BN/Prabhupada 0830 - এই হচ্ছে বৈষ্ণব দর্শন, যেখানে আমরা সেবক হতে চাইছি



Lecture on SB 1.2.30 -- Vrndavana, November 9, 1972

সুতরাং শ্রীকৃষ্ণ হলেন বিভু; আমরা অনু। কখনও মনে করবেন না যে আমরা শ্রীকৃষ্ণের সমান। তা একটি বড় অপরাধ। তাকে মায়া বলে। সেটা মায়ার অন্তিম ফাঁদ। প্রকৃতপক্ষে, আমরা এই জড় জগতে এসেছি শ্রীকৃষ্ণের সাথে এক হওয়ার জন্য। আমরা ভেবেছিলাম আমরা শ্রীকৃষ্ণের মতো হব।

কৃষ্ণ ভুলিয়া জীব ভোগ বাঞ্ছা করে
পাশেতে মায়া তারে জাপটিয়া ধরে
(প্রেম বিবর্ত)।

কারণ আমরা শ্রীকৃষ্ণের সাথে এক হতে চেয়েছিলাম, শ্রীকৃষ্ণের সাথে প্রতিযোগিতা করতে চেয়েছিলাম, অতএব আমরা এই জড় জগতে প্রবেশ করেছি। মায়া তারে জাপটিয়া ধরে। এবং এখানে, এই জড় জগতে, এটাই চলছে। সবাই শ্রীকৃষ্ণ হওয়ার চেষ্টা করছে। সেটা হল মায়া। সবাই। "প্রথমত, আমাকে একটি বড়, বড় লোক হতে হবে; তারপর আমাকে মন্ত্রী হতে হবে, আমাকে রাষ্ট্রপতি হতে হবে। " এইভাবে, যখন সবকিছু ব্যর্থ হয়, তখন "আমাকে ভগবানের সাথে এক হতে হবে।" তার মানে, "আমাকে ভগবান হতে হবে।" এটাই চলছে। এটাই জড় জাগতিক অস্তিত্বের লড়াই। সবাই শ্রীকৃষ্ণ হওয়ার চেষ্টা করছে।

তবে আমাদের দর্শন ভিন্ন। আমরা শ্রীকৃষ্ণ হতে চাই না। আমরা শ্রীকৃষ্ণের দাস হওয়ার চেষ্টা করছি। সেটাই মায়াবাদ দর্শন এবং বৈষ্ণব দর্শনের মধ্যে পার্থক্য। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু আমাদের শেখান কিভাবে শ্রীকৃষ্ণের দাসের, দাসের, দাসের, দাসের দাস কিভাবে হতে হয়। গোপীভর্তুঃ পদকমলয়োর্দাসদাসানুদাসঃ (শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত মধ্য ১৩/৮০)। যিনি শ্রীকৃষ্ণের দাসেদের মধ্যে সর্বনিম্ন, তিনিই হলেন প্রথম শ্রেণীর বৈষ্ণব। তিনি প্রথম শ্রেণীর বৈষ্ণব। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাই আমাদের শিক্ষা দেন:

তৃণাদপি সুনীচেন
তোররপি সহিষ্ণুনা।
অমানিনা মানদেন
কীর্তনীয়ঃ সদা হরিঃ
গোপীভর্তুঃ পদকমলয়োর্দাসদাসানুদাসঃ
(শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত আদি ১৭/৩১)

এটাই বৈষ্ণব দর্শন। আমরা দাস হওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা কোন জড় জাগতিক উপাধি দিয়ে সম্বোধন করি না। যখনি আমরা কোন জড় জাগতিক উপাধি দিয়ে সম্বোধন করি, আমরা মায়ার খপ্পরে পড়ে যাই। কৃষ্ণ ভুলিয়া। কারণ, যখনি আমি শ্রীকৃষ্ণের সাথে আমার সম্পর্ক ভুলে যাই ... আমি শ্রীকৃষ্ণের নিত্য দাস। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেন, জীবের স্বরূপ হয় নিত্যকৃষ্ণদাস (শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত মধ্য ২০/১০৮-১০৯) শ্রীকৃষ্ণের সেবক হিসেবে থাকাই জীবের নিত্য পরিচয়। যখনি আমরা তা ভুলে যাই, সেটা হল মায়া। যখনি আমি মনে করি যে "আমি শ্রীকৃষ্ণ," সেটাই হল মায়া। সেই মায়া মানে এই মায়া, বিভ্রম, জ্ঞানের অগ্রগতি দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হতে পারে। সেটা হলো জ্ঞানী। জ্ঞানী অর্থাৎ এই হল আসল জ্ঞান, তার আসল অবস্থান বোঝা। এটা জ্ঞান নয়, যে "আমি ভগবানের সমান। আমি ভগবান।" এটি জ্ঞান নয়। আমি ভগবান, তবে আমি ভগবানের অংশ। তবে পরম ভগবান হলেন শ্রীকৃষ্ণ। ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ (ব্রহ্মসংহিতা ৫/১)।