BN/Prabhupada 0860 - এটা ছিল ব্রিটিশ সরকারের নীতি যে ভারতীয় সবকিছু ওরা নিন্দা করত



750521 - Conversation - Melbourne

পরিচালকঃ আপনি কি মনে করেন না যে কৃষকদের তাঁদের নিজেদের মন রয়েছে?

প্রভুপাদঃ তাদের মন আছে। কিন্তু সেটি অপ্রসন্ন মন ঠিক পাগলের মতো। ওরও মন আছে, কিন্তু তার লাভ কি? আপনি তো কোন পাগলের মতামত নিতে যাবেন না তার মন আছে, কিন্তু সে একটা পাগল মূঢ়। মায়য়াপহৃত জ্ঞানা (গীতা ৭/১৫)। তার জ্ঞান অপহৃত ঐ খারাপ হয়ে যাওয়া মন, বা মতামতের কোন মূল্য নেই

পরিচালকঃ যদি ব্রাহ্মণেরা তাঁদের নিজেদের স্বার্থে পৃথিবী শাসন করতে শুরু করে, তাহলে কি হবে?

প্রভুপাদঃ হম্‌?

ভক্তঃ তিনি বলছেন যে, ব্রাহ্মণেরা যদি তাঁদের ব্যক্তিস্বার্থে শাসন করে তাহলে কি হবে?

প্রভুপাদঃ না, না।

পরিচালকঃ কিন্তু পুঁজিবাদীরা বা কেউ হয়ত ...

প্রভুপাদঃ না, না। সেটি তাঁর বিচ্ছিন্ন স্বার্থ নয়, ব্যক্তি স্বার্থ নয় এটি তাঁর চরিত্র। যেমন, সম । শান্তিপূর্ণ

পরিচালকঃ তাঁরা তাঁদের নিজেদের দল পাকাতে পারে বা নিজেদের স্বার্থ ভেবে সেই মতো পৃথিবী চালাতে পারে...

প্রভুপাদঃ না, না। কারণ তাঁরা সৎ। সেটিই (অস্পষ্ট) । তাঁরা তা করবেন না

পরিচালকঃ তাঁরা গ্রন্থ অনুযায়ী চলবেন

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। সৎ মানে নিজ স্বার্থ নয়। সকলের স্বার্থে। সেটাই সততা

পরিচালকঃ যদি সে ভুল পরিচালিত হয়, তাহলে কি হবে? প্রভুপাদঃ হম্‌?

পরিচালকঃ পৃথিবী বদলাচ্ছে, যেহেতু সেই বই অনেক আগে ...

প্রভুপাদঃ যেহেতু তাঁরা অনুসরণ করে নি। যেমন ভারতবর্ষে এটাই ব্রাহ্মণদের চরিত্র তারপর ক্রমে ক্রমে গত এক হাজার বছর ধরে তাঁদের সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে গেছে কারণ ভারত বিদেশীদের পরাধীন ছিল মুসলমানেরা তাদের কিছু সংস্কৃতি দিয়েছে তারপর ব্রিটিশরা এসেছে, তারা দিয়েছে... সকলেই নিজের স্বার্থ দেখেছে যখন ব্রিটিশরা এলো, তাঁদের লর্ড ম্যাক্‌কলির গোপন প্রতিবেদন ছিল যে "যদি তুমি তাঁদের ভারতীয় হিন্দু করে রাখ, তুমি কখনও তাঁদের ওপর শাসন করতে পারবে না।" তাই এটা ছিল ব্রিটিশ সরকারের নীতি যে ভারতীয় সবকিছু ওরা নিন্দা করত।

পরিচালকঃ কিন্তু আপনি আগে বলেছিলেন যে ব্রিটিশরা মদ খাওয়া অনুমোদন করত না।

প্রভুপাদঃ হুহ্‌?

পরিচালকঃ এটা কেবল এখনই যে... আপনি আগে বলেন নি?

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ, ব্রিটিশরা অনুমোদন করেছে, খুব সাবধানে কিন্তু সরাসরি করেনি, মানে তাঁরা সংস্কৃতির ওপর সরাসরি হাত দেয়নি। কিন্তু গোপনে করেছে। এবং এখন যখন তাঁরা প্রশিক্ষিত হয়ে গেছে তখন খোলাখুলিভাবে করছে। কিন্তু এই শিক্ষাটা তাঁদের দিয়েছে ব্রিটিশরা । ভদ্রসমাজে মদ্যপান থাকতেই হবে। এটাই ছিল ওদের প্রচারণা।

