BN/Prabhupada 0885 - পারমার্থিক আনন্দ কখনও শেষ হয় না, তা বাড়তে থাকে



730413 - Lecture SB 01.08.21 - New York

একজন সৌভাগ্যবান ব্যক্তিই কেবল শ্রীকৃষ্ণ এবং তাঁর ভক্তদের সান্নিধ্যলাভের সুযোগ পান তখন তাঁর জীবন মহিমান্বিত হয়।

এই রূপে ব্রহ্মাণ্ড ভ্রমিতে কোন ভাগ্যবান জীব
গুরু কৃষ্ণ প্রসাদে পায় ভক্তিলতা বীজ
(চৈতন্য চরিতামৃত ১৯/১৫১)

এই ভক্তিলতা বীজ হচ্ছে হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ এবং কীর্তন

তাই কুন্তীদেবী উল্লেখ করছেন যে "এই ব্যক্তিটি কে, অলক্ষ্য, যাকে দেখা যায় না?" তিনি হলেন কৃষ্ণ "কৃষ্ণ? অনেক কৃষ্ণ আছে"? বাসুদেব, বসুদেবের পুত্র অনেক বাসুদেব আছেন"। না। নন্দ গোপায়, নন্দনায় (ভাগবত ১/৮/২১) পালক পিতা নন্দ মহারাজের পুত্র। তিনি তিন বার উল্লেখ করছেন , এই হচ্ছেন কৃষ্ণ"। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বসুদেব এবং দেবকীর পুত্র রূপে জন্মগ্রহণ করেছেন কিন্তু তাঁর শৈশবে তিনি নন্দ মহারাজ ও মা যশোদার সান্নিধ্য উপভোগ করেন এই হচ্ছে কৃষ্ণের লীলা।

আনন্দলীলাময় বিগ্রহায় আনন্দ লীলা। কৃষ্ণের লীলা আনন্দময় আনন্দলীলাময়। আনন্দময়োহভ্যাস্যাৎ (বেদান্ত সূত্র ১.১.১২) তিনি স্বভাবতই আনন্দময় তুমি কখনই কৃষ্ণকে অসুখী দেখবে না তিনি কখনই অসুখী নন। কৃষ্ণ সর্বদাই সুখী তাই নন্দগোপকুমারায় গোবিন্দায় (ভাগবত ১/৮/২১) তিনি সুখী এবং যেই তাঁর সাথে সঙ্গ করবে সেও সুখী হবে। গোবিন্দায়। আমরা ইন্দ্রিয়তৃপ্তির পেছনে পড়ে আছি। গো মানে ইন্দ্রিয় তাই যদি তুমি কৃষ্ণের সঙ্গ কর, তাহলে তুমি ব্যাপক ভাবে তোমার ইন্দ্রিয়ের তৃপ্তি করতে পারবে ঠিক যেমন গোপীরা কৃষ্ণের সাথে নৃত্য করছেন তাই তাঁদের ইন্দ্রিয় তৃপ্তির কোন অভাব নেই কিন্তু সেটি স্থূল ইন্দ্রিয় তৃপ্তি নয়। কারণ সেগুলি চিন্ময় ইন্দ্রিয়। দিব্য ইন্দ্রিয় আনন্দচিন্ময়সদুজ্জ্বল বিগ্রহস্য (ব্রহ্ম সংহিতা ৫/৩২) আমরা রোজ দিন জপ করি তখন যে ইন্দ্রিয় তৃপ্তি তা চিন্ময়, আনন্দ চিন্ময়। চিন্ময় জগতের এই দেহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তৃতীয় শ্রেণীর নিম্নরুচির আনন্দ নয় সেটি আনন্দ নয়। সেটি মোহ। মোহ। আমরা মনে করি যে "আমরা উপভোগ করছি", কিন্তু তা আনন্দ নয়। এই আনন্দ সত্য নয়, কারণ আমরা এই জগতে জড় ইন্দ্রিয়ের দ্বারা দীর্ঘ সময় আনন্দ করতে পারি না সকলেরই সেই অভিজ্ঞতা আছে। তা শেষ হয়ে যায়। শেষ। কিন্তু পারমার্থিক আনন্দ নিঃশেষ হয় না। তা বর্ধিত হতে থাকে। সেটাই পার্থক্য। আনন্দচিন্ময় সদুজ্জ্বল বিগ্রহস্য গোবিন্দম্‌ আদি পুরুষম্‌ (ব্রহ্মসংহিতা ৫/৩২)

তাই তোমাকে গোবিন্দের সাথে সঙ্গ করতে হবে এখানেও বলা হয়েছে, গোবিন্দায় নমো নমঃ "আমি গোবিন্দকে আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম নিবেদন করি" এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন এতোই চমৎকার যে তুমি তাৎক্ষণিকভাবে সরাসরি গোবিন্দের সংস্পর্শে আসতে পারবে শ্রীবিগ্রহের আরাধনাও সরাসরি গোবিন্দের স্পর্শে আসা শ্রীবিগ্রহারাধন নিত্য নানা শৃঙ্গারতন্মন্দির মার্জনাদৌ কৃষ্ণের শ্রীবিগ্রহ। তাও কৃষ্ণের কৃপা। যেহেতু কৃষ্ণ অলক্ষ্য, অদৃশ্য ; তাই তিনি তোমার সুবিধার জন্য দৃশ্যমান হন যাতে তুমি তাঁকে দেখতে পার এমন নয় যে কৃষ্ণ হচ্ছেন পাথর, বা কাঠ বা কৃষ্ণ হলেন ধাতু কৃষ্ণ সবসময়েই কৃষ্ণ। কিন্তু তিনি এমনভাবে আবির্ভূত হন... কারণ তুমি কাঠ, পাথর বা ধাতু ছাড়া কিন্তুই দেখতে পাও না। তাই তিনি কাঠ, পাথর বা ধাতু রূপে আসেন কিন্তু তিনি কাঠ, পাথর বা ধাতু নন যক্ষণ তুমি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সঙ্গ পাবে, তখন তাঁর সঙ্গে সঙ্গ করতে পারবে কিন্তু বর্তমানে যেহেতু কৃষ্ণ অদৃশ্য, তাই তিনি অত্যন্ত দয়া করে এমন একটি রূপ নিয়েছেন যাতে তুমি তাঁকে দেখতে পার। সেটিই কৃষ্ণের কৃপা এমন ভেব না যে, "ওহ্‌ আরে এই তো কৃষ্ণ, পাথরের কৃষ্ণ"। কৃষ্ণ সবকিছুই তিনি সবকিছুই। তাই কৃষ্ণ পাথরও । কিন্তু তিনি সেই পাথর নয় যা কোন কাজ করতে পারে না কৃষ্ণ পাথর রূপেও কাজ করতে পারেন। কৃষ্ণ ধাতুর রূপের মাধ্যমেও কাজ করতে পারেন এবং তুমি তা বুঝবে। স্বয়মেব স্ফুরত্যদঃ তুমি যতই সেবা করবে, সেই তথাকথিত পাথর তোমার সাথে কথা বলবে , এইরকম অনেক উদাহরণ আছে