BN/Prabhupada 0852 - হৃদয়ের অভ্যন্তরে ভগবান রয়েছেন



750306 - Lecture SB 02.02.06 - New York

হৃদয়ের অভ্যন্তরে ভগবান রয়েছেন জাগতিক জীবন মানে শুধু চারটি কাজেই ব্যস্ত থাকা কিভাবে খাওয়া যাবে, কিভাবে ভাল ঘুমানো যায়, কিভাবে ভাল মৈথুন সুখ ভোগ করা যায় আর কিভাবে আত্মরক্ষা করা যায় আহারনিদ্রাভয়মৈথুনাঞ্চ সামান্যমেতদ্‌ পশুভির্নরানাম্‌ (হিতোপদেশ) কিন্তু এই জিনিসগুলি আমাদের জীবনের সমস্যার সমাধান করছে না আমরা তা বুঝতে পারছি না। সমস্যা রয়েই গেছে এমন নয় যে আমাদের ভারতীয়রা খুব ধনী দেশ দেখে আমেরিকা গেল কারণ ওরা সব সমস্যার সমাধান করে ফেলেছে। না। সমস্যা আছেই। ভারতের চেয়ে বেশি সমস্যা ভারতে হয়তো একটি সমস্যা যে... আসলে কোন সমস্যাই নেই। কিন্তু এমনভাবে বিজ্ঞাপন করা হচ্ছে যে ভারতের লোক না খেয়ে মারা যাচ্ছে কিন্তু আমি একজনকেও না খেয়ে মরতে দেখি নি যাই হোক, সমস্যা আছে জাগতিক জীবন মানেই সমস্যা। আর তুমি যদি সেই সমস্যার সমাধান করতে চাও তাহলে তার সমাধানের পথও বলা আছেঃ তম্‌ নিবৃত্ত নিয়তার্থো ভজেত তম্‌ মানে পরমেশ্বর ভগবান

এরপর প্রশ্ন হতে পারে, "আপনি আমাকে উপদেশ করছেন যে নিজের ভরণপোষণের জন্য সব প্রচেষ্টা ত্যাগ করতে, শুকদেব গোস্বামী বলেছেন। আপনি বলছেন আহারের জন্য একটি গাছের নিচে অপেক্ষা করতে আর গাছটি তোমাকে কিছু ফল দেবে , তুমি তা খেতে পার জলের জন্য নদীর নিকট যাও, আর যত খুশি জল পান কর"। এর আগের শ্লোকে বলা হচ্ছে, "ঘুমের জন্য খুব সুন্দর ঘাস আছে কোন বালিশের দরকার নেই। প্রাকৃতিক বালিশ আছে হাত তো আছেই। শুয়ে পর।" তাই আহারনিদ্রাভয়মৈথুন চ কিন্তু যদি তুমি পারমার্থিক জীবনে উন্নত হতে চাও, তোমাকে কেবল ইন্দ্রিয় তৃপ্তি ত্যাগ করতে হবে আর ইন্দ্রিয় তৃপ্তির সার বস্তু হচ্ছে যৌন জীবন অন্যথায়, তোমার আহার, নিদ্রা, ঘরবাড়ি, সবকিছুই আছে মন্দিরও আছে। "মন্দির কোথায়? আমি ভগবানের পূজা করতে চাই। চার্চ কোথায়? মন্দির কোথায়? যদি আমি গুহায় থাকি, তাহলে আমাকে মন্দির খুঁজে সেখানে যেতে উপায় বের করতে হবে"। তাই শুকদেব গোস্বামী বলেছেন, "না, এবম্‌ স্বচিত্তে স্বত এব সিদ্ধ। "তোমার হৃদয়ের অভ্যন্তরে ভগবান আছেন তুমি যে কোন জায়গায় থাকো না কেন, গুহায়, জঙ্গলে যে কোন স্থানে তুমি চাইলে তোমার অন্তরের ভেতরেই ভগবানকে পাবে" ঈশ্বর সর্বভূতানাম্‌ হৃদ্দে‌শেহর্জুন তিষ্ঠতি (গীতা ১৮.৬১)

শ্রীকৃষ্ণ বলছেন যে, পরমেশ্বর ভগবান - অর্থাৎ তিনি সকলের হৃদয়ে বিরাজমান। যদি আমরা ঐকান্তিক হই... "আমরা মানে জীবাত্মা আমরা এই দেহের ভেতরে বাস করছি অস্মিন্‌ দেহে দেহিনোহস্মিন্‌ দেহে (গীতা ২.১৩)। আমরা এই দেহ নই। আমি, তুমি, আমরা এই দেহের ভেতরে বাস করছি এবং শ্রীকৃষ্ণও এই দেহের ভেতরে বাস করছেন। ঈশ্বর সর্বভূতানাম্‌ হৃদ্দে‌শে (গীতা ১৮.৬১) এমন না যে তিনি হিন্দুদের ভেতরে থাকেন , অন্যদের নয় না। সকলের। সর্বভূতানাম্‌ তিনি এমনকি কুকুর বেড়ালের ভেতরেও আছেন, বাঘের ভেতরেও আছে। সর্বত্র এই হচ্ছেন ঈশ্বর। ঈশ্বর সর্বভূতানাম্‌ হৃদ্দে‌শে আমরা এই শ্লোক বারবার আলোচনা করেছি - খুবই গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক যে এই দেহটি হচ্ছে মোটর গাড়ির মতো, যন্ত্র মায়য়া... ভ্রাময়ন্‌ সর্বভূতানি যন্ত্ররূঢ়ানি মায়য়া (গীতা ১৮/৬১) মায়য়া - মায়া বা জড়া শক্তির মাধ্যমে এই যন্ত্রটি আমাকে দেয়া হয়েছে কেন? কারণ আমি ব্রহ্মাণ্ডজুড়ে ঘুরতে বাসনা করেছিলাম যেমন ওরা চন্দ্রগ্রহে যেতে চাইছে সবারই এই প্রবণতা আছে। একে বলে দার্শনিক চিন্তা সবাই, সমস্ত মানুষ, যদি সে নিজেকে মানুষ ভাবে তো। সেটাই হচ্ছে দার্শনিক মন। সে ভাবে, "ওহ্‌ অনেক নক্ষত্র আছে ওরা ওখানে কি করছে? ওখানে কতজন মানুষ আছে? ওখানে মোটরগাড়ি আছে কিনা? ওখানে পাহাড় সাগর এসব আছে কিনা? এইসব প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই এইকজন বুদ্ধিমান মানুষের আসে এটা হচ্ছে দর্শনের শুরু। স্বাভাবিক।