BN/Prabhupada 0899 - ভগবান মানে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা না। ভগবান হলেন এক। কেউ তাঁর থেকে মহত্তর নয়



730415 - Lecture SB 01.08.23 - Los Angeles

অনুবাদঃ "হে সমস্ত ইন্দ্রিয়াধিপতি হৃষীকেশ, দীর্ঘকাল ঈর্ষাপরায়ণ কংসের দ্বারা কারারুদ্ধ তোমার মাতা দেবকীকে তুমি মুক্ত করেছিলে, তেমনই তুমি আমাকে এবং আমার পুত্রদেরকে বারেবারে বিপদরাশি থেকে মুক্ত করেছ।"

প্রভুপাদঃ এই হচ্ছে একজন ভক্তের অবস্থান, দেবকী, যিনি ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের মাতা... তিনি কোন সাধারণ মহিলা ছিলেন না। কে ভগবানের মাতা হতে পারে? সবচ্যে উন্নত ভক্ত ছিলেন যার কারণে তিনি ভগবানের মা হতে পেরেছিলেন। পূর্বজন্মে পতি এবং পত্নী তাঁরা কঠোর সাধনা করেছিলেন এবং যখন কৃষ্ণ তাঁদের সম্মুখে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং তাঁদের বর প্রদান করতে চেয়েছিলেন, তাঁরা ভগবানের মতো একটি পুত্র পেতে চেয়েছিলেন। তাই ভগবানের মতো আর কে হতে পারেন? তা সম্ভব না। ভগবান মানে তাঁর সমকক্ষ কেউই নয়। তাঁর থেকেও বড়ও কেউ নেই। অসমোর্ধ্ব। তিনিই ভগবান। ভগবানের সাথে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই যে "তুমি ভগবান, আমিও ভগবান, তিনি ভগবান, সেও ভগবান।" না। এগুলো হচ্ছে কুকুর। ওরা ভগবান নয়। ভগবান মানে যার কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। এক, ভগবান হলেন এক। কেউই তাঁর থেকে মহত্ত্বর নয়। অসমোর্ধ্ব। কেউ তাঁর থেকে বড় নয়। কেউই তাঁর সমকক্ষও নয়। সবাই তাঁর নীচে। একলে ঈশ্বর কৃষ্ণ আর সব ভৃত্য (চৈতন্য চরিতামৃত আদি ৫/১৪২) একমাত্র প্রভু শ্রীকৃষ্ণ, ভগবান। আর সকলেই তাঁর দাস। এমনকি ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব, বড় বড় দেবতারাও পর্যন্ত। আর অন্যদের আর কি কথা?

শিববিরঞ্চিনুতম্‌ (ভাগবত ১১/৫/৩৩) শাস্ত্রে বলা হয়েছে, ব্রহ্মা ও শিবও তাঁকে সমস্কার করেন। তাঁরা সর্বোচ্চ দেবতা। তাঁরা দেবতা। মানুষের চেয়ে ঊর্ধ্বে। দেবতা। ঠিক যেমন আমরা নিম্নতর পশু যোনির মধ্যে মানুষ, তেমনই তাঁরা আমাদের ওপরে দেবতা। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেবতা হচ্ছেন ব্রহ্মা ও শিব ব্রহ্মা এই জগতের সৃষ্টিকর্তা এবং শিব হলেন এই জগতের ধ্বংসকর্তা। আর ভগবান বিষ্ণু পালনকর্তা। ভগবান বিষ্ণু এবং কৃষ্ণ অভিন্ন। এই জরজগতের পরিচালনার জন্য তিনটি গুণ আছে, সত্ত্ব, রজো ও তম গুণ তাঁরা প্রত্যেকেই এক একটা গুণের দায়িত্ব নিয়েছেন ভগবান বিষ্ণু তিনি সত্ত্বগুণের দায়িত্ব নিয়েছেন ব্রহ্মাজী রজোগুণের দায়িত্ব এবং শিবজী তমগুণের বিভাগ দেখছেন। তাঁরা এই ত্রিগুণের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নন। ঠিক যেমন একজন কারারক্ষক তিনি কারাবন্দী নন, তিনি নিয়ন্ত্রণকারী কার্যকর্তা তেমনই, শিবজী, ভগবান বিষ্ণু এবং ব্রহ্মাজী যদিও তাঁরা এই তিন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করছেন তাঁরা এই তিন বিভাগের অধীনস্থ নন। আমাদের এটা ভেবে ভুল করা উচিৎ নয়

ভগবান হৃষীকেশ, কৃষ্ণ হচ্ছেন সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। হৃষীকেশ। হৃষীক মানে ইন্দ্রিয় আমরা আমাদের ইন্দ্রিয় তৃপ্তি করছি, কিন্তু আসলে এসবের নিয়ন্ত্রক হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ যেমন এটা আমার হাত। আমি দাবী করছি এটা আমার হাত "আমি তোমাকে আচ্ছা করে একটা ঘুষি লাগাব..." এইভাবে আমি গর্ব করতে পারি কিন্তু আমি নিয়ন্ত্রক নই। নিয়ন্ত্রক হলেন শ্রীকৃষ্ণ। যদি তিনি তোমার বাহুর শক্তি তুলে নেন, তুমি অবশ হয়ে পড়বে। যদিও তুমি দাবী করছ "এটা আমার হাত। আমি এটা ব্যবহার করব"। কিন্তু যখন এটি অবশ, পক্ষাঘাতগ্রস্ত, তুমি কিছুই করতে পারবে না। তাই হয়ত শ্রীকৃষ্ণের কৃপায় আমি এই হাত পেয়েছি কিন্তু আমি এর নিয়ন্ত্রক নই। সেটি বোঝা হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত এর জন্য একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তি চিন্তা করেন যে, যদি হাতগুলো চরমের কৃষ্ণের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয় তাহলে এই হাতগুলো কৃষ্ণের সেবাই জন্যই উদ্দিষ্ট। এটা সাধারণ জ্ঞান।