BN/Prabhupada 0981 - পূর্বে প্রত্যেক ব্রাহ্মণেরা এই দুই বিজ্ঞান শিখতেন, আয়ুর্বেদ এবং জ্যোতির্বেদ



Lecture on SB 1.2.6 -- New Vrindaban, September 5, 1972

বহিরর্থ (ভাগবত ৭.৫.৩১), বহিঃ মানে বাহ্যিক, অর্থ মানে স্বার্থ। যারা জানে না যে তাদের অন্তিম আনন্দের লক্ষ্য হচ্ছে বিষ্ণু, তারা মনে করে যে বাহ্যিক জগতের সাথে মানিয়ে নিয়ে... কারণ আমাদের বাহ্যিক এবং আভ্যন্তরীণ জগত আছে। বাহ্যিকভাবে আমরা এই দেহ। আভ্যন্তরীণভাবে আমরা আত্মা। সবাই বুঝতে পারে যে আমি এই দেহ নই, আমি চিন্ময় আত্মা। আমি এই দেহের দ্বারা আচ্ছাদিত হয়ে আছি এবং যখনই আমি এই দেহ থেকে দূরে চলে যাব, এই দেহের কোন মূল্য নেই। এটি কোন উন্নত আত্মার দেহ হতে পারে, একজন মহান বিজ্ঞানীর দেহ, কিন্তু দেহটি বিজ্ঞানী নয়, আত্মাটি বিজ্ঞানী। দেহটি একটি উপকরণ। ঠিক যেমন যদি আমি কিছু ধরতে চাই, তখন হাতটি আমার উপকরণ। তাই সংস্কৃত ভাষায়, দেহের বিভিন্ন অঙ্গ, বাহু, তাদের বলা হয় কারণ। কারণ অর্থ ক্রিয়া, অভিনয়, যার দ্বারা আমরা অভিনয় করি, কারণ। তাই, ন তে বিদুঃ স্বার্থগতিং হি বিষ্ণুং (ভাগবত ৭.৫.৩১)। আমরা এখন দেহগত চেতনার দ্বারা মোহাচ্ছন্ন হয়ে আছি। সেটাও শ্রীমদ্ভা‌গবতে বর্ণিত আছে, যস্যাত্মবুদ্ধিঃ কুণপে ত্রিধাতুকে (ভাগবত ১০.৮৪.১৩) আত্ম-বুদ্ধি কুণপে, কুণপে মানে ব্যাগ। এটি অস্থি, মাংস, চামরা এবং রক্তের একটি থলি। আসলে আমরা যখন এই দেহটি বিচ্ছিন্ন করি তখন আমরা কী খুঁজে পাই? একগুচ্ছ অস্থি, চামড়া, রক্ত, অন্ত্র এবং পুঁজ, আর কিছুই নয়।

তাই কুণপে ত্রিধাতুকে... এই জিনিসগুলো তিনটি ধাতুর দ্বারা তৈরি, কফ, পিত্ত, বায়ু। কফ শ্লেষ্মা, পিত্ত এবং বায়ু। এই জিনিসগুলো তৈরি হচ্ছে। এসবই চলছে। খাওয়ার পরে, এই তিনটি জিনিস উৎপাদিত হচ্ছে, এবং যদি এগুলোর সামঞ্জস্য থাকে, ভারসাম্য থাকে, তবে শরীর সুস্থ থাকে, যদি কিছু কম বেশি হয়, তখন শরীরে রোগ হয়। সুতরাং, আয়ুর্বেদ অনুসারে - এটিও বেদ ...আয়ুঃ মানে জীবনকাল, এবং বেদ মানে জ্ঞান। একে আয়ুর্বেদ বলা হয়। জীবনকাল সম্পর্কে এই বৈদিক জ্ঞানটি খুব সাধারণ। কোন প্যাথলজিক গবেষণাগার, ক্লিনিক এগুলোর কোন প্রয়োজন নেই। কেবল এই তিনটি উপাদান কফ, পিত্ত, বায়ু সম্পর্কে অধ্যয়ন করা দরকার। এবং তাদের বিজ্ঞান হচ্ছে কেবল নাড়ি অনুভব করা। তোমরা সকলে জান যে, নাড়িটি চলছে, টিক, টিক, টিক, টিক,এই ভাবে। তারা বিজ্ঞানটি বুঝতে পারেঃ নাড়ির স্পন্দন অনুভব করে, তারা এই তিন বস্তু কফ, পিত্ত, বায়ুর অবস্থান বুঝতে পারে। এবং সেই অবস্থান, তারামণ্ডলীর অবস্থান দ্বারা তারা ... আয়ুর্বেদ, শাস্ত্র বেদে, লক্ষণগুলি রয়েছে... এই শিরাগুলি এভাবে চলছে, হৃদয় এইভাবে চলছে, এইভাবে স্পন্দন করে: তারপরে অবস্থানটি এই । তারা অবস্থানটি বুঝতে পারার সাথে সাথেই লক্ষণগুলি যাচাই করে। তারা রোগীর কাছে জিজ্ঞাসা করে, " আপনি কি এমন অনুভব করছেন? আপনি কি তেমন অনুভব করছেন?" যদি তিনি হ্যাঁ বলেন, তখন এটি নিশ্চিত। আভ্যন্তরীণ জিনিসগুলো, কীভাবে নাড়ির স্পন্দন হচ্ছে, এবং লক্ষণগুলো নিশ্চিত হলে, তখন ঔষধ তৈরি করা যাবে। সাথে সাথে ঔষধ গ্রহণ কর। খুব সাধারণ। পূর্বে প্রতেক ব্রাহ্মণেরা এই দুই বিজ্ঞান শিখতেন, আয়ুর্বেদ এবং জ্যোতির্বেদ। জ্যোতির্বেদ মানে জ্যোতির্বিজ্ঞান। জ্যোতিষশাস্ত্র, জ্যোতির্বিজ্ঞান নয়। কারণ অন্যরা যারা ব্রাহ্মণদের থেকে অল্প বুদ্ধিসম্পন্ন, ক্ষত্রিয়রা, বৈশ্যরা, শুদ্ররা, তাদের ব্রাহ্মণদের প্রয়োজন ছিল স্বাস্থ্য এবং ভবিষ্যতের জন্য। ভবিষ্যত কি, ভবিষ্যতে কি ঘটতে চলেছে তা জানতে সকলেই খুব আগ্রহী, এবং সবাই স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন। তাই ব্রাহ্মণরা, তারা কেবল স্বাস্থ্য এবং ভবিষ্যতের বিষয়ে পরামর্শ দিতেন, এটাই তাদের পেশা ছিল এবং লোকেরা তাদের খাদ্য, বস্ত্র দান করতেন, তাই তাদের বাইরে গিয়ে কিছু করার হত না। যাইহোক এটি একটি লম্বা কাহিনী। এই দেহটি তিনটি উপাদান দ্বারা তৈরি, যস্যাত্মবুদ্ধিঃ কুণপে ত্রিধাতুকে (ভাগবত ১০.৮৪.১৩)