BN/Prabhupada 0950 - আমাদের প্রতিবেশীরা হয়তো অনাহারে আছে, কিন্তু আমরা সেগুলি পরোয়াও করছি না



720902 - Lecture Festival Sri Vyasa-puja - New Vrindaban, USA

আমাদের প্রতিবেশীরা অভুক্ত থাকলেও আমাদের কিছু যায় আসে না। ভদ্র মহোদয় এবং মহোদয়াগণ, এই অনুষ্ঠানটি... অবশ্য, যারা আমার শিষ্য তারা জানে, এই অনুষ্ঠানটি কি। যারা দর্শনার্থীরা এখানে এসেছেন তাদের অবগতির জন্য, আমি এই অনুষ্ঠান সম্পর্কে কিছু বলতে পারি। নয়তো আপনারা এটাকে ভুল বুঝতে পারেন। একজন বহিরাগত একে এভাবে দেখতে পারেন যে "কেন একজন ব্যাক্তি কে ভগবানের মতো পূজা করা হচ্ছে?' কিছু সন্দেহ থাকতে পারে। তবে এটাই হচ্ছে শিষ্টাচার. এই অনুষ্ঠানকে ব্যাস পূজা বলা হয়। ব্যাস। ব্যাস হচ্ছেন যিনি বৈদিক সাহিত্যের আদি লেখক। তিনি ভগবান নারায়ণের অবতার। তিনি আমাদের সমস্ত বৈদিক জ্ঞান দান করেন। এই জ্ঞান তিনি নারদ মুনির কাছ থেকে প্রাপ্ত হয়েছিলেন। নারদ মুনি সেই জ্ঞান ব্রহ্মার থেকে পেয়েছিলেন। ব্রহ্মা সেই জ্ঞান পেয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কাছ থেকে। এইভাবে গুরু শিষ্য পরম্পরার ধারায় আমরা দিব্য জ্ঞান লাভ করি।

সুতরাং ব্যাসদেব ... পূর্বে, ব্যাসদেবের আগে ধর, পাঁচ হাজার বছর আগে, আগেকার দিনে লিখিত সাহিত্যের কোন প্রয়োজন ছিল না। মানুষের মেধা এতই উন্নত ছিল যে তাঁরা তাঁদের গুরুদেবের কাছ থেকে যা শুনতেন তা তাঁরা সারাজীবন মনে রাখতে পারতেন। মেধা এতোটাই তীক্ষ্ণ ছিল। কিন্তু এই যুগে- একে বলা হয় কলি যুগ- আমাদের শারীরিক শক্তি, মেধা, স্মরণ শক্তি , অন্যের প্রতি আমাদের সহানুভুতি, করুণা, বয়স, আয়ু, আধ্যাত্মিক প্রবণতা সব কমে আসছে । এইভাবে, এই যুগে সবকিছু হ্রাস পাচ্ছে। তোমরা প্রত্যেকে এটা খুব সহজেই বুঝতে পারবে। আগে যদি কোন মানুষকে কেও আক্রমণ করত, তখন অনেক মানুষ তাকে সাহায্য করতে ছুটে আসতো, "কেন একে আক্রমণ করা হয়েছে? কিন্তু এখনকার সময় যদি কোন মানুষকে আক্রমণ করা হয়, আশে পাশের কেও তার জন্য ছুটে আসে না, কারণ তাঁরা তাঁদের সহানুভূতি এবং করুণা হারিয়ে ফেলেছে। আমাদের প্রতিবেশী অনাহারে থাকলেও আমাদের কিছু যায় আসে না। কিন্তু আগে অন্য প্রাণীদের জন্য সহানুভূতি ছিল, এমনকি একটি পিঁপড়ের জন্যও... ঠিক যেমন মহারাজ পরিক্ষিত, যখন তিনি তার রাজ্যে ভ্রমণ করছিলেন, তিনি দেখলেন যে একজন ব্যক্তি একটি গাভীকে হত্যা করতে চেষ্টা করছে। পরীক্ষিত মহারাজ এটা দেখে তৎক্ষণাৎ তাঁর তরবারি বার করলেন "কে তুমি? তুমি আমার রাজ্যে গো হত্যা করছ কেন? কারণ দেশের রাজা অথবা সরকারের উচিৎ রাজ্যের সকলকে রক্ষা করা, এমন নয় যে, সরকার শুধু জনগণকেই রক্ষা করবে প্রাণীদের নয়। কিন্তু এটা কলি যুগ, সরকার দুই জাতির মধ্যে ভেদাভেদ করছে। জাতি বলতে বুঝায় যে এই ভূমিতে জন্মগ্রহণ করেছে। তোমরা প্রত্যেকেই তা জান। সুতরাং গাছ, তারাও এই ভূমিতে জন্মগ্রহণ করেছে, জলজ প্রাণীদেরও জন্ম হয়েছে এই ভূমিতে। মাছি, সরীসৃপ, সাপ, পাখি, জন্তু, মানুষ — প্রত্যেকেই এই ভূমিতে জন্মগ্রহণ করেছে। মনে কর, তোমাদের দেশে, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র... কেন সরকার শুধু এক শ্রেণীর জীবদের সুরক্ষা দেবে, অন্যদের অবজ্ঞা করে? তার মানে তারা অন্যদের প্রতি সহানুভূতি হারিয়ে ফেলেছে। এটি কলি-যুগ। আগে, কলি যুগের পূর্বে, অযথা কোন পিঁপড়েও মারা হত না। এমনকি একটি পিঁপড়েও। এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে যে একটি শিকারি যে কিনা প্রাণী হত্যা করত, কিন্তু সে যখন ভক্ত হয়ে গেল তখন একটি পিঁপড়েকেও মারতে প্রস্তুত ছিল না।