পরিচালকঃ কিন্তু ভারতীয় সমাজে তা ভারতীয়দের জন্য নিষিদ্ধ ছিল।

প্রভুপাদঃ ভারতীয় সমাজ। তাঁরা এমনকি চাও খেতে জানতো না। আমরা আমাদের শৈশবে দেখেছি ব্রিটিশরা চা বাগান শুরু করেছে ব্রিটিশদের আগে কোন চা উৎপাদন ছিল না ব্রিটিশরা দেখল যে এখানে শ্রমিক সস্তামূল্যে পাওয়া যাচ্ছে, আর ওরা ব্যবসা করতে চাইছিল, তাই শুরু করে দিল ঠিক যেমন ওরা আফ্রিকাতে করছে। ওখানে বহু চা, কফির বাগান চাষ হচ্ছে তাই ওরা শুরু করে দিল আর সেই চা আমেরিকাতে রপ্তানি করা হল ওরা ওখানে ছিল ব্যবসার জন্য এখন তো অনেক অনেক চা, এসব খাবে কে? সরকার চা উৎপাদন ও বিক্রির কমিটি বসিয়েছে সমস্ত চা বাগানের লোকেরা সরকারকে কর দেয় আর রাস্তায় রাস্তায় ওদের ব্যবসার কথা প্রচার চালাচ্ছে এইভাবে খুব মুখরোচক চা বানাচ্ছে এবং ওরা এটাই প্রচার করছিল যে যদি আপনি চা খাবেন তো খুব খিদে লাগবে না আপনার আপনার ম্যালেরিয়া চলে যাবে, এটা ওটা অনেক কিছু। আর লোকেরা তখন চা খেতে শুরু করল, "সুন্দর কাপ" আমি দেখেছি। ওরা এখন স্বাদ পেয়েছে এখন ধীরে ধীরে একটা রাস্তার ঝাড়ুদার পর্যন্ত খুব সকালে চায়ের দোকানে গিয়ে অপেক্ষা করছে এক কাপ চা খাওয়ার জন্য আমাদের ছোটবেলায় আমরা দেখেছি কখনও কখনও কেউ চা নিত, যদি সে কাশছে তো সেটাও অনেক পরে। কিন্তু তা লোকের অজানা ছিল চা পান, মদ পান, ধূমপান, মাংসাহার - এসব মানুষের কাছে জানা ছিল না বেশ্যাবৃত্তি। বেশ্যাবৃত্তি ছিল , কিন্তু এমন ছিল না যে সবাই এই বৃত্তি নিত খুব কঠিন ছিল।

তাই সব বিষয়গুলো ভাল করে দেখা উচিৎ - কমপক্ষে সমাজের একটা স্তরের মানুষ যেন তা করে, যাতে করে অন্যরা দেখতে পায় এবং সেই প্রশিক্ষণ অলতে থাকবে। যেমনটা আমরা এখন করছি আমরা লোকেদের আমাদের সঙ্গে এসে কীর্তন করতে বলছি, নাচতে বলছি, প্রসাদ পেতে ডাকছি। আর ধীরে ধীরে তাঁরা আসছে। সেই একই প্রবণতা মদ্যপানের প্রতি আসক্তি, বেশ্যাসক্তি, মাংসাহারের প্রতি আসক্তি সে ধীরে ধীরে সাধু হচ্ছে এটা বাস্তব। আপনি নিজেই দেখতে পারেন ওদের আগের ইতিহাস কি ছিল আর এখন ওরা কি হয়েছে।

পরিচালকঃ কিন্তু এই ব্যাপারটি আপনি কীভাবে দেখবেন যে ডাক্তাররা বলছে আমাদের দেহের প্রোটিন প্রয়োজনীয়তার জন্য মাংস খেতে হবে ?

প্রভুপাদঃ সেটা মূর্খতা। এরা সবাই গত দশ বছর ধরে মাংস খাচ্ছে না আপনার কি মনে হয় সে ওদের স্বাস্থ্য নেই? বরং লোকেরা বলে, "উজ্জ্বল মুখ" বোস্টনে... একজন পুরোহিত। আমি লস্‌এঞ্জেলস্‌ থেকে হাওয়াই যাচ্ছিলাম একজন ভদ্রলোক, পুরোহিতের পোশাক পরিধানে, তিনি বললেন, "স্বামীজী, আপনার ছেলেদের কীভাবে এতো উজ্জ্বল দেখাচ্ছে? মাঝে মধ্যে আমাদের "উজ্জ্বল মুখ" বলে প্রচার করা হয় বোস্টনে বা অন্য কোথাও আমাকে মহিলারা জিজ্ঞাসা করছিল, "আপনারা কি আমেরিকান?"