BN/Prabhupada 0880 - তুমি কৃষ্ণভাবনামৃত গ্রহণ করেছ কৃষ্ণকে বিরক্ত করতে নাকি আসলেই তুমি ঐকান্তিক



730412 - Lecture SB 01.08.20 - New York

প্রভুপাদঃ কৃষ্ণভাবনামৃতের শুরুতে মায়ার অনেক উৎপাত থাকবে মায়া তোমাকে পরীক্ষা করবে যে তুমি কতোটা দৃঢ় তিনি তোমাকে পরীক্ষা করবেন। তিনি কৃষ্ণের দ্বারা নিযুক্ত। যারা কৃষ্ণকে বিরক্ত করবে, তাদের তিনি কৃষ্ণের কাছে অনুমোদন করেন না। তাই তিনি তোমাকে খুব কঠোরভাবে পরীক্ষা করবেন যে তুমি এই কৃষ্ণভাবনামৃত গ্রহণ করেছ কৃষ্ণকে বিরক্ত করতে নাকি তুমি আসলেই ঐকান্তিক সেটাই মায়ার কাজ তাই শুরুতে মায়ার কাজ হবে তোমাকে পরীক্ষা করা এবং যদি তুমি কৃষ্ণভাবনামৃতে উন্নতি সাধন করতে অনেক বাধার সম্মুখীন হও কিন্তু তোমার অনুশীলনে অবিচল থাক... অবিচল মানে তুমি যদি নিয়মকানুন ঠিকঠাক পালন কর এবং ষোল মালা জপ কর তাহলে তুমি অবিচল থাকতে পারবে আর যদি তুমি অবহেলা কর, তাহলে মায়া তোমাকে তৎক্ষণাৎ গ্রাস করবে মায়া সর্বদা প্রস্তুত। আমরা সমুদ্রে পতিত। যে কোন মুহূর্তে আমরা বিরক্ত হতে পারি তাই যিনি এসবের দ্বারা আদৌ বিরক্ত হন না, তাঁকে বলা হয় পরমহংস

তাই কুন্তীদেবী বলেছেন, তথা পরমহংসানাম্‌ (ভাগবত ১/৮/২০) পরম মানে সর্বোত্তম। হংস মানে হাঁস। পরমহংস মানে নিখুঁত বা শ্রেষ্ঠ হংস। বলা হয়েছে যে যদি... হাঁস মানে এখানে রাজহাঁস যদি তুমি রাজহাঁসকে দুধ ও জল মিশিয়ে দাও সে দুধের ভাগটি গ্রহণ করবে এবং জলের অংশ ছেড়ে দেবে। তদ্রূপ, যিনি জানেন যে এই জড় জগতটি কি... জড় জগত দুটো উপাদানে তৈরি - অপরা প্রকৃতি এবং পরা প্রকৃতি পরা প্রকৃতি মানে পারমার্থিক জীবন এবং অপরা প্রকৃতি মানে জাগতিক জীবন তাই যে ব্যক্তি অপরা প্রকৃতির জাগতিক অংশটি ত্যাগ করেন এবং কেবল চিন্ময় অংশটি গ্রহণ করেন তিনিই পরম হংস পারমার্থিক অংশ মানে যিনি জানেন যে এই জগতে যাই কিছু ক্রিয়াশীল... ঠিক যেমন এই দেহ - তোমার দেহ, আমার দেহ। যিনি জানেন এই দেহের চলাচল কেবল দেহের ভেতরে স্থিত আত্মার কারণে হচ্ছে... সেটিই বাস্তব সত্যি। এটি কেবল বাইরের আবরণ মাত্র তেমনই যিনি জানেন যে কৃষ্ণই হলেন সমস্ত কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দু , তিনিই পরমহংস তিনি পরমহংস। তিনি সত্যটা জানেন

তাই ভক্তিযোগ হচ্ছে পরমহংসদের জন্য যিনি জানেন যে কৃষ্ণই সবকিছুর মূল সত্য অহমাদির্হি দেবানাম্‌ (গীতা ১০/২) মত্তঃ সর্বম্‌ প্রবর্ততে (গীতা ১০/৮) তাই যিনি জানেন যে কৃষ্ণই সমস্ত কারণের আদি কারণ তত্ত্বগতভাবেই কেবল নয়, ব্যবহারিকভাবে, পূর্ণরূপে উপলব্ধ, তিনিই পরমহংস তাই কুন্তীদেবী বলছেন "আপনি পরমহংসদের জন্য কোন মূর্খ বদমাশদের জন্য নন। আপনি পরমহংসদের জন্য"। তথা পরমহংসানাম্‌ মুনীনাম্‌ (ভাগবত ১/৮/২০) মুনীনাম্‌ মানে যারা চিন্তাশীল মানসিক জল্পনাকল্পনাকারীদেরও মুনি বলা হয় মুনীনাম্‌ অমলাত্মানাম্‌। অমল। তাঁদের হৃদয়ে কোন কলুষতা নেই। জাগতিক মানুষ মানে হৃদয় কলুষতা পূর্ণ সেই কলুষতা কি? কাম এবং লোভ। এটাই কলুষতা। সমস্ত জাগতিক লোক কামুক আর লোভী তাই তাদের চিত্ত সমস্ত কলুষতায় ভরা এবং অমলাত্মানাম্‌ মানে যারা এই দুই প্রকার কলুষ থেকে মুক্ত, কাম এবং...

ভক্তঃ লোভ।

প্রভুপাদঃ হুম্‌? লোভ। অমলাত্মানাম্‌। তাঁদের জন্য ভক্তিযোগ। এই ভক্তিযোগ হচ্ছে নির্মল হৃদয় ভক্তদের জন্য কামুক আর লোভীদের জন্য নয়। তারা চেষ্টা করতে পারে, তারা ক্রমে ক্রমে এগোবে। কিন্তু যিনি ভক্তিযোগে যুক্ত, তাঁর মধ্যে কোন কাম ও লোভ নেই। বিরক্তি অন্যত্র স্যাৎ। এই হচ্ছে পরীক্ষা যে কেউ কাম বাসনা এবং লোভ থেকে মুক্ত হতে পেরেছে কিনা। তাহলে তিনি ভক্তিযোগে স্থিত। তিনি পরমহংস।

তাই কুন্তীদেবী বিনয় সহকারে বলছেন, "আপনি পরমহংসদের জন্য উদ্দিষ্ট, অমলাত্মানাম্‌- দের জন্য, মুনীনাম্‌ - দের জন্য , যারা ভক্তিযোগে যুক্ত। আর আমরা কি? আমরা কেবল সাধারণ নারী মাত্র। আমরা নিম্ন স্তরে রয়েছি আমরা কি করে আপনাকে জানতে পারি?" এই হচ্ছে তাঁর বিনয়। যদিও তিনি সবকিছুই জানেন তবু তিনি একজন সাধারণ নারীর ভূমিকায় কথা বলছেন যে "আমি কীভাবে আপনাকে বুঝতে পারব?"

অনেক ধন্যবাদ। হরেকৃষ্ণ।

ভক্তবৃন্দঃ জয়। শ্রীল প্রভুপাদ কি জয়।