BN/Prabhupada 0800 - কার্ল মার্ক্স – সে ভাবছে কীভাবে শ্রমিকদের ইন্দ্রিয় তৃপ্তি করা যায়



730906 - Lecture SB 05.05.01-8 - Stockholm

প্রভুপাদঃ কার্ল মার্ক্স ভাবছে কীভাবে শ্রমিকদের ইন্দ্রিয় তৃপ্তি করা যায় এই হচ্ছে তার দর্শন। তাই না?

ভক্তঃ হ্যাঁ।

প্রভুপাদঃ সে ভাবছে যে পুঁজিবাদীরা বিলাসবহুল্ভাবে তাদের ইন্দ্রিয়তৃপ্তি করছে তাহলে শ্রমিকেরা কেন নয়, যারা আসলে পরিশ্রম করছে? এই হচ্ছে ওর দর্শন। মূল ব্যাপারটা ইন্দ্রিয়তৃপ্তিই। এটা বোঝার চেষ্টা কর। সারা দুনিয়া বিভিন্ন স্তরে ব্যস্ত। কিন্তু মূল বিষয়টি ইন্দ্রিয় তৃপ্তি। ব্যাস্‌। এখানে উপস্থিত কেউ এর দ্বিমত করে কিছু বলতে চায়? কিন্তু এখানে ঋষভদেব বলছেন, নৃলোকে কষ্টান্‌ কামান্‌ অর্হতে। নায়ম্‌ দেহো দেহভাজাম্‌ নৃলোকে কষ্টান্‌ কামান্‌ অর্হতে বিড্‌ ভুজাম্‌ যে (ভাগবত ৫/৫/১) এই ধরণের কঠোর পরিশ্রম কুকুর শুকরেরাও করে এর মানে কি আমাদেরও মানব দেহ পেয়েও কাজ করতে হবে, কুকুর শুকরের মতো কাজ করতে হবে? আসলে ওরা তাই করছে। এর চেয়ে বেশি কিছু না। কুকুর শুকর সারাটাদিন একই কাজ করছে কীভাবে খাবে, কীভাবে ঘুমোবে, কীভাবে মৈথুন সুখ ভোগ করবে এবং কীভাবে আত্মরক্ষা করবে। মানুষও সেই একইভাবে কাজ করছে। ভিন্ন স্তরে মাত্র। জাতীয়তা, সমাজতন্ত্র, এই মতবাদ, ঐ মতবাদ... কিন্তু সেই একই কাজ কুকুর শুকরের মতো একই কাজ। আর এই মানব সমাজ - তথাকথিতভাবে সভ্য। কিন্তু কাজ সেই একই। তাই ঋষভদেব বলছেন যে কুকুর শুকর ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে কিন্তু এই মনুষ্য দেহ সেই একই কাজ করার জন্য নয়। এর একটি ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে

সেটা এই আধুনিক সভ্যতা জানে না। আধুনিক সমাজ, লোকেরা তা জানে না ওরা ভাবছে, "হ্যাঁ হ্যাঁ, কুকুর রাস্তায় ঘুমাচ্ছে আমাদেরকে অবশ্যই একটা সুন্দর বাড়িতে ঘুমাতে হবে, খুব ভাল বিছানায়। এটাই এই সভ্যতার উন্নতি। অন্যথায় এটা আদিম হয়ে গেল, যদি আমরা সেই একই ভাবে থাকি, যে কোন জায়গায় ঘুমাই, কোন আসবাবপত্র ছাড়া, ..." কিন্তু সবশেষ কথা হচ্ছে কাজটা তো একই, ঘুমানো। এর চেয়ে বেশি কিছু না। একই ভাবে, আহার বা মৈথুন সুখের ব্যাপারটা ধরলেও একই কাজ। তাহলে প্রশ্ন হবে মানুষ জন্মটি তবে কিসের জন্য? উত্তর হচ্ছে, তপো দিব্যম্‌ পুত্রকা যেন সত্ত্বম্‌ শুদ্ধ্যেদ্‌ (ভাগবত ৫/৫/১) মনুষ্য জীবন তপস্যা করার জন্য। তপস্যা মানে স্বেচ্ছায় কোন কিছু পরিত্যাগ করা। কুকুর বেড়ালগুলো খুশী। যেহেতু ওরা অনেক খেতে পারছে, ভোগ করতে পারছে আজকাল মানুষও তেমন হয়ে গেছে। অনেক ক্ষুধাবর্ধক বা পানীয় নিচ্ছে বিমান ভ্রমণের সময় আমরা এটা লক্ষ্য করেছি। খাওয়ার আগে ওরা মদ সরবরাহ করে। যাতে করে ওদের খিদেটা আরও বাড়ে। অনেকগুলো যেন খেতে পারে। এটা তোমরা লক্ষ্য করেছ?

ভক্তঃ হ্যাঁ

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ এটাই হচ্ছে ওদের উপভোগ। কিন্তু ঋষভদেব বা শাস্ত্র বলছেন, না , না এসব তুমি খাবে না। সেটিই তোমার সিদ্ধি।" এইসব পশুসদৃশ মানুষগুলি এত এত খাচ্ছে উপভোগ করছে, কিন্তু আসলে তোমার কাজ হচ্ছে এগুলো এমনভাবে হ্রাস করা যাতে এক সময় আর নাই খেতে হয়। ওরা কি প্রস্তুত? না। খুব কঠিন। কিন্তু এটাই লক্ষ্য। এজন্য দেখবে যারা পারমার্থিক উন্নতি চায়... ঠিক যেমন শ্রীল রঘুনাথ দাস গোস্বামী রঘুনাথ দাস গোস্বামী একজন অত্যন্ত বড়লোকের সন্তান ওনার বাবা এবং জ্যাঠা অনেক বড় ধনী ছিলেন পাঁচশো বছর আগে তাঁদের বার্ষিক আয় ছিল বার লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা। এক লাখ। একশ হাজার। আমার মনে হয় সেই এক লক্ষ মুদ্রার মূল্য বর্তমানে একশ হাজার গুণ বেড়ে গেছে।