BN/Prabhupada 0837 - আমরা ততদিনই খুব শক্তিশালী থাকতে পারি, যতদিন কৃষ্ণ চান



731130 - Lecture SB 01.15.20 - Los Angeles

প্রদ্যুম্নঃ অনুবাদঃ "হে রাজন, এখন আমি আমার বন্ধু এবং সবচেয়ে অন্তরঙ্গ শুভাকাঙ্খী পরমেশ্বর ভগবান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছি এবং তাই আমার হৃদয় সবকিছু শুন্য অনুভব হচ্ছে। তাঁর অনুপস্থিতিতে আমি কিছু সামান্য রাখালদের দ্বারা পরাস্ত হয়েছি যখন আমি শ্রীকৃষ্ণের মহিষীদের রক্ষণাবেক্ষণ করছিলাম।"

প্রভুপাদঃ শ্রীকৃষ্ণের অপ্রকটের পর, তাঁর সমস্ত মহিষীরা ১৬,১০৮ জন মহিষী, তাঁরা অর্জুনের সুরক্ষায় ছিলেন কিন্তু কিছু রাখাল সমস্ত রাণীদের অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল। অর্জুন তাঁদের রক্ষা করতে পারেন নি।

তাই এটি হচ্ছে উদাহরণ যে, আমরা ততদিনই খুব শক্তিশালী থাকতে পারব, যতদিন শ্রীকৃষ্ণ আমাদের শক্তিশালী রাখবেন আমরা কেউ আলাদা ভাবে শক্তিশালী নই, এমনকি অর্জুনের ক্ষেত্রেও না। আমরা জন্ম-ঐশ্বর্য-শ্রুত-শ্রী নিয়ে খুব গর্ববোধ করি (ভাগবত ১/৮/২৬) জড় জীবনে সবাই তাঁদের উচ্চ জন্ম নিয়ে ধনসম্পদ, শিক্ষা, সৌন্দর্য ইত্যাদির গর্বে গর্বিত এই চারটি জিনিস পূর্বকৃত পুণ্যের ফলে লাভ হয় পাপকর্মের ফলে উল্টো হয় উঁচু ঘরে বা জাতিতে জন্ম হয় না, কোন ধন সম্পদ নেই, বিদ্যা শিক্ষা নেই, কোন সৌন্দর্য হয় না কিন্তু আমাদের এটি জানা উচিৎ যে এই জাগতিক সম্পদ... ঠিক যেমন, তোমরা আমেরিকানরা তোমাদের এইসব সম্পদ আছে তোমরা খুব সম্মানিত দেশে জন্ম নিয়েছ আমেরিকান জাতি সারা বিশ্বে সম্মানিত তাই এটি তোমাদের জন্য একটি সুযোগ, ভাল জন্ম তোমরা জন্মেছ... প্রতিটি আমেরিকান... ভারতের সাথে তুলনা করলে, প্রত্যেকটি আমেরিকার মানুষই ধনী কারণ এখানে যে কোন একটা সাধারণ মানুষও চার পাঁচ হাজার টাকা রোজগার করে ভারতে এমনকি একজন হাইকোর্ট বিচারকও এতো রোজগার করতে পারে না। বড়জোর চার হাজার। (তৎকালীন সময়ে) তাই তোমার এটা জানা উচিৎ যে তুমি কৃষ্ণের কৃপায় এসব পেয়েছ কোন দারিদ্র নেই, অভাব নেই, ভাল শিক্ষার সুযোগ আছে এবং তোমরা ধনী, সুন্দর, সবকিছু। জন্মৈশ্বর্য শ্রুতশ্রীঃ । কিন্তু তুমি যদি কৃষ্ণ ভাবনাময় না হও, যদি তুমি এইসব সম্পদের অপব্যবহার কর তাহলে পুনর্মুষিক ভব।

