BN/Prabhupada 0762 - খুব কঠোর হও - ঐকান্তিকভাবে জপ কর, তোমার এই জীবন ও পরবর্তী জীবন দুটোই রক্ষা হবে



Lecture on SB 6.1.30 -- Honolulu, May 29, 1976

প্রভুপাদঃ সুতরাং আমাদের এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন হচ্ছে শুধু মানুষকে শিক্ষা দেয়ার জন্য যে তোমরা বিশ্বাস কর আর নাই কর, ভগবান আছেন। তিনি সবকিছুর মালিক। কিন্তু তিনি স্বয়ং আসেন এবং তিনি বলেছেন ভোক্তারং যজ্ঞতপসাং সর্বলোকমহেশ্বরম্‌ সুহৃদং সর্বভূতানাং (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৫.২৯) "আমি সবকিছুর মালিক, আমি ভোক্তা, এবং আমি সকলের বন্ধু। যদি তুমি জড়-জগতের এই দুঃখময় পরিস্থিতি থেকে মুক্তি লাভ করতে চাও, আমিই তোমার সর্বোত্তম বন্ধু।" সুহৃদং সর্বভূতানাং। শ্রীকৃষ্ণ। কারণ তিনি হচ্ছেন পিতা। অহং বীজপ্রদঃ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১৪.৪)... পিতার থেকে ভালো বন্ধু আর কে হতে পারে? হাহ্‌? পিতা সবসময় দেখতে চান যে "আমার পুত্র সুখী।" এটিই স্বাভাবিক। চাওয়ার প্রয়োজন হয় না, "পিতা আমার প্রতি দয়া করুন।" না। পিতা ইতোমধ্যেই দয়ালু। কিন্তু তুমি যদি পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করো, তাহলে তুমি কষ্ট পাবে। একইভাবে, ভগবান আমাদের পিতা, ভগবান আমাদের বন্ধু, স্বাভাবিকভাবেই। এবং তিনি বলেছেন যে, সুহৃদং সর্বভূতানাং, অহম্‌ বীজপ্রদঃ পিতা (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১৪.৪) "আমি হচ্ছি বীজ প্রদানকারী..." শুধু মানুষের ক্ষেত্রেই নয়- জীবনের সমস্ত প্রজাতি, তারাও জীবাত্মা। তাদের কর্ম অনুসারে, তারা বিভিন্ন ধরনের পোশাক লাভ করেছে। ঠিক যেমন এই সভাতে আমরা বিভিন্ন ধরনের পোশাক পড়েছি। তো আমরা প্রত্যেকেই মানুষ; কাপড় ভিন্ন হতে পারে। এটি আলাদা ব্যাপার। একইভাবে, জীবাত্মা ভগবানের অবিচ্ছেদ্য অংশ, কিন্তু কিছু জীব মানুষ হয়ে এসেছে, কিছু বিড়াল হয়ে, কিছু এসেছে গাছ হয়ে, কিছু পোকামাকড় হয়ে, কিছু দেবতা হয়ে, কেউ ব্রহ্মা হয়ে, কিছু পিপীলিকা হয়ে- বিভিন্ন রকম। কারণ তারা এরকম হতে চেয়েছে, আর ভগবান তাদেরকে সুযোগ দিয়েছে, "ঠিক আছে। তুমি এরকম হতে চাও, জীবন উপভোগ করতে চাও? ঠিক আছে , এরকম হও।" এই হচ্ছে ভগবানের ব্যবস্থা, ভগবান আছেন, তিনি প্রত্যেকের পিতা। তিনি প্রত্যেকের বন্ধু। তিনি সর্বদাই প্রস্তুত। তিনি ব্যক্তিগতভাবে পেছনেই আসছেন। তিনি এতো দয়ালু। শোনা মাত্রই, তৎক্ষণাৎ।

নিশম্য ম্রিয়মাণস্য
মুখতো হরিকীর্তনম্‌
ভর্তুর্নাম মহারাজ
পার্ষদাঃ সহসা পতন্‌
(শ্রীমদ্ভাগবত ৬.১.৩০)।

ভগবান অনেক আজ্ঞা বাহককে প্রেরণ করেছেন। "শুধু দেখ যে কেউ যদি আমার কাছে আসতে আগ্রহী হয়।" শুধু দেখ। সাথে সাথে আজ্ঞা বাহকরা- তাঁরা সর্বত্র পরিভ্রমন করতে থাকে- "এখানে একজন ব্যাক্তি আছেন, তিনি নারায়ণের নাম জপ করছেন।' চলে আস। তাঁকে নাও।" দেখ। "এখানে একজন ব্যাক্তি আছেন , তিনি নারায়ণের নাম জপ করছেন।' হ্যাঁ।" ভর্তুর্নাম মহারাজ নিশম্য। "ওহ্‌, চমৎকার। সে নারায়ণের নাম জপ করছে।' " তৎক্ষণাৎ। যমদূতেরা সেখানে ছিল- "তোমরা কারা, তাঁকে বিরক্ত করছ? থাম!"

তাই নাম জপের এই সুযোগটি গ্রহণ কর। হরের্নাম হরার্নাম হরার্নামৈব কেবলম্‌ (চৈচ আদি ১৭.২১)। তুমি সর্বদা নিরাপদ থাকবে। যমদূতেরা, যমরাজের আজ্ঞাবাহকরা, তারা স্পর্শ করার সাহস পাবে না। এটি এতো কার্যকর। তাই এই সুযোগটি গ্রহণ কর, হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ কর। আমি খুব খুশী যে তোমরা তা করছ, কিন্তু আরও কঠোর হও, গুরুত্ব সহকারে জপ কর- তোমাদের জীবন সুরক্ষিত, তোমাদের পরবর্তী জীবন সুরক্ষিত, সবকিছু ঠিক আছে।

অসংখ্য ধন্যবাদ।

ভক্তবৃন্দঃ জয়।