BN/Prabhupada 0831 - আমরা অসাধুমার্গ অনুসরণ করতে পারি না, আমরা সাধুমার্গ অনুসরণ করি



The Nectar of Devotion -- Vrndavana, November 13, 1972

প্রদ্যুম্ন: "এই সাধনা ভক্তি, বা ভক্তিমূলক সেবার অনুশীলনও, দুই ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম অংশকে নিয়ামক নীতি বলা হয়। এই বিভিন্ন নিয়ামক নীতিগুলি আধ্যাত্মিক গুরুর আদেশে বা প্রামাণিক শাস্ত্রের শক্তিতে অনুসরণ করা উচিত । "

প্রভুপাদ: হ্যাঁ। নিয়ামক নীতির অর্থ হল তুমি কিছু তৈরি করো না। বিধিনিষেধ মানে অনুমোদিত - যেহেতু প্রামাণিক শাস্ত্রে সেগুলির উল্লেখ আছে, এবং সেটি আধ্যাত্মিক গুরু দ্বারা প্রতিপাদিত করা হয়। কারণ আমরা জানি না। যখন সেটি আধ্যাত্মিক গুরু দ্বারা প্রতিপাদিত করা হয়, হ্যাঁ, এটি ঠিক। সাধু গুরু, সাধু শাস্ত্র গুরু বাক্য, তিনেতে করিয়া ঐক্য শ্রীল নরোত্তম দাস ঠাকুরের একই বক্তব্য। সাধু, যে নীতিগুলি অনুসরণ করা হয়, সাধু মার্গ অনুগমনম্‌। আমরা অসাধু মার্গ অনুসরণ করতে পারি না। আমাদের অবশ্যই সাধু মার্গ অনুসরণ করতে হবে। মহাজনো যেন গতঃ স পন্থাঃ (শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত মধ্য ১৭/১৮৬)। হঠাৎ শুরু হওয়া কিছু অনুসরণ করতে পারি না, কোনও গান তৈরি করে, কিছু ধারণা তৈরি করে। আমরা তা অনুসরণ করতে পারি না। যে গান অনুমোদিত, আমরা তা গাইব। যেটা অনুমোদিত পদ্ধতি, আমরা অনুসরণ করব। সাধু গুরু শাস্ত্রবাক্য। সাধু এবং গুরু অর্থাৎ শাস্ত্রের ভিত্তিতে। আর শাস্ত্র অর্থাৎ সাধু ও গুরুর বক্তব্য। অতএব সাধু এবং গুরু এবং শাস্ত্র, তারা অভিন্ন। সুতরাং তাদের অবশ্যই প্রতিপাদিত হওয়া উচিত। যদি কারো সাধু শাস্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলে, তাহলে সে সাধু নয়। যদি কারো গুরু, যদি সে শাস্ত্রের বিরুদ্ধে যায়, তাহলে সে গুরু নয়। আর শাস্ত্র অর্থাৎ আসল গুরু এবং সাধু। শাস্ত্র বলতে কি বোঝো? ঠিক যেমন শ্রীমদ্ভাগবত। শ্রীমদ্ভাগবত অর্থাৎ আমরা আসল সাধু এবং গুরুর চরিত্র অধ্যয়ন করছি। ঠিক যেমন প্রহ্লাদ মহারাজ, প্রহ্লাদ চরিত্র, ধ্রুব চরিত্র, অম্বরীশ চরিত্র, পাণ্ডব, ভীষ্ম। সুতরাং শ্রীমদ্ভাগবত অর্থাৎ ভগবান ও ভাগের, ভক্তের গুণগান। এখানেই শেষ। এই হল শ্রীমদ্ভাগবত। তাই সাধু-গুরু-শাস্ত্র-বাক্য, তিনেতে করিয়া ঐক্য।

সুতরাং এটি সাধনা ভক্তি। আমাদের অবশ্যই আধ্যাত্মিক গুরুর কাছ থেকে নির্দেশ থেকে নির্দেশ নেওয়া উচিত। আদৌ গুর্বাশ্রয়ম সদধর্মপৃচ্ছাত। কার আধ্যাত্মিক গুরুর প্রয়োজন? যিনি সদধর্মের বিষয় জিজ্ঞাসু, অসদধর্মের বিষয় নয়। সদধর্মপৃচ্ছাত। তস্মাদ গুরুং প্রপদ্যেত জিজ্ঞাসু শ্রেয়ঃ উত্তমম্ (শ্রীমদ্ভাগবত ১১/২/২১)। একজন মানুষের আধ্যাত্মিক গুরুর প্রয়োজন হয় যখন সে পারমার্থিক বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়। আধ্যাত্মিক, আধ্যাত্মিক গুরু ... আধ্যাত্মিক গুরু গ্রহণ করা কোনও ফ্যাশন নয়। ঠিক যেমন আমরা একটি কুকুর, পোষ্য প্রাণী রাখি, একইভাবে, যদি আমরা একটি আধ্যাত্মিক গুরু, পোষা আধ্যাত্মিক গুরু রাখি, আমার সমস্ত পাপকর্মের অনুমোদন পেতে, তা আধ্যাত্মিক গুরু গ্রহণ করা নয়। গুরু অর্থাৎ তদ্ বিদ্ধি প্রাণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন সেবয়া (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৪/৩৪)। তোমার একটি আধ্যাত্মিক গুরু গ্রহণ করা উচিত যেখানে তোমার মনে হয় যে তুমি নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করতে পারবে, এবং তাঁকে সেবা অর্পণ করতে পারবে। তিনি হলেন আধ্যাত্মিক গুরু। সাধুমার্গঅনুগমন। সদধৰ্ম পৃচ্ছাত। অতএব যিনি পারমার্থিক বিষয়বস্তু সম্পর্কে আগ্রহী, সেই ব্যক্তির গুরুর প্রয়োজন, । তদ্ বিদ্ধি প্রাণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন সেবয়া। তদ্বিজ্ঞানার্থং স গুরুমেবাভিগচ্ছেৎ (মুণ্ডক উপনিষদ ১/২/১২)। তদ্বিজ্ঞান, সেই বিজ্ঞান, আধ্যাত্মিক জীবনের বিজ্ঞান। যিনি আধ্যাত্মিক জীবনের বিজ্ঞানের বিষয় আগ্রহী, এমন নয় যে আধ্যাত্মিক গুরুকে ফ্যাশন হিসাবে রাখা। না। একজনকে অবশ্যই গম্ভীর হওয়া উচিত। তস্মাদ গুরুং প্রপদ্যেত জিজ্ঞাসু শ্রেয়ঃ উত্তমম্ (শ্রীমদ্ভাগবত ১১/২/২১)। প্রথমত, একজনকে অবশ্যই জানতে হবে কোন বিষয়টিতে সে কৌতূহলী, জড় জাগতিক বিষয় বা আধ্যাত্মিক বিষয়ে। যদি সে প্রকৃতপক্ষে আধ্যাত্মিক বিষয়ে আগ্রহী হয়, তাহলে তার উচিত একজন যথাযথ, সৎ আধ্যাত্মিক গুরু র সন্ধান করা। গুরুমেবাভিগচ্ছেৎ। সন্ধান করা উচিত। এটি বিকল্প নয়। তা অবশ্যই করা উচিত। অবশ্যই, তুমি এটি এড়াতে পারবে না। সত্যিকারের আধ্যাত্মিক গুরু ছাড়া, তুমি একটি ধাপও এগিয়ে যেতে পারবে না।