BN/Prabhupada 0928 - শ্রীকৃষ্ণের প্রতি তোমার অবিমিশ্র ভক্তি কেবল বাড়াও। সেটিই জীবনের সার্থকতা



730423 - Lecture SB 01.08.31 - Los Angeles

প্রভুপাদঃ মনে তুমি তা করতে পার, আমরা জানি মনের গতি কেমন এমনকি এক সেকেন্ডের দশ ভাগের এক ভাগ সময়েও তুমি লক্ষ লক্ষ মাইল দূরে চলে যেতে পার মনের গতিবেগ। মন এতোই দ্রুতগামী তুমি এখানে বসে আছ, ধর তুমি একটা কিছু দেখেছ লক্ষ লক্ষ মাইল দূরের কিছু একটা তৎক্ষণাৎ তোমার মন সেখানে চলে যেতে পারে তাই এই দুটি উদাহরণ দেয়া হয়েছে। দেখ তাঁরা কত বৈজ্ঞানিক ছিলেন। মূর্খেরা বলে তখনকার দিনে কোন উন্নত মন বা উন্নত বিজ্ঞানী ছিল না। তাহলে এইসব কথা কোথা থেকে আসছে? বায়ুর বেগ, মনের বেগ, যদি না তাঁদের কোন অভিজ্ঞতা থাকে, বা জ্ঞান থাকে। এই সমস্ত গ্রন্থগুলি কেন, কীভাবে লেখা হল?

তাই পন্থাস্তু কোটিশত বৎসর সংপ্রগম্যো বায়োরথাপি মনসঃ (ব্রহ্মসংহিতা ৫/৩৪) এর এতো দ্রুতগামী বিমান কীভাবে তৈরি হত? মুনি পুঙ্গবানাম্‌। মহান বিজ্ঞানী এবং চিন্তাশীল মানুষদের দ্বারা। তাঁদের দ্বারা তৈরি। সেটাই কি পূর্ণ সিদ্ধি? না। সোহপ্যস্তি যৎ প্রপদসীম্ন্য অবিচিন্ত্য তত্ত্বে তারপরও এই সৃষ্টি তোমার কাছে অচিন্ত্যই থেকে যাবে যদি তুমি আরও উন্নত হও যে তুমি সেই বেগেও যেতেও পার, এবং তুমি বিশাল বিজ্ঞানী বা চিন্তাশীল দার্শনিক হও তারপরেও তুমি সেই একই অবস্থাতেই থাকবে। অজ্ঞাত।

তাই আমরা কীভাবে কৃষ্ণকে নিয়ে গবেষণা করতে পারি? শ্রীকৃষ্ণ এই সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। যদি তুমি তাঁর সৃষ্ট বস্তুকেই না বুঝতে পার, তুমি কীভাবে তাঁকে বুঝবে? তা আদৌ সম্ভব নয়। সম্ভব না। তাই মনের এই বৃন্দাবন স্থিতিটাই ভক্তদের জন্য পরম সিদ্ধি, তাঁদের কৃষ্ণকে জানার কোন কাজ নেই। তাঁরা কৃষ্ণকে কেবল ভালবাসতে চায়, কোন শর্ত ছাড়াই। "কারণ কৃষ্ণ ভগবান, তাই আমি তাঁকে ভালবাসব..." তাঁদের মনোবৃত্তি এই রকম নয়। কৃষ্ণ বৃন্দাবনে নিজেকে ভগবান বলে দেখাচ্ছেন না। সেখানে তিনি একজন সাধারণ গোপবালক রূপে খেলা করেছেন কিন্তু দরকার পড়লে তিনি নিজেকে পরমেশ্বর ভগবান হিসেবেও প্রমাণ করেছেন। কিন্তু তাঁরা তা জানতে মাথা ঘামান না বৃন্দাবনের বাইরে...

ঠিক যেমন কুন্তিদেবীর মতো কুন্তীদেবী বৃন্দাবনের বাসিন্দা নন তিনি হস্তিনাপুরের বাসিন্দা, বৃন্দাবনের বাইরের বৃন্দাবনের বাইরের ভক্তরা তাঁরা দেখছেন যে বৃন্দাবনের অধিবাসীরা কতোই না মহান কিন্তু কৃষ্ণ কতো মহান তা জানতে বৃন্দাবনবাসীরা মাথা ঘামান না সেটিই হচ্ছে পার্থক্য। তাই আমাদের কাজ হচ্ছে কেবল ভগবানকে ভালবাসা। তুমি যতই কৃষ্ণকে ভালবাসবে, ততই তুমি পূর্ণতা পাবে। কীভাবে সবকিছু সৃষ্টি হয়েছে সেসব জানা খুব একটা জরুরী না তাঁকে ভালবাসার জন্য। সেইসব কথা বর্ণনা করা আছে, ভগবদ্গীতাতে কৃষ্ণ নিজেই তা বলেছেন কৃষ্ণকে জানতে খুব একটা মাথা ঘামাবার কিছু নেই। তা সম্ভব নয়। কেবল তাঁর প্রতি তোমার শুদ্ধ ভালবাসাকে বৃদ্ধি কর। সেটিই জীবনের পরম সিদ্ধি।

অনেক ধন্যবাদ।

ভক্তগণঃ হরে কৃষ্ণ, জয়!