষধ খেতে পার, অনেক ইঞ্জেকশান নিতে পার তোমার জীবনকে দীর্ঘায়ীত করার জন্য। কিন্তু তা সম্ভব নয়। কিন্তু যেইমাত্র তুমি শ্রীকৃষ্ণের দর্শন পাবে, তখন তুমি তোমার নিত্য জীবন ফিরে পাবে। আমাদের নিত্য জীবন রয়েছে। আমরা নিত্য। ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে (শ্রীমদ্ভগবতগীতা ২.২০)। দেহটি ধ্বংস হয়ে গেলে আমরা মরে যাই না। আমরা আরেকটি দেহ পাই। এটিই হচ্ছে রোগ। আর যখন তুমি শ্রীকৃষ্ণকে দেখতে পারবে, যখন তুমি শ্রীকৃষ্ণকে জানতে পারবে... এমনকি যদি শ্রীকৃষ্ণকে নাও দেখ, শুধুমাত্র শ্রীকৃষ্ণকে জানতে পার, তাহলেই তুমি নিত্য হবে।

জন্ম কর্ম চ মে দিব্যমেবং
যো বেত্তি তত্ত্বতঃ
ত্যক্তা দেহং পুনর্জন্ম
নৈতি...
(শ্রীমদ্ভগবতগীতা ৪.৯)

শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন। শুধু শ্রীকৃষ্ণকে জানার চেষ্টা কর। শ্রীকৃষ্ণকে জানা মানে তাঁকে দর্শন করাও, কারণ তিনি পরম- এর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। যেমন এই জড়-জগতে যদি তুমি কোন কিছু সম্পর্কে জ্ঞান লাভ কর, তাহলে এর সাথে তুমি তাকে দেখতে পাবে না। এটিই হচ্ছে দ্বৈতভাব। কিন্তু পরম এর ক্ষেত্রে, যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে জান, যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে শ্রবণ কর, যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণকে দেখ, যদি শ্রীকৃষ্ণের সাথে খেলা কর, তবে এই সবগুলই এক। এটিকে বলে পরম। এখানে কোন দ্বৈতভাব নেই।

তাই যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে জান, দিব্যম, দিব্য প্রকৃতি... তুমি শুধু জান যে শ্রীকৃষ্ণ আমাদের মতো ননঃ শ্রীকৃষ্ণের কোন জড় দেহ নেই, শ্রীকৃষ্ণ অসুখী নন, শ্রীকৃষ্ণ সর্বদাই আনন্দময়- শুধুমাত্র এই কয়েকটা জিনিস, যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণের এই প্রকৃতির প্রতি বিশ্বাসী হও- তৎক্ষণাৎ তুমি নিত্য আলয়, ভগবতদ্ধামে ফিরে যাওয়ার যোগ্যতা লাভ করবে। এই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত, খুব চমৎকার। শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং বর্ণনা করেছেন, আর যদি তুমি তাতে বিশ্বাসী হও, "হ্যাঁ, শ্রীকৃষ্ণ যা বলেছেন, তা সব ঠিক।" ঠিক যেমন অর্জুন বলেছিলেন, সর্বমেতদ্‌ ঋতং মন্যে যন্মাং বদসি কেশবঃ (শ্রীমদ্ভগবতগীতা ১০.১৪)। "তুমি যা আমাকে বলেছ, তা আমি সত্য বলে মনে করি। কোন কমতি নেই, কোন... " সর্বমেতদ্‌ ঋতং মন্যেঃ "তুমি যা বলেছে, আমি বিশ্বাস করি। আমি স্বীকার করি। আমি... " এই হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ। শ্রীকৃষ্ণ কিছু বলেছেন আর আমি কিছু জানতে পেরেছি। যেটা লক্ষ লক্ষ বছর ধরে চেষ্টা করেও তোমার পক্ষে জানা সম্ভব হতো না। তোমাকে শ্রীকৃষ্ণকে জানতে হবে, ঠিক যেভাবে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন সেভাবে। তাই আমরা শ্রীমদ্ভগবতগীতা যথাযথ প্রকাশ করেছি। এটিই হচ্ছে প্রকৃত জ্ঞান।