BN/Prabhupada 0749 - কৃষ্ণ কষ্ট পাচ্ছেন , তাই তুমি কৃষ্ণভাবনাময় হও



Lecture on SB 1.7.7 -- Vrndavana, April 24, 1975

প্রভুপাদঃ মানুষ পাপী হয়ে যাওয়ার কারণে কষ্ট পাচ্ছে। কেউ একজন জানতে পারেনা যে ভগবান কে, শ্রীকৃষ্ণ কে, যতদিন না তার পাপকর্ম শেষ হচ্ছে।

যেষাং ত্বন্তগতং পাপং
জনানাং পুণ্যকর্মাণাম্‌
তে দ্বন্দ্বমোহনির্মুক্তা
ভজন্তে মাং দৃঢ়ব্রতাঃ
(শ্রীমদ্ভগবতগীতা ৭.২৭)

এটি হচ্ছে নিয়ম যে, মানুষ তার পাপকর্মের মধ্যে নিযুক্ত থেকে একই সময়ে সে ধার্মিক বা ভগবৎ চেতনাময় হতে পারে না। এটি সম্ভব নয়। এটি হয়না। তাই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু পুণ্যবান হওয়ার জন্য খুব সহজ একটি উপায় নির্দেশ করেছেন। এটি হচ্ছে হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তন করা। চতোদর্পণমার্জনম (চৈ চ অন্ত্য ২০.১২)। আসল সমস্যা আমাদের হৃদয়ের মধ্যে। হৃদরোগ কাম। হৃদরোগ কাম (চৈ চ অন্ত্য ৫.৪৫-৪৬)। আমাদের একটি রোগ রয়েছে, হৃদরোগ। এটি কি? কাম, কাম বাসনা। এটিকে বলে হৃদরোগ কাম। তাই আমাদেরকে এই হৃদরোগটি দূর করতে হবে, হৃদরোগ কাম। আর এটি সম্ভব হবে শুধুমাত্র হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র শ্রবণ কীর্তনের মাধ্যমে। চতোদর্পণমারজনম। হৃদয় ঠিক আছে, কিন্তু এটি জড় জগতের নোংরা বস্তু দ্বারা আবৃত হয়ে আছে, বলা যায় তিনটি গুণের দ্বারাঃ সত্ত্ব গুণ, রজো গুণ, তমো গুণ। কিন্তু শুধু শ্রীমদ্ভাগবত শ্রবণ, হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র শ্রবণ কীর্তনের মাধ্যমে তুমি পরিশুদ্ধ হতে পার। নিত্যং ভাগবতসেবয়া। নষ্ট প্রায়েষু অভদ্রেষু নিত্যং ভাগবতসেবয়া (শ্রীমদ্ভাগবত ১.২.১৮)। নিত্যম্‌ ভাগবত..... তুমি যদি এই সুযোগটি গ্রহণ কর... আমরা সারা পৃথিবী জুড়ে কেন্দ্র খুলছি শুধুমাত্র লোকদেরকে এই সুযোগটি দেয়ার জন্য, নিত্যম্‌ ভাগবত সেবয়া। অনর্থোপশমং সাক্ষাদ্ভক্তিযোগম (শ্রীমদ্ভাগবত ১.৭.৬)। তখন শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে শ্রবণ করার সাথে সাথে তোমার হৃদয় পরিষ্কার হয়ে যাবে... শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন যেঃ যারে দেখ, তারে কহ কৃষ্ণ উপদেশ (চৈ চ মধ্য ৭.১২৮)। এই শ্রীমদ্ভাগবতমও শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ, কারণ শ্রীমদ্ভাগবতম শ্রবণ করার মাধ্যমে তুমি শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আকৃষ্ট হবে। শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে উপদেশ, এটিও কৃষ্ণ উপদেশ, আর শ্রীকৃষ্ণ কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ- নির্দেশ, এটিও কৃষ্ণ- উপদেশ।

তো এটি হচ্ছে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বিশেষ উদ্দেশ্য যে তোমরা বাইরে যাও আর প্রচার কর, আর শ্রীকৃষ্ণ উপদেশ সম্পর্কে কর্মসূচী তৈরি কর। এটি হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন। আমরা আমাদের ভক্তদের শিখাচ্ছি কি করে কৃষ্ণ- উপদেশ প্রচার করতে হয়, কৃষ্ণভাবনামৃতের প্রসার ঘটাতে হয়। অনর্থোপশমং সাক্ষাৎ। তখন সমস্ত অবাঞ্ছিত বস্তু যার দ্বারা সে কলুষিত হয়ে আছে, সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। তখন শুদ্ধ চেতনা... শুদ্ধ চেতনা মানে কৃষ্ণচেতনা। শুদ্ধ চেতনা মানে এটি উপলব্ধি করা যে "আমি শ্রীকৃষ্ণের সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পর্কিত।" ঠিক যেমন আমার আঙ্গুল আমার দেহের সাথে অন্তরঙ্গভাবে সম্পর্কিত। অন্তরঙ্গ... যদি আঙ্গুলে একটু ব্যাথা হয়, আমি খুব যন্ত্রণা অনুভব করি। কারণ আমার সাথে আমার আঙ্গুলের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে। একইভাবে, শ্রীকৃষ্ণের সাথে আমাদের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে, কিন্তু আমরা অধঃপতিত হয়েছি। তাই শ্রীকৃষ্ণও কিছু ব্যাথা অনুভব করছেন, তাই তিনি নেমে আসেনঃ

পরিত্রাণায় সাধূনাং
বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্‌।
ধর্মসংস্থাপনার্থায়
সম্ভবামি যুগে যুগে
(শ্রীমদ্ভগবতগীতা ৪.৮)।

শ্রীকৃষ্ণ ব্যারহা অনুভব করছেন। তাই তোমরা কৃষ্ণভাবনাময় হয়, তাহলে শ্রীকৃষ্ণ সুখী হবেন। এটিই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন।

অসংখ্য ধন্যবাদ।

ভক্তবৃন্দঃ জয় শ্রীল প্রভুপাদ।