তোমরা পুনর্মুষিক ভব গল্পটি জান? জানে কেউ? পুনর্মুষিক ভব মানে "তুমি আবার ইঁদুর হয়ে যাও।" (হাসি) একজন সাধুর কাছে একটি ইঁদুর হয়েছিল, "সাধুবাবা, আমার খুব সমস্যা।" "কি হয়েছে?" মানুষ সাধারণত জাগতিক লাভ পাবার জন্যই সাধুসন্তের কাছে যায় এটাই স্বভাব, পশু স্বভাব কেন তুমি কিছু জাগতিক লাভ পেতে সাধুর কাছে যাবে? না। তোমার ভগবানকে জানার জন্য তাঁর কাছে যাওয়া উচিৎ। সেটাই আসল কাজ যাই হোক, সাধুরা কখনও কখনও স্বীকার করেন। "তুমি কি চাও?" ঠিক শিবজীর মতো, তাঁর ভক্তেরাও এই ইদুরের মতো , কিছু চায় "সাধুবাবা, এই বেড়াল আমাকে খুব উৎপাত করছে" "তো তুমি কি চাও?" "আমাকে বেড়াল করে দিন"। "তথাস্তু, তুমি বেড়াল হয়ে যাও।" সে তৎক্ষণাৎ বেড়াল হয়ে গেল কয়েকদিন পর, সে আবার ফিরে এল, "সাধুবাবা, আমি সমস্যায় আছি" "কি সমস্যা?" "কুকুরগুলো আমাকে খুব উৎপাত করছে" (হাসি) "তো তুমি কি চাও"? "এখন আমাকে একটা কুকুর বানিয়ে দিন"। "তথাস্তু" তারপর আবার কয়েকদিন পর... একের পর এক... এটাই প্রকৃতির বিধান একজন দুর্বল, আরেকজন শক্তিশালী। সেটাই ব্যবস্থাপনা তো সবশেষে সে একটা বাঘ হতে চাইল সেই সাধুর আশীর্বাদে সে বাঘ দেহ পেল এবং যখন যে বাঘের দেহ পেল, সে তখন সেই সাধুর দিকে চোখ চোখ বড় বড় করে তাকালো। ওহ্‌। (প্রভুপাদ ভক্তদের দিকে সেভাবে তাকালেন) সেই সাধু জিজ্ঞাসা করল, "তুমি আমাকে খেতে চাও?" "হ্যাঁ"। "ওহ্‌ তাহলে আবার ইঁদুর হয়ে যাও, (হাসি) আমার দয়ায় তুমি বাঘ হয়েছিলে তো আমি তোমাকে আবার ইঁদুর বানিয়ে দিচ্ছি"।

তোমরা আমেরিকানরা এখন বাঘ হয়েছ। নিক্সন বাঘ কিন্তু তোমরা যদি এর যথাযথ সদ্ব্যবহার না কর, কৃতজ্ঞতা বোধ না কর ... যদি সেই বাঘটি কৃতজ্ঞতা বোধ করত যে, "এই সাধুর দয়ায় আমি আজকে বাঘ হয়েছি, আমাকে তাঁর কাছে নিশ্চয়ই অনুগত থাকতে হবে..." কিন্তু অনুগত হওয়ার পরিবর্তে যদি তুমি তাকে খেতে চাও, তাহলে তোমাকে আবারও ইঁদুর হতে হবে যদি সাধুর ক্ষমতা থাকে তোমাকে ইঁদুর থেকে বাঘ বানাতে তাহলে তিনি তোমাকে আবার বাঘ থেকে ইঁদুরও বানিয়ে দিতে পারেন। এই কথা সবসময় মনে রাখতে হবে তাই ভগবানের কৃপায় তোমরা এই শক্তিশালী দেশ, জাতি হয়েছ, সুন্দর দেহ, শিক্ষা, সম্পদ পেয়েছ এগুলো কৃষ্ণের কৃপায় পেয়েছ, কিন্তু যদি তুমি কৃষ্ণকে ভুলে যাও, তাহলে তোমাকে আবার ইঁদুর হয়ে যেতে হবে সেটা মনে রেখ। কেউ তোমার পরোয়া করবে না