BN/Prabhupada 1050 - তুমি এটা কর, আমাকে টাকা দাও, তাহলেই তুমি সুখী হবে - এটা গুরু নয়



750712 - Lecture SB 06.01.26-27 - Philadelphia

এই হচ্ছে অবস্থা গুরু ব্যতীত কেউ যদি নিজের জীবন নিজেই বানায়, তাহলে সে একটা মূর্খ, বদমাশ তাই বলা হয়েছে, মূঢ় তিনি ভাবছিলেন, "আমি খুবই স্নেহশীল পিতা, আমি আমার ছোট্ট সন্তানের যত্ন নিচ্ছি। সবদিক থেকেই, আমি ওকে খাওয়াচ্ছি, আদর করছি, এবং আরও কতো কিছু করছি ... আমি খুবই বিশ্বস্ত আর সৎ পিতা" কিন্তু শাস্ত্র বলছেন, সে একটা মূঢ়, মূর্খ বলা হচ্ছে, ভোজয়ন্ পায়ায়ন মূঢ়ঃ সে মূর্খ কেন? ন বেদগতাম্‌ অন্তকম্‌ সে এটা দেখছে না যে, "আমার পেছনে মৃত্যু অপেক্ষা করছে, আমাকে নিতে আসবে।" এখন দেখি, "কীভাবে তোমার তথাকথিত স্নেহের পুত্র, সমাজ, পরিবার, জাতি তোমাকে রক্ষা করতে পারে? মৃত্যু সামনে।" এই কথার উত্তর সে দিতে পারবে না। সে উত্তর দিতে পারবে না যখন মৃত্যু সামনে দাঁড়াবে

তাই আমাদের প্রস্তুত হওয়া উচিৎ। এর নাম মনুষ্য জীবন আমাদের সবসময় জানতে হবে, "মৃত্যু আমার পেছনেই আছে। যে কোন সময়ে আমার ঘাড়টা ধরে নিয়ে যাবে"। সেটাই বাস্তবতা। কোন নিশ্চয়তা আছে যে তুমি একশ বছর বাঁচবে? না। এমনকি মাত্র মাত্র কয়েক মুহূর্ত পরেই রাস্তায় যেতেই তোমার মৃত্যু হতে পারে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে। মোটর গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কিছু না কিছু একটা হতেই পারে, বেঁচে থাকাটা আশ্চর্যের, মরে যাওয়াটা আশ্চর্যের নয়। কারণ তুমি আসলে মৃত্যুর জন্যই নির্দিষ্ট। যেই মুহূর্তে তুমি জন্ম নিয়েছ, সেই মুহূর্তে তুমি মরতে শুরু করেছ , তৎক্ষণাৎ যখন তুমি জিজ্ঞাসা কর, "ওহ্‌ বাচ্চাটা কখন হয়েছে?" তুমি বল, "ওহ্‌ এক সপ্তাহ হয়েছে"। তার মানে সে এক সপ্তাহ মরে গেছে আমরা সেটি এক সপ্তাহ ধরে বেঁচে আছে ধরছি। কিন্তু আসলে সে এক সপ্তাহ ধরে মৃত্যু বরণ করছে এটাই আশ্চর্যের যে সে এখনও বেঁচে আছে। মারা যায় নি। মৃত্যুটা আশ্চর্যের নয়, কারণ এটি বাস্তব সত্য। এটা আসবেই, এক সপ্তাহ পর, বা একশ বছর পর। সেটি আশ্চর্যের নয়। তুমি যতদিন ধরে বেঁচে আছ, সেটাই আশ্চর্যের

তাই তোমার উচিৎ যতদিন বেঁচে আছ, সেই সময়টা জীবনে কাজে লাগানো। আমরা বারবার মৃত্যুবরণ করছি আবার আরেকটি দেহ ধারণ করছি এইসব কথা তারা কীভাবে বুঝবে যদি একজন প্রকৃত গুরুঢ় কাছে না আসে তো? তাই শাস্ত্রে বলা হয়েছে, তদ্‌ বিজ্ঞানার্থম্‌ "যদি তুমি জীবনের আসল সমস্যাগুলো জানতে চাও, যদি তুমি জানতে চাও কীভাবে কৃষ্ণভাবনাময় হওয়া যায়, কীভাবে ভগবানের কাছে, তাঁর ধামে ফিরে গিয়ে নিত্য জীবন লাভ করতে হয়, তাহলে তোমাকে অবশ্যই একজন গুরুর শরণাগত হতে হবে।" এবং গুরু কে? সেই কথাও ব্যাখ্যা করা হয়েছে, সহজ ব্যাপার। গুরু কখনও বলেন না, "তুমি কেবল এটা কর, আর আমাকে টাকা দাও, ব্যাস্‌ তুমি সুখী হয়ে যাবে"। সেটি গুরু নয়। সেটা হল টাকা কামানোর একটা ধান্দা। তাই এখানে বলা হয়েছে, সকলেই কেবল মাত্র মূর্খের স্বর্গে বাস করছে, অজামিলের মতো নিজের নিজের মতপন্থা তৈরি করছে... কেউ ভাবছে, "এটা আমার কর্তব্য"... কেউ আবার ভাবছে... সে একটা মূর্খ মাত্র। তোমার যে কর্তব্য কি, তা তোমার গুরুর কাছ থেকে জানা উচিৎ। রোজ তোমরা গাইছ, গুরুমুখপদ্মবাক্য চিত্তেতে করিয়া ঐক্য, আর না করিহ মনের আশা। এই হচ্ছে জীবন... এটাই জীবন। গুরুমুখপদ্মবাক্য... একজন সদগুরু গ্রহণ কর, তিনি যা আদেশ করেন তা পালন কর, তাহলেই তোমার জীবন সার্থক। আর না করিহ মনের আশা। তুমি মূর্খ, তোমার আর কিছুই আশা করা উচিৎ না।