BN/Prabhupada 0759 - গাভীরা জানে, এই লোকগুলো আমাদের হত্যা করবে না। ওরা নিশ্চিন্ত



750522 - Lecture SB 06.01.01-2 - Melbourne

শুকরের পছন্দ হচ্ছে মলের মতো খাদ্যদ্রব্য আহার করা। এর মানে শুকর এমনকি মল পর্যন্ত যে কোনো রকমের জঘন্য খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করতে পারে। এটি হচ্ছে শুকরের জীবন। আর মানব জীবন? না,না,না। কেন তুমি তা খাবে? তোমার জন্য সুন্দর সুন্দর ফল, ফুল, শস্যদানা আর শাকসবজি রয়েছে, আর রয়েছে দুগ্ধজাত বিভিন্ন খাদ্য, এগুলো খাও। ভগবান তোমাকে এগুলো দিয়েছেন। কেন তুমি বিষ্ঠা খাবে? এটি হচ্ছে মানব চেতনা। তাই যখন যথেষ্ট পরিমাণে ভালো খাদ্য রয়েছে, আমি অবশ্যই উৎকৃষ্ট খাদ্যটাই আহার করবো, ভিটামিনে পূর্ণ, পূর্ণ স্বাদ যুক্ত, শক্তিতে ভরপুর। তাহলে কেন আমি অন্যকিছু খাব? না। এটি হচ্ছে মানুষের বুদ্ধি।

তাই আমাদের কাজ হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণকে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মানের খাদ্যদ্রব্য নিবেদন করা। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, "আমাকে এই সমস্ত আহার প্রদান কর।" এগুলো কি? পত্রং পুস্পং ফলং তোয়ং যো মে ভক্ত্যা প্রযচ্ছতি, তদহং অশ্নামি (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৯.২৬)। যদি তুমি একজন অতিথিকে নিমন্ত্রণ কর, আর তাকে জিজ্ঞাসা কর, "আমার প্রিয় বন্ধু, আমি তোমাকে কি দিতে পারি, তুমি কি খেতে চাও?" সে যদি বলে , "আমাকে এই জিনিস দাও, তাহলে আমি খুব খুশী হব," তোমার কর্তব্য হচ্ছে তাকে সেটা দেওয়া। একইভাবে, মানুষ জিজ্ঞাসা করতে পারে যে "আমি কেন কৃষ্ণকে মাংস নিবেদন করতে পারব না?" না, শ্রীকৃষ্ণ সেটি বলেন নি, শ্রীকৃষ্ণ সেটি চান না। শ্রীকৃষ্ণ ভগবদ্গীতায় উল্লেখ করেছেন যে "তুমি আমাকে দাও..." পত্রং পুষ্পং ফলং তোয়ং যো মে ভক্ত্যা প্রযচ্ছতি (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৯.২৬)। "তুমি আমাকে শাকসবজি দাও, ফল দাও, আমাকে শস্য দাও, আমাকে দুধ দাও, ভালো জল, সুন্দর ফুল, সুন্দর তুলসী পত্র।" তদহং অশ্নামিঃ "আমি এগুলো খাই।" শ্রীকৃষ্ণ, তিনি সবকিছু খেতে পারেন কারণ তিনি ভগবান। তিনি সর্ব শক্তিমান। কিন্তু তিনি ভক্তদেরকে বলছেন, "আমাকে এই জিনিসগুলো দাও।" তাই আমরা শ্রীকৃষ্ণকে এই জিনিসগুলো আর এগুলো থেকে তৈরি বিভিন্ন রকমের পদ নিবেদন করব। এটি হচ্ছে আমাদের বুদ্ধি। তুমি বৈচিত্র তৈরি করতে পার। ঠিক যেমন দুধ। তুমি দুধ থেকে কমপক্ষে পঞ্চাশ রকমের পদ তৈরি করতে পারবে। বহুরকমের বিচিত্র পদ।

নববৃন্দাবনে আমরা গাভী পালন করি। এটি একটি উদাহরণ। আমাদের গাভীরা অন্যান্য কৃষকদের তুলনায় দ্বিগুণ দুধ প্রদান করে। কেন? কারণ এই সমস্ত গাভীরা জানে যে "এই মানুষগুলো আমাদের হত্যা করবে না।" তারা উদ্বিগ্নতায় থাকে না। ধর, তুমি কোন কাজে নিয়োজিত আছ, আর তুমি যদি জানতে পার যে "সাতদিন পর আমাকে মেরে ফেলা হবে," তুমি কি কাজটি সুন্দরভাবে করতে পারবে? না। একইভাবে, পাশ্চাত্য দেশ গুলোতে গাভীরা জানে যে "এই মানুষগুলো আমাদেরকে খুব সুন্দর সুন্দর শস্য আর ঘাস প্রদান করছে, কিন্তু সর্বোপরি এরা আমাদের হত্যা করবে।" তাই তারা সুখী হয়না। কিন্তু তাদেরকে যদি নিশ্চিত করা হয় যে "তোমাদেরকে হত্যা করা হবে না।" তাহলে তারা দ্বিগুণ দুধ দিবে, দ্বিগুণ দুধ। এটি শাস্ত্রে বলা হয়েছে। যুধিষ্ঠির মহারাজের সময়, গাভীদের স্তন দুগ্ধে এত পরিপূর্ণ থাকত যে গোচারণ ভূমিতে দুধ উপচে পড়ত, আর সমস্ত গোচারণ ভূমি দুধে ভিজে কাদা কাদা হয়ে যেত। মাটি দুধে ভিজে কর্দমাক্ত হয়ে যেত, জলে ভিজে নয়। এটি ছিল অবস্থা। তাই গাভী এত গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা এর থেকে দুধের মতন চমৎকার খাদ্য পেয়ে থাকি। প্রতিদিন সকালে দুধের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এটি কি ধরণের বিচার যে, সেই প্রাণীটি থেকে দুধ খাওয়ার পর তাকে হত্যা কর? এটি কি খুব ভালো বিচার? সুতরাং এটি খুবই খুবই পাপময় একটি কাজ , আর এজন্য আমাদেরকে শাস্তি ভোগ করতে হবে। আর শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, "তুমি যদি এই পাপ কর্ম কর, তুমি এই ধরনের নরকে যাবে।" পঞ্চম স্কন্ধে এর বর্ণনা রয়েছে।