BN/Prabhupada 0987 - মনে করো না যে ভগবৎ ভাবনাময় হলে তুমি অনাহারে থাকবে।তুমি কোনদিনও অনাহারে থাকবে না



720905 - Lecture SB 01.02.07 - New Vrindaban, USA

এখন ভগবান এই ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেছেন। ভগবান মহাজাগতিক সৃষ্টি করেছেন, অসংখ্য মহাবিশ্ব তৈরি করেছেন, কিন্তু তিনি এতে আগ্রহী নন। আবার তিনি আগ্রহী, তিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি আমাদের এখানে থাকার সুযোগ দিয়েছেন কিন্তু তিনি এখানে উপভোগ করতে আসছেন না। তিনি আরও ভাল কিছু পেয়েছেন। অথবা তিনি এই প্রতিকূলতাগুলোর পরোয়া করেন না। সেটা ভগাবানের আর একটি গুণ। এই মনুষ্য জন্মের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভগবানকে জানা, বৈজ্ঞানিকভাবে সম্পূর্ণ জ্ঞানের সাথে জানা। এটি শ্রীমদভাগবতমে বর্ণনা করা আছে। তাই আমরা এই ভাগবত উপদেশ প্রচার করছি। শ্রীমদ্‌-ভাগবতমের শুরুতে ভগবানের প্রকৃতি কী? জন্মাদ্যস্য যতোহন্বয়াদিতরতশ্চার্থেষ্বভিজ্ঞঃ স্বরাট্‌ (ভাগবত ১.১.১) ভগবান...ভগবান জ্ঞানবান, তিনি সব জানেন। তিনি একজন সচেতন ব্যক্তি। তিনি মৃত পাথর নন। যদি ভগবান সচেতন না হন, যদি তিনি কোন ব্যক্তি না হন, এতো শক্তিমান ব্যক্তি, সচেতন ব্যক্তি তাঁর কাছ থেকে আসছেন কীভাবে? বাবা যদি বুদ্ধিমান না হন তবে পুত্র-কন্যারা কীভাবে বুদ্ধিমান হতে পারে? একটি কুকুর কোনও বুদ্ধিমান ব্যক্তিকে জন্ম দিতে পারে না, যে ব্যক্তি বুদ্ধিমান, সে বুদ্ধিমান সন্তান জন্ম দিতে পারে। এটি আমাদের ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা। সুতরাং ভগবানের এই বিবরণ, ঐশ্বর্য সমগ্রস্য বীর্যস্য যশস্ব শ্রীঃ। আমাদের বুঝতে চেষ্টা করতে হবে ভগবান কি। যদি আপনি এমন কোনও ব্যক্তির সন্ধান করতে পারেন যিনি সবকিছুর চেয়ে শ্রেষ্ঠ, ঐশ্বর্যে, বীর্যে, সৌন্দর্যে, যশে, জ্ঞানে, বৈরাগ্যে, তিনি ভগবান। কোন চতুর্থ শ্রেণীর ব্যক্তি কে ভগবান বলে মনে কর না। যদি তুমি বুদ্ধিমান হও, ভগবানের অর্থ কি তা বোঝার চেষ্টা কর...বুঝতে চেষ্টা কর। এখানে শ্রীমদ্‌ভাগবতমে বলা হয়েছে যে এটি প্রথম শ্রেণীর ধর্ম। এটা কি? যা অনুগামীদের কীভাবে ভগবানকে ভালবাসতে হবে তার সুযোগ দেয়। আমাদের কেন করা উচিত নয়? ভগবান যদি মহান হন, আমাদের পিতা যদি মহান হন তবে আমরা কেন ভালবাসব না? আমরা এখানে অনেককে তোষামোদ করি ... আমরা বলতে পারি কারও যদি কয়েক মিলিয়ন ডলার থাকে, আমরা তাকে তোষামোদ করি, এবং যিনি সবথেকে ধনী, আমরা কেন তাকে ভালবাসব না?কেন? এর কারণ কি? প্রকৃতপক্ষে তিনি সবকিছু সরবরাহ করছেন, একো বহুনাম্‌ বিদধাতি কামাম। তিনি সমস্ত জীবকে জীবনের সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করছেন, পিঁপড়ে থেকে শুরু করে হাতি পর্যন্ত। তাহলে আমাদের কেন নয়? আমরা আমাদের সম্পূর্ণ জীবন ভগবানের সেবায় উৎসর্গ করেছি, তাহলে ভগবান যদি পিঁপড়েকে, হাতিকে খাবার দেন, আমাদের কেন দেবেন না? মনে করো না যে ভগবৎ ভাবনাময় হলে তুমি অনাহারে থাকবে। তুমি কোনদিনও অনাহারে থাকবে না। তুমি তোমার কর্ম করে যাও, ভগবানকে ভালবাস এবং ভগবৎ প্রেম প্রচার কর। তুমি সবসময় সমৃদ্ধশালী থাকবে, নিশ্চিত থাক। একজন সাধারণ মানুষ, তুমি যদি তার জন্য কাজ কর তবে সে তোমাকে বেতন দেয়, ভাল বেতন দেয়। এবং আমরা ভগবানের জন্য কাজ করছি, আমরা সবাই কি বেতন পাই না? সেটা কেমন হয়? (হাসি) আমরা অবশ্যই পাব। যদি তুমি সত্যি ভগবানের প্রেমিক হও, ভগবানের সেবক হও, তোমার অর্থনৈতিক অবস্থার কথা চিন্তা কর না। তোমাকে তিনি দেখবেন। ভগবদগীতায় বলা হয়েছে, যোগক্ষেমং বহাম্যহম্‌ (গীতা ৯.২২) তিনি ব্যক্তিগতভাবে সেখানে যা কিছু প্রয়োজন তা সরবরাহ করেন। ঠিক একজন বাবার মতো। একটি ছোট শিশু যে পুরোপুরি মা-বাবার উপর নির্ভরশীল, বাবা-মা তার প্রয়োজনের দেখাশোনা করেন। শিশু বাবা-মাকে জিজ্ঞাসা করে না, কারণ সে কথাও বলতে পারে না। তাই সে কেবল ভগবানের উপর নির্ভর করে, কেবল পিতামাতার উপর নির্ভর করে। যদি তুমি কেবল ভগবানের উপর নির্ভর কর তবে তোমার অর্থনৈতিক সমস্যার কোনও প্রশ্নই আসে না। নিশ্চিত থাক। এটি সাধারণ জ্ঞান।

সুতরাং বর্তমান মুহুর্তে ভগবানের ভক্তদের অভাব রয়েছে। মানুষ ভগবানকে প্রত্যাখ্যান করেছে। কেউ বলছে, "ভগবান মারা গেছেন।" কেউ একজন মূর্খ কে ভগবান বলে গ্রহণ করছে। কেউ নিজেকে ভগবান বলে দাবি করছে। না, ভাগবানকে বিজ্ঞানভিত্তিক ভাবে বোঝার চেষ্টা কর এবং ভক্ত হও। ভগবানের একজন প্রেমিক হও, তবে তোমার জীবন সার্থক হবে। সেটাই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন। এমন নয় যে " আমার ভগবান," "তোমার ভগবান," "এই ধর্ম," "সেই ধর্ম।" ভগবান এক এবং ধর্মও এক। সেই ধর্ম কি? ভগবানের প্রতি ভালবাসা। সেটাই সব। আর কোন ধর্ম নেই। এটাই ধর্ম। তাই ভগবান আসেন এবং বলেন, সর্বধর্মান্‌ পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ (গীতা ১৮.৬৬) এটাই ধর্ম।