BN/Prabhupada 0486 - জড় জগতের শক্তি হচ্ছে মৈথুন, আর চিন্ময় জগতের শক্তি প্রেম



Lecture -- Seattle, October 18, 1968

অতিথিঃ যোগমায়াকে

আমরা কীভাবে চিনতে পারি?

শ্রীল প্রভুপাদঃ আপনার প্রশ্ন কী তা আমি জানি না।

তমাল কৃষ্ণঃ তিনি জানতে চান আমরা কীভাবে যোগমায়াকে চিনতে পারি, কীভাবে আমরা জানব।

শ্রীল প্রভুপাদঃ যোগমায়া? যোগমায়া মানে যা আপনাকে সংযুক্ত করে। যোগ মানে সংযোগ। যখন আপনি ধীরে ধীরে কৃষ্ণভাবনামৃতে উন্নত হচ্ছেন, তখন সেটা হল যোগমায়ার ক্রিয়া। আর আপনি যখন ধীরে ধীরে শ্রীকৃষ্ণকে ভুলে যাচ্ছেন তখন সেটা হল মহামায়ার ক্রিয়া। মায়া আপনার ওপর প্রভাব ফেলছে। একজন আপনাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে, এবং একজন আপনাকে বিপরীত দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যোগমায়া। সুতরাং, ঠিক যেমন সেই উদাহরণ, যে আপনি সর্বদা সরকারের আইনের অধীনে থাকেন। আপনি অস্বীকার করতে পারবেন না। আপনি যদি বলেন, "আমি সরকারের আইন মেনে চলতে রাজি নই," সেটি সম্ভব নয়। কিন্তু আপনি যখন অপরাধী হন, আপনি পুলিশ আইন অনুসারে থাকেন, এবং যখন আপনি ভদ্রলোকের মতো আচরণ করেন, আপনি নাগরিক আইনের অধীনে থাকেন। সেই আইন আছে। যে কোনও পরিস্থিতিতে, আপনাকে সরকারের আইন মেনে চলতে হবে। আপনি যদি সভ্য নাগরিক হিসাবে থাকেন তবে আপনি সর্বদা নাগরিক আইন দ্বারা সুরক্ষিত থাকবেন। তবে আপনি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হওয়ার সাথে সাথেই ফৌজদারি আইন আপনার বিরুদ্ধে কাজ করবে। সুতরাং আইনের অপরাধমূলক ক্রিয়াকলাপ হল মহামায়া, তিন প্রকারের ক্লেশ, সর্বদা। সর্বদা একরকম ঝামেলায় ফেলবে। এবং শ্রীকৃষ্ণের বেসামরিক বিভাগ, আনন্দমবুধি-বর্ধনম। আপনি কেবল বৃদ্ধি করুন, আমি বলতে চাইছি, আনন্দের সাগরের গভীরতা। আনন্দমবুধি-বর্ধনম। এটাই পার্থক্য, যোগমায়া এবং মহামায়ার মধ্যে। যোগমায়া হল ... যোগমায়া, আদি যোগমায়া, হল শ্রীকৃষ্ণের অন্তরঙ্গা শক্তি। তা হলেন রাধারানী। আর মহামায়া হলেন বাহিরঙ্গা শক্তি, দুর্গা। এই দুর্গাকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে ব্রহ্ম-সংহিতায়, সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়-সাধন-শক্তির এক ছায়েব য়স্য ভুবনানি বিভর্তি দুর্গা ( ব্রহ্ম-সংহিতা ৫।৪৪ )। দুর্গা এই পুরো ভৌতিক জগতের তত্ত্বাবধায়ক দেবী। সবকিছু তার নিয়ন্ত্রণে, তার নিয়ন্ত্রণে চলছে। প্রকৃতি, প্রকৃতি হল শক্তি। শক্তি স্ত্রীলিঙ্গবোধক হিসাবে গৃহীত হয়। ঠিক যেমন মায়াবাদী ব্যক্তিরা, তারাও কোনও শক্তির অধীনে কাজ করছে। সেই শক্তি কী? যৌন জীবন। এখানেই শেষ। তারা কত কষ্ট করছে: "ওহ, রাতে আমার যৌন জীবন উপভোগ করব।" এখানেই শেষ। এটাই শক্তি। যন্‌মৈথুনাদি গৃহমেধি-সুখম্‌ হি তুচ্ছম্‌ (শ্রীমদ্ভাগবতম ৭।৯।৪৫)। তাদের জীবন হল যৌনসহবাস ভিত্তিক। এখানেই শেষ। প্রত্যেকে এত কঠোর পরিশ্রম করছে, যৌনতায় লিপ্ত হচ্ছে। এখানেই শেষ। এটাই হল ভৌতিক জীবন। সুতরাং শক্তি। ভৌতিক শক্তি মানে যৌনতা। সুতরাং সেটাই হল শক্তি। কারখানায় কর্মরত কোনও ব্যক্তি, যদি যৌনতা বন্ধ করেন, তিনি কাজ করতে পারবেন না। এবং যখন সে যৌন জীবন উপভোগ করতে অক্ষম হয়, তখন সে নেশা করে। এটি ভৌতিক জীবন। সুতরাং শক্তি অবশ্যই থাকা উচিত। এই জড় জগতের মূল শক্তি হল মৈথুন এবং আধ্যাত্মিক জগতের শক্তি হল প্রেম। এখানে যৌনতাকে প্রেম বলে ভুল উপস্থাপনা করা হয়। সেটা প্রেম নয়; সেটা কাম। প্রেম কেবল শ্রীকৃষ্ণ সাথেই সম্ভব, অন্য কোথাও নেই। আর কোথাও প্রেম সম্ভব নয়। সেটি প্রেমের ভুল উপস্থাপনা। তা হল কাম। সুতরাং প্রেম এবং কাম। প্রেম হল যোগমায়া, আর কামনা হল মহামায়া। ব্যাস্‌। ঠিক আছে তো?