BN/Prabhupada 0811 - রূপ গোস্বামীর নির্দেশ হচ্ছে - যেকোন ভাবেই কৃষ্ণের প্রতি আসক্ত হতে হবে



761008 - Lecture SB 01.07.51-52 - Vrndavana

এটা মনে করো না যে, যেহেতু শ্রীকৃষ্ণ এসেছিলেন, বৃন্দাবনের রাখাল বালক রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন, কখনও ভেবো না... অবশ্য, বৃন্দাবনবাসী, তাঁরা জানেন না যে, শ্রীকৃষ্ণ কে? তাঁরা গ্রামবাসী। তাঁরা জানেন না। কিন্তু তাঁরা শ্রীকৃষ্ণকে ছাড়া অন্য কাউকেই ভালোবাসেন না। এটি হচ্ছে তাঁদের যোগ্যতা। এমন কি তাঁরা শ্রীবিষ্ণুকেও জানেন না। গোপীরা যখন বিষ্ণু মূর্তি দেখেছিলেন- শ্রীকৃষ্ণ বিষ্ণু রূপ ধারণ করেছিলেন, তাঁরা পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিলেন- তাঁরা বললেন, "ওহ্‌, ইনি শ্রীবিষ্ণু। ঠিক আছে। নমস্কার।" তাঁরা এমন কি শ্রীবিষ্ণুর প্রতিও আগ্রহী নন। তাঁরা শুধু শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আসক্ত, যদিও তাঁরা জানেন না যে শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরম পুরুষোত্তম ভগবান। একইভাবে, শ্রীকৃষ্ণ সম্বন্ধে না জেনেও, যদি তুমি শুধু শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আসক্ত হও, তাহলে তোমার জীবন সার্থক। যেন তেন প্রকারেণ তুমি শুধু শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আসক্ত হও। ময্যাসক্তমনাঃ পার্থ যোগং যুঞ্জন্মদাশ্রয়ঃ... ... জ্ঞাস্যসি তৎ শৃণু (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৭.১)। তোমাকে শুধু হতে হবে... এটিই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন। যে কোন ভাবেই হোক, শ্রীকৃষ্ণের প্রতি তোমার আকর্ষণ বৃদ্ধি কর। যে কোন উপায়েই হোক। যেন তেন প্রকারেণ মনঃ কৃষ্ণে নিবেষয়েৎ (ভক্তিরসামৃতসিন্ধু ১.২.৪)। এটি রূপ গোস্বামীর উপদেশ। যে কোন প্রকারেই হোক, তুমি শুধু শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আসক্ত হও।তাহলেই তোমার জীবন সার্থক।

তাই এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন মানুষকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করছে কিভাবে শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া যায়, এই ব্যাপারে। এটি হচ্ছে ভক্তিযোগ। যেন তেন প্রকারেণ মনঃ কৃষ্ণে নিবেষয়েৎ। এরপর? বিধিনিষেধ। ভক্তি যোগের অনেক নিয়ম-কানুন রয়েছে। হ্যাঁ, আছে। রূপ গোস্বামী বলেছেন, সর্বে বিধিনিষেধা স্যুরেতয়োরেব কিংকরাঃ (পদ্মপুরাণ, বৃহৎ সহস্রনাম স্তোত্র)। যে কোন ভাবেই তুমি যদি শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আসক্ত হও, তাহলে সমস্ত বিধি সমস্ত নিয়ম কানুন আর বিধি নিষেধ, তাঁরা তোমার দাস রূপে কাজ করবে। তাঁরা এমনিতেই (অস্পষ্ট)। কারণ যখনই তুমি শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আকৃষ্ট হবে, শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, ক্ষিপ্রং ভবতি ধর্মাত্মা।

ক্ষিপ্রং ভবতি ধর্মাত্মা
শশ্বচ্ছান্তিং নিগচ্ছতি
কৌন্তেয় প্রীতিজানীহি
ন মে ভক্তঃ প্রণশ্যতি
(শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৯.৩১)।

ক্ষিপ্রম্‌, খুব শীঘ্র। অপি চেৎসুদুরাচারো ভজতে মামনন্যভাক্‌ সাধুরেব স মন্তব্যঃ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৯.৩০)।

কখনও মনে করবে না যে এই সমস্ত ইউরোপিয়ান অথবা আমেরিকান, এরা ম্লেচ্ছ বা যবন। এটি অপরাধ, কারণ তাঁরা সাধু। তারা জানে না... তাঁরা শ্রীকৃষ্ণকে কোনরূপ জগাখিচুড়ী মার্কা জ্ঞান ছাড়াই গ্রহণ করেছে, যে, "এটাও ভালো, ওটাও ভালো, সেটাও ভালো।" তাঁরা কঠোরভাবে তাঁদের গুরুদেবের নির্দেশ পালন করছে। কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ং (শ্রীমদ্ভাগবত ১.৩.২৮)। এমন কি আমাদের সংস্থার একটি ছোট বাচ্চাও, শ্যামসুন্দরের মেয়েটা, সে যখন কারো কাছে যাবে- মাত্র পাঁচ বছরের বাচ্চা- সেও জিজ্ঞাসা করবে "তুমি কি শ্রীকৃষ্ণকে চেন?" তখন কেউ বলল যে, "না, আমি চিনি না।" "ওহ্‌। পরম পুরুষোত্তম ভগবান।" সে এইভাবে তার কাছে প্রচার করে। তখন তারা বিশ্বাস করে, কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ং। এই বিশ্বাসটা হচ্ছে সর্ব প্রথম গুণ। এরপর অন্যান্য জিনিসগুলো অনুসরণ করবে। /// সুতরাং কেউ যদি এই বিষয়টির ওপর ভিত্তি করে বিশ্বস্ত হয় যে, কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ং, এবং সেভাবে সে কর্ম করে, নিয়মগুলো পালন করে, কৃষ্ণৈক স্মরণম্‌ (অস্পষ্ট), বর্ণাশ্রম ধর্ম। কৃষ্ণৈক স্মরণম্‌। এটিই প্রয়োজন। মাম একং স্মরণং ব্রজ। তাই এটি কর। এই নীতিতে স্থির থাক যে, শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরম পুরুষোত্তম ভগবান, শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরতত্ত্ব, পরম সত্য এবং শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন সর্ব ব্যাপক। ময়া ততম ইদম্‌ সর্বং (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৯.৪)। জগদব্যক্তমূর্তিনা। এটি অব্যক্ত। শ্রীকৃষ্ণের শক্তি সর্বত্র বিরাজমান।