BN/Prabhupada 0854 - বৃহত্তম থেকেও বৃহত্তর এবং ক্ষুদ্রতম থেকেও ক্ষুদ্রতর। এই হচ্ছে ভগবান



750306 - Lecture SB 02.02.06 - New York

বৃহত্তম থেকেও বৃহত্তর এবং ক্ষুদ্রতম থেকেও ক্ষুদ্রতর। এই হচ্ছে ভগবান যখন শ্রীকৃষ্ণের কাছ থেকে অর্জুন জানতে চেয়েছিলেন... আপনার শক্তির বিস্তার কি পরিমাণ? আপনি কিভাবে কাজ করছেন? আমি জানতে চাই," কারণ তিনি অনুসন্ধিৎসু ছিলেন, ব্রহ্ম জিজ্ঞাসা তিনি জানতে চাইছেন যে ভগবান কি এবং ভগবান স্বয়ং তাঁকে উত্তর দিচ্ছেন এই অধ্যায়ে তিনি বলছেন যে আমি এই বস্তুর মধ্যে এই, এই বস্তুর মধ্যে আমি এই, ঐ বস্তুর মধ্যে এই ... এইভাবে তারপর তিনি সারমর্ম করে বললেন যে, "আমি আর কত কিছু বলব? আমাকে, আমার শক্তিকে এইভাবে বোঝার চেষ্টা কর যে, এই জড় জগতে অসংখ্য ব্রহ্মাণ্ড আছে, এবং এর প্রত্যেকটিতে অসংখ্য গ্রহলোক আছে আমি এই সবকিছুর মধ্যেই প্রবিষ্ট।" বিষ্ট্যভ্যহম্‌ ইদম্‌ কৃৎস্নম্‌ "আমি এই সবকিছুই এবং আমিই এসবের পালনকর্তা"। ঠিক যেমন কৃষ্ণ সবার অন্তরে বিরাজিত... ঠিক তেমনই, শ্রীকৃষ্ণ সমস্ত কিছুতেই আছেন, এমনকি প্রতিটি অণু পরমাণুতেও। এই হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ আমরা কৃষ্ণকে অনুকরণ করতে চাই। কিন্তু... যদি আমাকে বলা হয়, "আপনি একটি পরমাণুর মধ্যে প্রবেশ করুন তো"। "না আমি তা পারব না।" না।

কৃষ্ণ, ভগবান মানে তিনি সবচেয়ে বৃহত্তম বস্তু থেকেও বৃহৎ হতে পারেন আমরা এই বৃহত্তম অনুমান করতে পারি, যেমন ব্রহ্মাণ্ড কেবল এই একটি ব্রহ্মাণ্ডই নয়। অসংখ্য কোটি ব্রহ্মাণ্ড সেই সব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি হয়েছে লোমকূপ থেকে। যস্যৈক নিশ্বসিত কালম্‌ অথাবলম্ব জীবন্তি লোমবিলোজা জগদন্ডনাথা (ব্রহ্মসংহিতা ৫.৪৮) এই হলেন ভগবান। আমাদের শরীরে সম্ভবত কোটি কোটি লোমকূপ আছে ভগবান মহাবিষ্ণুরও আছে আর সেই লোমকূপ থেকে প্রতিনিয়ত তাঁর নিঃশ্বাসের সঙ্গে সমস্ত ব্রহ্মাণ্ডসমূহ সৃষ্টি হচ্ছে যস্যৈক নিশ্বসিত কালম্‌। তাই এইভাবে অবশ্যই বুঝতে হবে যে ভগবান কিঃ তিনি সর্ববৃহৎ থেকে বৃহত্তর এবং সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম থেকেও ক্ষুদ্রতর । সেইটি হচ্ছে ভগবানের মহিমা তিনি কেবল তাঁর নিঃশ্বাসের মাধ্যমেই বড় বড় ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করতে পারেন এবং আবার - আমরা জানি না যে একেকটা ব্রহ্মাণ্ডে কত কত অণু পরমাণু রয়েছে - তিনি প্রত্যেকটি পরমাণুতে প্রবেশ করেন অণ্ডান্তরস্থ পরমাণু চয়ান্তরস্থম্‌ একোহপি অস্য রচয়িতুম্‌ জগদণ্ড কোটিম্‌ যচ্ছক্তিরস্তি জগদণ্ডচয়া যদন্তঃ

