BN/Prabhupada 0774 - আমরা আমাদের নিজেদের মতো করে পারমার্থিক উন্নতির উপায় বের করতে পারি না



Lecture on SB 7.6.2 -- Toronto, June 18, 1976

কৃতে মানে সত্য যুগ। যখন মানুষ এক লক্ষ বেঁচে থাকতো। সেই সময়ে তা সম্ভব ছিল যেমন বাল্মীকি মুনি ষাট হাজার বছর তপস্যা করেছিলেন এই ধ্যান, ধারণা, প্রাণায়াম, প্রত্যাহার, আসলে বৈদিক পদ্ধতি। শাস্ত্রে তা বলা হয়েছে। ভগবদ্গীতাতেও বলা হয়েছে কিন্তু এই যুগে তা সম্ভব নয়। এমনকি অর্জুনও তা করতে অস্বীকার করেছেন "হে কৃষ্ণ তুমি আমাকে এই ধ্যান যোগের অভ্যাস করতে বলছ, কিন্তু তা আমার দ্বারা সম্ভব নয়" তস্যাহম্‌ নিগ্রহম্‌ মন্যে বায়োরিব সুদুষ্করম্‌ (গীতা ৬/৩৪) তা সম্ভব না কিন্তু অর্জুন শুদ্ধভক্ত ছিলেন তিনি সর্বদা কৃষ্ণ স্মরণ করছিলেন, আর কোন কাজ ছিল না তাঁর। তাই অর্জুনকে উৎসাহ দিতে শ্রীকৃষ্ণ বললেন, "নিরুৎসাহিত হয়ো না। যেহেতু তুমি মনে করছ যে তুমি শ্রীবিষ্ণুর রূপে মন নিযুক্ত করতে পারবে না, তার জন্য হতাশ হবার কিছু নেই। তুমি একজন প্রথম শ্রেণীর যোগী" কেন? কারণ

যোগীনাম্‌ অপি সর্বেষাম্‌
মদ্গতেনান্তরাত্মনা
শ্রদ্ধাবান ভজতে যো
মাম্‌ স মে যুক্ততমো মতঃ
(গীতা ৬/৪৭)

যিনি সর্বদা অন্তরে শ্রীকৃষ্ণ কথা চিন্তা করছেন, তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ যোগী সেই জন্য বলা হচ্ছে, কলৌ তদ্‌ হরিকীর্তনাৎ (ভাগবত ১২/৩/৫২)। প্রথম শ্রেণীর যোগ পদ্ধতি এই যুগে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এবং শাস্ত্রে এই কথা বলে হয়েছে যে হরের্নাম হরের্নাম হরের্নামৈব কেবলম্‌ কলৌ নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব গতিরন্যথা (চৈতন্য চরিতামৃত আদি ১৭/২১)

তাই আমাদের শাস্ত্রের কথা মানতে হবে আমরা আমাদের নিজেদের মন গড়া ভাবে পারমার্থিক উন্নতির পন্থা তৈরি করতে পারি না। তা অসম্ভব

যঃ শাস্ত্র বিধিম্‌ উৎসৃজ্য
বর্ততে কামকারতঃ
ন স সিদ্ধিম্‌ অবাপ্নোতি
ন সুখম্‌ ন পরাম্‌ গতিম্‌
(গীতা ১৬/২৩)

যে কেউই শাস্ত্রবিধি উল্লঙ্ঘন করলে শাস্ত্রবিধি, যঃ শাস্ত্র বিধিম্‌ উৎসৃজ্য , শাস্ত্র না মানলে বর্ততে কামকারতঃ, খেয়ালখুশিমতো কিছু করলে ন স সিদ্ধিম্‌ অবাপ্নোতি, সে কখনই সফল হতে পারবে না। সে কখনই সফল হবে না। ন সিদ্ধিম্‌ ন পরাম্‌ গতিঃ মুক্তিঅ পাবে না ন সিদ্ধিম্‌ , ন সুখম্‌ - না এই জগতের কোন সুখও পাবে তাই আমাদের অবশ্যই শাস্ত্র বিধি মেনে চলতে হবে শাস্ত্রবিধি... যথাযথভাবে। শাস্ত্রে বলা হয়েছে আমি ইতিমধ্যেই বলেছি। কলৌ তদ্‌ হরিকীর্তনাৎ

কৃতে যদ্ধ্যায়তো বিষ্ণুম্‌
ত্রেতায়াম্‌ যজতো মখৈ
দ্বাপরে পরিচার্যায়াং
কলৌ তদ্‌ হরিকীর্তনাৎ
(ভাগবত ১২/৩/৫২)

এই যুগের শাস্ত্র বিধি হচ্ছে হরি কীর্তন তুমি যতই হরিনাম কীর্তন করবে , ততই তুমি সিদ্ধিলাভ করবে এই হচ্ছে শাস্ত্রবিধি। এবং শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তা নিশ্চিত করেছেন সাধু শাস্ত্র গুরু বাক্য প্রথমে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে, শাস্ত্রের নির্দেশ কি তারপর সাধুরা কি বলছেন, ভক্তেরা কি করছেন সাধুরা কি করছেন, শাস্ত্রে কি বলা আছে, এবং গুরু কি বলছেন আমাদেরকে এই তিনটি জিনিস মেনে চলতে হবে সাধুগুরুশাস্ত্র বাকু তিনেতে করিয়া ঐক্য সাধু কে? যিনি শাস্ত্রের কথা মেনে চলেন অথবা গুরু? গুরু মানে তিনি যিনি শাস্ত্রের কথামতো চলেন তবেই তিনি গুরু। তিনি সাধু। তিনিই সাধু এবং যদি কেউ শাস্ত্রবিধিম্‌ উতসৃজ্য শাস্ত্র বিধি ত্যাগ করে ... তাহলে গুরু বা সাধুর প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে? ন সিদ্ধিম্‌। সে সিদ্ধিলাভ করতে পারবে না সে সিদ্ধিলাভ করতে পারবে না, কারণ সে শাস্ত্র বিধি পরিত্যাগ করেছে তাই সে একটা ভণ্ড। এইভাবে আমাদের পরীক্ষা করতে হবে যে গুরু কে।