BN/Prabhupada 0849 - আমরা ভগবানকে দেখতে চাই, কিন্তু আমরা এটাই স্বীকার করি না যে আমরা তাঁকে দেখতে অযোগ্য



731231 - Lecture SB 01.16.03 - Los Angeles

প্রদ্যুম্নঃ অনুবাদঃ "কৃয়াপচার্যকে তাঁর গুরুরূপে বরণ করে মহারাজ পরীক্ষিত গঙ্গার তীরে তিনটি অশ্বমেধ যজ্ঞ করেছিলেন এই যজ্ঞগুলোতে অংশগ্রহণকারীদের যথেষ্ট পরিমাণে উপহার দেয়া হয়েছিল এবং সেই যজ্ঞগুলিতে সাধারণ মানুষেরাও দেব-দেবীদের দেখতে সক্ষম হয়েছিলেন। (ভাগবত ১.১৬.৩)

প্রভুপাদঃ বর্তমানে লোকেরা বলে "আমরা দেবতাদের দেখতে পাই না কেন?" এর উত্তর হচ্ছে, "সেই অশ্বমেধ যজ্ঞটি কোথায় হচ্ছে?" দেবতারা এতো সস্তা নয়। যেমন রাজা বা প্রেসিডেন্ট-এর মতো তিনি কি যেখানে সেখানে, সাধারণ মানুষের কাছে আসেন? না। যেখানে রাজা বা মহান ঋষি বা নারদ মুনির মতো মহান কেউ আসবেন সেই স্থানটিও আসার মতো যোগ্য হতে হবে

পূর্বে এক গ্রহ থেকে অন্য গ্রহের ব্যবস্থা ছিল ঠিক যেমন অর্জুন স্বর্গে গিয়েছিলেন, তেমনই এই সমস্ত যজ্ঞে এটি যদি মহারাজ পরীক্ষিত বা মহারাজ যুধিষ্ঠিরের দ্বারা আয়োজন করা হত তাহলে আমন্ত্রিত হয়ে দেবতারা সেখানে আসবেন তাঁরা শুধু আসতেনই না, বরং সাধারণ মানুষেরা তাঁদের দেখতেও পেতেন তাই এখানে বলা হয়েছে, যত্রাক্ষি গোচরঃ দেবযত্রাক্ষি গোচরঃ আমরা সবকিছু দেখার গর্বে রয়েছি, কিন্তু আমাদের দেখার জন্য যোগ্য হতে অপেক্ষা করতে হবে এমন নয় যে, আমি খামখেয়ালির বশে বললাম, "ভগবান আমার সামনে আসুন, আমি আপনাকে দেখতে চাই।" ভগবান... ভগবান রয়েছেন, তোমার দর্শন ক্ষমতার যতটুকু যোগ্য ভগবান খুব দয়ালু। এখানে তিনি মন্দিরে উপস্থিত আছেন তাঁকে দেখ। তাহলে তুমি ভগবান দর্শনের উপলব্ধি পাবে

তাই ভগবান বা দেবতা, সকলেই অক্ষিগোচরঃ হতে পারেন তোমার দৃষ্টিতে, শর্ত হচ্ছে তুমি তাঁকে দেখার যোগ্য কি না। এই হচ্ছে পন্থা এই বদমাশগুলো বলবে, "আমাকে ভগবান দেখাতে পারেন?" কিন্তু তোমার দেখার কি শক্তি আছে প্রথমে সেই যোগ্যতা অর্জন কর। তাহলে দেখতে পারবে ভগবান সর্বত্র আছেন। অণ্ডাতরস্থ পরমাণুচয়ান্তরস্থ (ব্রহ্মসংহিতা ৫.৩৫) ... এমনকি পরমাণুর মধ্যেও আছেন তাই যে ব্যক্তি ভগবানকে দেখার যোগ্য নয়, তাঁকে ভগবদ্গীতায় অন্য কোনভাবে ভগবান দেখতে বলা হয়েছে যেমন শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, রসোহম্‌ অপ্সু কৌন্তেয় প্রভাস্মি শশীসূর্যয়োঃ (গীতা ৭.৮) "হে প্রিয় অর্জুন, আমি জলের স্বাদ" তাই তুমি ভগবানকে জলের স্বাদে দেখতে চেষ্টা কর বর্তমানে আমাদের অনেক ইন্দ্রিয় আছে। তুমি চোখ দিয়ে কৃষ্ণ দেখতে চাও তাহলে জিহবা দিয়ে শুরু কর। এটাও আরেকটা ইন্দ্রিয়। ঠিক যেমন, যখন কোন ভাল খাবার থাকে, যদি আমি বলি, "দেখি তো কেমন হয়েছে" "দেখা যাক্‌" - মানে ... তুমি তো এখনই দেখছ? তুমি কি মনে কর? "না আমি জিহ্বাকে স্পর্শ করতে চাই।" সেটি হচ্ছে "দেখা যাক্‌" চোখ দিয়ে নয় যদি একটি ভাল মিষ্টি দেখি, হালুয়া ইত্যাদি থাকে তখন "দেখি তো" বলার মানে "স্বাদ নিয়ে দেখি" তাই প্রথমে ভগবানকে আস্বাদন কর। তোমার ইন্দ্রিয় সীমার মধ্যেই আছেন, শুধু অভ্যাস কর তখন সেবোন্মুখে হি জিহবাদৌ স্বয়মেব সস্ফুরত্যদ্য (ভক্তিরসামৃত ১.২.২৪৫) তখন তুমি বুঝতে পারবে। ভগবান নিজেকে তোমার কাছে প্রকাশ করবেন যখন তুমি প্রসাদ পেয়ে গুরুর কাছে বিনয় এবং মহাপ্রসাদের স্বাদ নিচ্ছ, তুমি সরাসরি ভগবানকে দেখতে পারবে, তিনি তোমার সাথে কথা বলবেন। তা সম্ভব

বর্তমানে আমরা ভগবানকে দেখতে চাই কিন্তু আমরা স্বীকার করি না যে আমাদের যোগ্য না। কিভাবে দেখব আমি? আমি একজন সাধারণ প্রেসিডেন্টকেই দেখতে না পারি আমার খেয়ালখুশি , আমি প্রেসিডেন্ট বা অমুক অমুক বড় বড় লোকরা মামার সাথে রয়েছেন যোগ্য না হলে তুমি দেখতে পারবে না। তাই তুমি কিভাবে ভগবান দেখবে তা সম্ভব নয়, তোমাকে নিজেকে যোগ্য করতে হবে। তাহলে তুমি ভগবানকে দেখতে পারবে। অক্ষিগোচরঃ অক্ষিগোচরঃ মানে ঠিক যেমন আমরা দেখছি - তুমি আমাকে দেখছ , এবং আমি তোমাকে দেখছি তেমনই, তুমি দেবতাদের বা ভগবানকে দেখতে পারব যখন তুমি যোগ্য হবে