BN/Prabhupada 0728 - যে রাধাকৃষ্ণলীলাকে জাগতিক বলে মনে করে, সে ভ্রান্তপথে চালিত



Lecture on CC Adi-lila 7.5 -- Mayapur, March 7, 1974

আগুন শ্রীকৃষ্ণ থেকে এসেছে। মহী, মাটি এগুলো শ্রীকৃষ্ণ থেকে এসেছে। অগ্নি, মহী, গগন, আকাশ এগুলো শ্রীকৃষ্ণ থেকে এসেছে। অম্বু, জল শ্রীকৃষ্ণ থেকে এসেছে। অগ্নি, মহী, গগনম অম্বু ... মারুত, বায়ু শ্রীকৃষ্ণ থেকে এসেছে। যেহেতু এগুলো শ্রীকৃষ্ণ থেকে আসছে, তাই এগুলো শ্রীকৃষ্ণ থেকে ভিন্ন নয়। সব কিছুই শ্রীকৃষ্ণ। কিন্তু তুমি যখন বাতাসের স্বাদ গ্রহণ কর, মৃদুমন্দ বাতাস, জল, মাটি আর আগুনের, তুমি বলতে পার না, " যেহেতু বাতাস শ্রীকৃষ্ণ থেকে আসছে, জল শ্রীকৃষ্ণ থেকে আসছে, তাই আমি বাতাসে থাকি অথবা সমুদ্রে থাকি, সবই এক।" আমরা বায়ুতে বাস করছি, কিন্তু আমি যদি মনে করি যে বাতাস আর জল একই, আমি সমুদ্রে ঝাঁপ দেই, এটি খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, বাতাসও শ্রীকৃষ্ণ, জলও শ্রীকৃষ্ণ, মাটিও শ্রীকৃষ্ণ। অগ্নিও শ্রীকৃষ্ণ, কারণ তারা সবাই শ্রীকৃষ্ণের শক্তি।

সুতরাং এইভাবে যদি আমরা পঞ্চতত্ত্বকে বোঝার চেষ্টা করি, শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য, প্রভু নিত্যানন্দ, শ্রীঅদ্বৈত, গধাদর, শ্রীবাসাদি গৌরভক্তবৃন্দ। এই হচ্ছে পঞ্চত্তত্বঃ শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য, প্রভু নিত্যানন্দ, শ্রীঅদ্বৈত, গধাদর, শ্রীবাসাদি। শ্রীবাসাদি মানে জীব তত্ত্ব। জীবতত্ত্ব, শক্তিতত্ত্ব, বিষ্ণুতত্ত্ব, তাঁরা সবাই তত্ত্ব। তো পঞ্চতত্ত্ব। শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য হচ্ছেন সর্বোচ্চ তত্ত্ব, শ্রীকৃষ্ণ। শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য, রাধা কৃষ্ণ নহে অন্য। আমরা রাধা কৃষ্ণের আরাধনা করছি। সুতরাং শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য হচ্ছেন রাধা কৃষ্ণের মিলিত রূপ। শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য, রাধা কৃষ্ণ নহে অন্য।

রাধা কৃষ্ণপ্রণয়বিকৃতিঃ হ্লাদিনী শক্তিঃ অস্মাৎ
এক-আত্মানৌ অপি ভুবি পুরা দেহভেদম্‌ গতৌ তৌ
চৈতন্য-আখ্যম্‌ প্রকটম্‌ অধুনা তদ্‌-দ্বয়ম্‌ চ ঐক্যম্‌ আপ্তম্‌ .........
(চৈচ আদি ১.৫)

রাধা কৃষ্ণ ... কৃষ্ণ হচ্ছেন পরম। যখন শ্রীকৃষ্ণ উপভোগ করতে চান ... ভোক্তা ... ভোক্তারং যজ্ঞতপসাং সর্বলোকমহেশ্বরম্‌ (শ্রীমদ্ভগবতগীতা ৫.২৯)। তিনি হচ্ছেন ভোক্তা। তাই তিনি যখন উপভোগ করতে চান, এটি জড় উপভোগ নয়। এটি চিন্ময় উপভোগ- উৎকৃষ্টা শক্তি, জড় শক্তি নয়। কারণ শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন সর্বোচ্চ, তাই তিনি উৎকৃষ্টা শক্তি উপভোগ করেন। সুতরাং শ্রীকৃষ্ণের .... রাধা-কৃষ্ণের লীলা জড় নয়। যারা রাধা-কৃষ্ণের লীলাকে জড় বলে মনে করে, তারা ভুল পথে পরিচালিত। শ্রীকৃষ্ণ কোন জড় বস্তু উপভোগ করেন না। যদি তুমি বল যে " আমরা প্রতিদিন দেখছি যে আপনি প্রসাদ দিচ্ছেন, সব্জি, অন্ন। এগুলো সব জড় বস্তু," না, এগুলো জড়বস্তু নয়। এটিই হচ্ছে প্রকৃত উপলব্ধি। এটি কি করে জড় নয়? এটি অচিন্ত্য, অকল্পনীয়। শ্রীকৃষ্ণ জড় বস্তুকে চিন্ময় বস্তু আর চিন্ময় বস্তুকে জড় বস্তুতে রূপান্তরিত করতে পারে। এটি শ্রীকৃষ্ণের অকল্পনীয় শক্তি, অচিন্ত্য শক্তি। যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণের অচিন্ত্য শক্তিকে গ্রহণ না কর, তাহলে তুমি শ্রীকৃষ্ণকে জানতে পারবে না। অচিন্ত্য শক্তি।