BN/Prabhupada 0586 - আসলে নতুন দেহ গ্রহণ করার মানে আমার মৃত্যু নয়



Lecture on BG 2.20 -- Hyderabad, November 25, 1972

তাই আমরা এই জীবনে , এই দেহে কিছু পরিকল্পনা করি এবং যখন এই দেহ শেষ হয়ে যায়, মৃত্যুবরণ করে কিন্তু আমার ভাব, ধারণাগুলো সূক্ষ্মদেহে থেকে যায় এবং যেহেতু সেই বাসনাগুলো হৃদয়ে থেকে যায়, তাই আমাকে আরেকটি দেহ ধারণ করতে হয় এটিই হচ্ছে আত্মার দেহান্তর প্রক্রিয়া তাই আত্মা সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আরেকটি দেহে দেহান্তরিত হয় এবং আত্মার সঙ্গে পরমাত্মাও থাকে সর্বস্য চাহম্‌ হৃদি সন্নিবিষ্ট মত্তঃ স্মৃতিঃ জ্ঞানম্‌ অপোহনম্‌ চ (গীতা ১৫/১৫) পরমাত্মা , ভগবান তাকে বুদ্ধি দান করেন তোমার বাসনা ছিল, এই নাও উপযোগী একটি দেহ এবং তোমার ইচ্ছা পূরণ কর" তাই আমরা দেখি যে কেউ যদি বৈজ্ঞানিক বা ভাল মেকানিক হয় এর মানে যে সে আগের জন্মে সে মেকানিক ছিল, কিছু পরিকল্পনা করত আর এই জন্মে সুযোগ পেয়েছে তার সেই বাসনা পূর্ণ করার সে কিছু একটা আবিষ্কার করে খুবই বিখ্যাত হয়ে যায় কারণ কর্মীরা তিনটি জিনিস চায়, লাভ, পূজা এবং প্রতিষ্ঠা তারা কিছু জাগতিক লাভ আর জাগতিক প্রশংসা চায় লাভ, পূজা, প্রতিষ্ঠা এবং স্থায়িত্ব। এই হল জাগতিক জীবন তাই আমরা একের পর এক জাগতিক লাভ, জাগতিক সম্মান, পূজা, খ্যাতি এসব পেতে চাইছি, আর সেই কারণেই আমরা একের পর দেহ পেয়ে চলেছি আসলে এই যে আরেকটি দেহ গ্রহণ করার প্রক্রিয়ার মানে এই নয় যে আমি মারা যাচ্ছি আমি রয়েছি , সূক্ষ্ম ভাবে আমি রয়েছি , ন জায়তে ন ম্রিয়তে। তাই জন্ম মৃত্যুর কোন প্রশ্নই আসে না এটি কেবল দেহের রূপান্তর মাত্র বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায় (গীতা ২/২২), পরের শ্লোকে তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে

বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায়
নবানি গৃহ্ণানি নরোপরাণি
তথা শরীরাণি বিহায় জীর্ণানি
অন্যানি সংযাতি নবানি দেহী
(গীতা ২/২২)

দেহী , জীবাত্মা, কেবল দেহ পরিবর্তন করছে এটি হচ্ছে বস্ত্র। দেহ হচ্ছে বস্ত্র। এখন প্রশ্ন হচ্ছে... ঠিক যেমন আলোচনা চলছিল যে আত্মার কোন রূপ নেই। কীভাবে সম্ভব? যদি এই দেহ আমার পোশাক হয়, তাহলে কীভাবে এর কোন রূপ নেই? পোশাকের রূপ থাকে কীভাবে তাহলে? আমার কোট বা শার্টটির আকার আছে কারণ দেহটিরও আকার আছে আমার দুটো হাত আছে। তাই আমার কাপড়, আমার কোটেরও দুটো হাত আছে। আমার শার্টেরও দুটো হাত আছে। তাই যদি এই দেহ , এই পোশাক যেমনটা ভগবদগীতায় বলা হয়েছে বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায় নবানি গৃহ্ণানি নরোপরাণি (গীতা ২/২২) তাহলে আমার নিশ্চয়ই রূপ আছে তা না হলে এই পোশাকটা কীভাবে বানানো হল? অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত। বোঝা খুবই সহজ যদি আমারই রূপ না থাকে, তাহলে আমার পোশাকের রূপ এলো কোথা থেকে? এর উত্তর কি? কেউ বলতে পার? তাহলে কীভাবে মূল জীবাত্মার কোন হাত পা থাকবে না? যদি এই দেহটি পোশাক হয়ে থাকে ...যেমন আমরা দর্জির কাছে যাই সে তোমার হাত, পা, বুক ইত্যাদির মাপ নিচ্ছে তারপর তোমার শার্ট বা কোট বানানো হচ্ছে। তেমনই যখন এই বিশেষ ধরণের দেহ রূপ পোশাক তুমি পেয়েছ বুঝতে হবে যে আমার নিজের একটি রূপ আছে,চিন্ময় রূপ। এই যুক্তি কেউই খণ্ডাতে পারবে না। এবং আমাদের তথাকথিত যুক্তি ছাড়াও আমাদেরকে ভগবানের উক্তি গ্রহণ করতে হবে কারণ তিনি হচ্ছে প্রামাণিক কর্তৃপক্ষ