BN/Prabhupada 0934 - আত্মার প্রয়োজনের প্রতি যত্নশীল না হওয়া, এটা হচ্ছে মূর্খদের সভ্যতা



Lecture on SB 1.8.33 -- Los Angeles, April 25, 1972

আত্মার প্রয়োজনের প্রতি যত্নশীল না হওয়া, এটা হচ্ছে মূর্খদের সভ্যতা ভক্তবৃন্দঃ অনুবাদঃ "অন্য কেউ কেউ বলেন যে বসুদেব এবং দেবকী তোমার কাছে প্রার্থনা করায়, তুমি তাঁদের পুত্ররূপে জন্মগ্রহণ করেছ, নিঃসন্দেহে তুমি প্রাকৃত জন্মরহিত, তথাপি তুমি তাঁদের মঙ্গল সাধনের জন্য এবং দেববিদ্বেষী অসুরদের সংহার করার জন্য জন্মগ্রহণ করেছ।"

প্রভুপাদঃ এখানে অবতারের দুটি উদ্দেশ্য রয়েছে। এটি ভগবদ্গীতায় বর্ণনা করা হয়েছে।

যদা যদা হি ধর্মস্য
গ্লানির্ভবতি ভারত।
অভ্যুত্থানধর্মস্য
তদাত্মানং সৃজাম্যহম্‌
(ভগবদ্গীতা ৪.৭)।

ভগবান বলছেন যে যখনই অনিয়ম, ধর্মস্য, ধর্মের নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়... গ্লানি। গ্লানি মানে নিয়ন লঙ্ঘন। যেমন ধর তুমি কোন কার্য সম্পাদন করছ। সেখানে কিছু অনিয়ম হতে পারে। তখন এটি দূষিত হয়ে যায়। তাই যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত... ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত মানে অধর্মের উন্নয়ন ঘটে। এর মানে, যদি তোমার সম্পদ কমে যায়, তাহলে তোমার দারিদ্র্য বৃদ্ধি পাবে, সমানুপাতিক। যদি তুমি এইদিকে বৃদ্ধি কর, তাহলে অন্যদিক কমে যাবে, আর যদি অন্যদিক বৃদ্ধি কর, তাহলে এদিক কমে যাবে... কিন্তু তোমাকে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। এটিই প্রয়োজন।

মানব সমাজের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারসাম্য বজায় রাখা। এই ভারসাম্যটা কি? তারা এটি জানে না যে... এটি ঠিক দাঁড়িপাল্লার মত। এক দিক চিন্ময়, অন্যদিক জড়। প্রকৃতপক্ষে আমরা চিন্ময় আত্মা। যে কোন ভাবেই হোক আমরা এই জড় দেহের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়েছি। এই উদ্দেশ্যে, যতদিন ধরে আমাদের এই জড় দেহ আছে, আমাদের এই দেহের প্রয়োজনও থাকবে, খাওয়া, ঘুমানো, মৈথুন, প্রতিরক্ষা। এগুলো হচ্ছে দেহের প্রয়োজন। আত্মার এগুলো প্রয়োজন হয় না। আত্মার খাওয়ার কিছু নেই। এটা আমরা জানি না। আমরা যাই খাই, সেটা হচ্ছে এই দেহকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। তো এখানে দেহের প্রয়োজন গুলো রয়েছে, কিন্তু তুমি যদি শুধু দেহের প্রয়োজনগুলোই দেখ আত্মার প্রয়োজনগুলোর প্রতি মনোযোগ না দাও, তাহলে এটা মূর্খদের সভ্যতা। কোন ভারসাম্য নেই। তারা এটা জানে না।

ঠিক যেমন একটি বদমাশ... সে শুধু তার জামাটিই পরিষ্কার করছে, কিন্তু দেহের কোন যত্ন নিচ্ছে না। অথবা খাঁচার ভিতরে একটি পাখি রয়েছে আর তুমি শুধু খাঁচাটার যত্ন নিচ্ছ। কিন্তু খাঁচার ভিতর পাখিটার কোন যত্ন নিচ্ছ না... পাখিটি কাঁদছেঃ 'কা কা। আমাকে খেতে দাও, আমাকে খেতে দাও।" কিন্তু তুমি খাঁচার যত্ন করছ। এটি মূর্খতা। সুতরাং কেন আমরা অসুখী? কেন, বিশেষ করে তোমাদের দেশে... তোমরা বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ হওয়ার কথা। তোমাদের কোন ঘাটতি বা অভাব নেই। খাদ্যের অভাব নেই, মোটর গাড়ির অভাব নেই, ব্যাংক ব্যালেন্সের অভাব নেই, যৌনতার অভাব নেই। এখানে সবকিছুই পরিপূর্ণরূপে রয়েছে। কিন্তু তবুও কেন জনসংখ্যার একটি অংশ হিপ্পিদের মতো হতাশাগ্রস্থ আর বিভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছে? তারা সন্তুষ্ট নয়। কেন? এখানটাতেই ভুল। কারণ এখানে কোন ভারসাম্য নেই। আমারা জীবনের দেহগত প্রয়োজনগুলোর যত্ন নিচ্ছি, কিন্তু আত্মা সম্বন্ধে কোন তথ্য আমাদের জানা নেই। আত্মারও কিছু প্রয়োজন রয়েছে। কারণ আত্মা হচ্ছে প্রকৃত বিষয়বস্তু। দেহটা হচ্ছে আবরণ মাত্র।