BN/Prabhupada 0761 - যে-ই এখানে আসবে তাকে গ্রন্থ পড়তে হবে



Lecture -- Honolulu, May 25, 1975

প্রভুপাদঃ একটি শ্লোক আছে, সমোহহং সর্বভূতেষু ন মে দ্বেষ্যঃ অস্তি ন প্রিয়ঃ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৯.২৯)। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন... ভগবানকে সবার ক্ষেত্রে সমভাবাপন্ন হতে হবে। ভগবান এক, তিনিই সবাইকে আহার প্রদান করছেন। পশু,পাখি , তারা খাদ্য পাচ্ছে। হাতী, সেও খাবার পাচ্ছে। কে তাকে খাবার দিচ্ছে? শ্রীকৃষ্ণ, ভগবান দিচ্ছেন। এইভাবে তিনি সকলের ক্ষেত্রে সমান, সাধারণ আচরণের দিক থেকে। কিন্তু ভক্তদের সাথে তিনি বিশেষভাবে আচরণ করেন। ঠিক যেমন প্রহ্লাদ মহারাজ। তাঁকে যখন বিপদে ফেলে দেয়া হলো, তখন ভগবান নৃসিংহদেব স্বয়ং এসেছিলেন তাঁকে রক্ষা করার জন্য। এটি হচ্ছে ভগবানের বিশেষ দায়িত্ব। এটি অস্বাভাবিক নয়। যদি কেউ বলে, "ভগবান পক্ষপাতদুষ্ট, কারণ তিনি তাঁর ভক্তদের বিশেষ যত্ন নেন,' না, এটি পক্ষপাতিত্ব নয়। ঠিক একজন ভদ্র মানুষের মতো- তিনি প্রতিবেশী সব বাচ্চাদের ভালোবাসেন, কিন্তু তার নিজের বাচ্চাটি যখন বিপদে পড়ে, তিনি বিশেষ যত্ন নেন। এটি অস্বাভাবিক নয়। তুমি তাকে দোষ দিতে পারনা যে, "আপনি কেন আপনার নিজের বাচ্চাটির বিশেষ যত্ন নিচ্ছেন?" না। এটি স্বাভাবিক। কেউ তাকে দোষ দিবে না। একইভাবে, প্রত্যেকেই ভগবানের সন্তান, কিন্তু তাঁর ভক্তরা হচ্ছেন বিশেষ কিছু। এটি হচ্ছে ভগবানের বিশেষ মনোযোগ। যে তু ভজন্তি মাং প্রীত্যা তেষু তে ময়ি। সুতরাং ভগবান প্রতিটি জীবকে সুরক্ষা প্রদান করছেন, কিন্তু তুমি যদি ভগবানের ভক্ত হও, শুদ্ধভক্ত, কোন অভিপ্রায় ছাড়া, তখন ভগবান তোমার বিশেষ যত্ন নিবেন। এটি হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন, আমরা বহিরঙ্গা মায়া শক্তির দ্বারা নিপীড়িত হচ্ছি, তাই আমরা যদি শ্রীকৃষ্ণের আশ্রয় গ্রহণ করি, তাহলে আমরা বিশেষভাবে সুরক্ষিত থাকব।

মামেব যে প্রপদ্যন্তে
মায়ামেতাং তরন্তি তে
(শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৭.১৪)।

তাই শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত হওয়ার চেষ্টা কর। আমাদের কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন এই দর্শন শিক্ষা দিচ্ছে। আমাদের বহু গ্রন্থ রয়েছে। এখানে যেই আসবে, তাকে অবশ্যই গ্রন্থ পড়তে হবে, ভক্ত, মন্দিরের বাসিন্দা, বহিরাগত, তাহলে তুমি কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন কি, সেটা বুঝতে পারবে। অথবা তোমারা শুধু হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তন। আজেবাজে কথা বলে সময় নষ্ট করো না। এটি ভালো নয়। একটি মুহূর্তও এতো গুরুত্বপূর্ণ যে লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ করেও তুমি এটি কিনতে পারবে না। আজকে এখন ২৫ মে, চারটা বেজে গেছে। তুমি এটিকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না, ২৫শে মে, বেলা ৪ টা, ১৯৭৫, যদি তুমি লক্ষ লক্ষ ডলারের বিনিময়েও একে ফিরিয়ে আনতে চাও, এটি সম্ভব নয়। কাজেই আমাদের সময় সম্পর্কে আমাদের খুব সচেতন হতে হবে। একবার সময় নষ্ট হয়ে গেলে, তুমি আর তাকে ফিরে পাবে না। সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার করো। সর্বোত্তম ব্যবহার হচ্ছে হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তন কর বা শ্রীকৃষ্ণের কথা চিন্তা কর, শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা কর। এটিই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন।

অসংখ্য ধন্যবাদ।

ভক্তবৃন্দঃ জয় শ্রীল প্রভুপাদ।