অণ্ডান্তরস্থ পরমাণু চয়ান্তরস্থম্‌
গোবিন্দম্‌ আদি পুরুষম্‌ তমহম্‌ ভজামি
(ব্রহ্মসংহিতা ৫.৩৫)

এই হচ্ছে ভগবানের ধারণা

সিদ্ধান্ত হচ্ছে যে, আমরা এই জগতে দুঃখভোগ করছি আমরা শুধু মনে করে যাচ্ছি যে, "আমি ভবিষ্যতে সুখী হব যদি আমি এমনটা করতে পারি" কিন্তু সেই ভবিষ্যৎ আসার আগেই, আমরা শেষ। এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা। একবার নয় বরং বহুবার। তবুও আমাদের নিজেদের মতামত থেকেই যাচ্ছে ঠিক যেমন তথাকথিত বিজ্ঞানীদের মতো। কোটি কোটি বছর বাদে এই হবে, ঐ হবে। না। এই সব কিছুই আজেবাজে কথা যদি তোমার আয়ুই হয় পঞ্চাশ বা ষাট বছর তাহলে তুমি কিভাবে কোটি কোটি বছরের চিন্তা করছ? এই সত্য উপলব্ধি করার আগে তোমার এই পঞ্চাশ ষাট বছর কোটিবার শেষ হয়ে যাবে কিন্তু এইসব তথাকথিত বিজ্ঞানীরা, তাঁরা ভাবছে, "না এই পঞ্চাশ ষাট বছরের আয়ু বিশাল সময়" সেইভাবে তুমি বুঝতে পারবে না। তা সম্ভব না। চিরম্‌ বিচিন্বন্‌। যদি এই মূর্খভাবে তুমি চিরম্‌ - চিরকালও জল্পনা কল্পনা করার চেষ্টা কর, তবু বুঝতে পারবে না চিরম্‌ বিচিন্বন্‌।

অথাপি তে দেব পদাম্বুজদ্বয়
প্রসাদলেশানুগৃহীত এব হি
জানন্তি তত্ত্বম্‌ ভগবান মহিমাম্নো
ন চান্য একোহপি চিরম্‌ বিচিন্বন্‌
(ভাগবত ১০/১৪/২৯)

চিরম্‌ মানে চিরকাল। যদি চিরকাল ধরেও কেউ ভগবানকে বোঝার জন্য কল্পনা করতে থাকে এই ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক আর সীমিত ইন্দ্রিয়ের দ্বারা, তা সম্ভব হবে না... যদি তুমি তাহলে তোমাকে শাস্ত্রের নির্দেশ গ্রহণ করতে হবে প্রথম কথা হচ্ছে তোমাকে জড় আসক্তি ত্যাগ করতে হবে। নিবৃত্ত... (পাশ থেকে অস্পষ্ট) যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ জড় আসক্তিতে থাকবে কৃষ্ণ একটি আপেক্ষিক দেহ দান করবেন। তথা দেহান্তর প্রাপ্তিঃ ধীরস্তত্র ন মুহ্যতি (গীতা ২/১৩) যদি আমরা এই অনিত্য দেহে ভোগ করতে চাই , তাহলে দেহ অনুযায়ী আমাদের ভোগের ব্যবস্থা করা হবে একটি পিঁপড়ের জীবনেও একই জিনিস আহার, নিদ্রা, মৈথুন এবং আত্মরক্ষা এবং দেবরাজ ইন্দ্র, স্বর্গের রাজা ইন্দ্রের জন্যও তাঁরও সেই একই প্রবৃত্তি - আহার, নিদ্রা, ভয় এবং মৈথুন যদি কেউ চন্দ্রলোকে, সূর্যলোকে বা সর্বোচ্চ লোকেও যায় যেখানেই যাক না কেন এই চারটি জিনিসই থাকবে আহার, নিদ্রা, ভয়, মৈথুন এবং জন্ম মৃত্যু জরা ব্যাধি