BN/Prabhupada 0843 - জীবনের শুরুটাই ভুল। ওরা ভাবছে এই দেহটিকে আত্মা বলে ভাবছে



761215 - Lecture BG 16.07 - Hyderabad

এরা হচ্ছে আসুরিক লোকজন। এরা জানে না যে, এদের গন্তব্য কোথায়? তারা বলবে নিজেদের স্বার্থের কথা। কিন্তু এরা মূর্খরা জানে না যে আসল স্বার্থ কি, কারণ ওদের জীবনের একদম শুরুটাই ভুল ওরা মনে করে যে এই দেহ হচ্ছে আমি। তাহলে ওরা প্রকৃত স্বার্থ জানবে কি করে? মৌলিক ধারনাটাই ভুল। দেহাত্মবুদ্ধি কুকুর বেড়ালেরা মনে করে যে, "আমি এই দেহ"। ওদেরও সেই একই স্বার্থ, অসুর। তারা জানে না, আর না ওরা জানতেও চায়। দেহিনোহস্মিন্‌ যথা দেহে (গীতা ২/১৩) এই দেহের অভ্যন্তরে চিন্ময় আত্মা আছে। তারা তা বোঝে না তাই তাদের স্বার্থটা ভুল প্রকৃত স্বার্থ হচ্ছে "আমি চিন্ময় আত্মা, আমি ভগবানের সন্তান আমার পিতা অনেক, অনেক, অনেক ধনী, ঐশ্বর্যশালী । আমি আমার পিতার সঙ্গ ত্যাগ করেছি তাই আমি দুঃখ পাচ্ছি ।" তা না হলে দুঃখ পাবার কোন কারণই নেই। আমাদের এই অভিজ্ঞতা আছে একজন অনেক ধনীলোকের সন্তান , সে কেন দুঃখ পাবে? কৃষ্ণ বলছেন, "আমিই বীজ প্রদানকারী পিতা" (গীতা ১৪.৪) "আমি সমস্ত জীব প্রজাতির বীজপ্রদানকারী পিতা" ভগবান মানে ষড় ঐশ্বর্য পূর্ণ। ছয় প্রকার ঐশ্বর্য। তিনি পূর্ণ। তিনি সব কিছুর মালিক। ভোক্তারম্‌ যজ্ঞতপসাং সর্বলোক মহেশ্বরম্‌ (গীতা ৫/২৯) আমি যদি সবকিছুর মালিকের সন্তান হয়ে থাকি তাহলে আমার দুঃখভোগের প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে? তাই প্রকৃত স্বার্থের মূল ধারনাটাই গুলিয়ে গেছে।

তাই এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন সেই চেতনাকে জাগ্রত করার চেষ্টা করছে যে, "তুমি এই দেহ নও। তুমি চিন্ময় আত্মা। তুমি ভগবানের নিত্য অংশ। তুমি কেন দুঃখভোগ করবে? তাই কৃষ্ণভাবনামৃত অনুশীলন কর, এবং কেবল এই অনুশীলনের দ্বারাই তুমি ভগবানের ধামে ফিরে যাবে। এবং তখন তুমি সত্যিকার অর্থে সুখী হবে।" শ্রীকৃষ্ণ এটি নিশ্চিত করেছেন দুঃখালয়ম্‌ অশাশ্বতম্‌ নাপ্নুবন্তি মহাত্মন সংসিদ্ধিম্‌ পরমাম্‌ গতঃ মামুপেত্য (গীতা ৮/১৫) "যদি কেূ আমার কাছে ফিরে আসে," মাম্‌ উপেত্য "তাহলে সে আর এই জড় জগতে ফিরে যাবে না, দুঃখালয়ম্‌ অশাশ্বতম্‌ (গীতা ৮/১৫) এই জায়গা হচ্ছে দুঃখভোগের স্থান যহেতু ওরা ওদের প্রকৃত স্বার্থ জানে না এই দুঃখভোগের স্থানকে ওরা সুখভোগের জায়গা মনে করছে কিন্তু এটি আসলে দুঃখভোগের জায়গা।

তুমি তোমার দেহ আবৃত করে আছ কেন? কারণ এই দেহ দুঃখের কারণ আর পরিবেশের সাথে সংযোগের ফলে আমি শীত অনুভব করছি তাই আমাকে তা ঢেকে রাখতে হয়। এটি হচ্ছে দুঃখ কমাবার একটি উপায় পরিস্থিতিটি দুঃখময় , কিন্তু যে কোন ভাবেই হোক আমি এই দুঃখ কমাবার চেষ্টা করছি তেমনই, গরমের দিনেও ভোগান্তি আছে সেই সময় আমরা এই আবরণ চাই না। আমরা তখন পাখা চালাতে চাই তাই সবসময় দুঃখ আছে। গরমের দিনে হোক আর শীতের দিনে হোক। ভোগান্তি থাকবেই আমরা সেটা বুঝতে পারছি না। এর কারণ আমাদের আসুরিক স্বভাব আমরা প্রশ্ন করি না। গরমে ও শীতে ... গরমের দিনে আমরা ঠাণ্ডা কিছু ভালবাসি আর শীতকালে আমরা গরম কিছু চাই তাই এই দুটি জিনিস আছে। কখনও এই গরমটাই দুঃখ কখনও আবার ঠাণ্ডাটাই দুঃখ। তাহলে ভোগ করতে পারলাম কই? আমরা শুধু ভাবি, "এখন যদি গরম কিছু পেতাম, ..." কিন্তু সেই গরমটাও ভোগান্তি তাই কৃষ্ণ বলেছেন, "এই সুখ দুঃখ নিয়ে ভেব না, এটা চলতেই থাকবে তুমি গরমের দিনে একটা কিছুকে সুখের মনে করছ আর সেই একই জিনিস শীতকালে তোমার ভাল লাগবে না। তাই এইসব আসবে এবং যাবে তাই এই তথাকথিত সুখ দুঃখ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ো না। তোমার কর্তব্য পালন কর। কৃষ্ণ ভাবনাময় হও।"