BN/Prabhupada 0906 - তোমার কাছে শুন্য আছে। কৃষ্ণকে রাখ। তাহলে তোমার দশ হবে



730418 - Lecture SB 01.08.26 - Los Angeles

প্রভুপাদঃ ঠিক যেমন, হয়তো একটা লোক রাস্তায় শুয়ে আছে, দরিদ্র লোক, সাহায্য করার কিছু নেই। তাই বলে কি আমি তাকে হত্যা করতে পারি? রাষ্ট্রের আইন কি আমাকে ক্ষমা করবে? "না আমি তাকে মেরেছি কারণ ও একটা গরীব মানুষ আর আমাদের কাছে ওর কোন প্রয়োজনও ছিল না। সমাজে ওর কোন প্রয়োজন নেই। তাই সে কেন বাঁচবে?" রাষ্ট্র কি আমাকে ক্ষমা করবে যে "ওহ্‌ তুমি খুব ভাল কাজ করেছ?" না। সেই দরিদ্র মানুষটিও এই দেশেরই নাগরিক। তুমি তাকে হত্যা করতে পার না। এই নীতিটাকে কেন আরেকটু বিস্তৃত করে দেখছ না যে অবলা পশুগুলি গাছপালা, পাখি, জন্তু, তারাও তো ভগবানের সন্তান। তুমি তাদের হত্যা করতে পার না। তোমাকে দায়ী হতে হবে। তোমাকে ফাঁসি দেওয়া হবে। ঠিক যেমন রাস্তায় একটা দরিদ্র লোককে হত্যা করলে তোমাকে ফাঁসিতে ঝুলতে হবে, এটা কোন কথা না যে গরীব না কি। ঠিক তেমনই ভগবানের দৃষ্টিতে সেই রকম কোন বৈষম্য নেই। ভগবানের কি কথা, এমনকি একজন সাধারণ শিক্ষিত মানুষের চোখেও এইরকম কোন বৈষম্য নেই। "এ গরীব, এ ধনী, এ সাদা, এ কালো, এই এই ..."। না সকলেই ভগবানের নিত্য অংশ।

তাই একমাত্র বৈষ্ণবরাই হচ্ছে সমস্ত জীবের হিতৈষী। তাঁরা চাইছেন ওদের উন্নত করতে একজন বৈষ্ণব চান সমস্ত জীবকে কৃষ্ণভাবনামৃতের স্তরে উন্নীত করতে। লোকানাম্‌ হিতকারিণৌ। ঠিক শ্রীল রূপ গোস্বামী ও অন্যান্য গোস্বামীদের মতো। লোকানাম্‌ হিতকারিণৌ ত্রিভূবনে মান্যৌ শরণ্যাকরৌ একজন বৈষ্ণবের এই দর্শন নেই যে ইনি ভারতীয়, ইনি আমেরিকান, এই সেই... কেউ একজন আমাকে প্রশ্ন করেছিল, "আপনি আমেরিকা কেন এসেছেন?" আমি কেন আসব না? আমি ভগবানের দাস, আর এটি হচ্ছে ভগবানের রাজত্ব। আমি কেন আসতে পারব না? আমাকে বাধা দেয়াটা কৃত্রিম। যদি তুমি আমাকে বাধা দাও, তাহলে তুমি পাপ করছ ঠিক যেমন সরকারের দাস, পুলিশ, তিনি যে কারও বাড়িতে প্রবেশ করার অধিকার রাখেন। এটা কোন জোরপ্রবেশ না। ঠিক তেমনই ভগবানের দাস তিনি যে কোন স্থানে যেতে পারেন, কেউই তাঁকে বাধা দিতে পারে না। যদি তাঁকে বাধা দেয়া হয়, তাহলে তাকে শাস্তি পেতে হবে। কারণ সবকিছুই ভগবানের।

এইভাবে আমাদের সবকিছু সঠিক দৃষ্টিতে দেখতে হবে। এর নাম কৃষ্ণ ভাবনামৃত। কৃষ্ণভাবনামৃত কোন সঙ্কীর্ণ ধারণা নয়। তাই কুন্তী দেবী বলেছেন, "জন্মৈশ্বর্য শ্রুতশ্রীভিঃ এধমানমদঃপুমান্‌ (ভাগবত ১/৮/২৬) যারা তাদের মদমত্ততা বাড়াচ্ছে তারা কৃষ্ণভাবনাময় হতে পারবে না এইরকম মানুষ কৃষ্ণভাবনাময় হতে পারবে না। এধমানঃ মদঃ কারণ তারা মদমত্ত। ঠিক একজন নেশাগ্রস্ত মানুষের মতো। সে এখন সম্পূর্ণভাবে নেশাগ্রস্ত এবং আজেবাজে বকছে। কেউ যদি ওকে বলে, "প্রিয় ভাই আমার, তুমি উলটোপালটা বকছ। এই হচ্ছে বাবা, এই হলেন মা।" কে সবের পরোয়া করে? সে তো নেশাগ্রস্ত হয়েই আছে। ঠিক তেমনই এইসব নেশাগ্রস্ত বদমাশগুলোদের যদি বল, এই হচ্ছেন ভগবান", ওরা সেটা বুঝবে না। কারণ ওরা নেশাগ্রস্ত। তাই কুন্তীদেবী বলেছেন, ত্বাম্‌ অকিঞ্চন গোচরম্‌ তাই যদি কেউ এই মত্ততা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে, তা একটা ভাল যোগ্যতা। জন্মৈশ্বর্যশ্রুত শ্রী ... উচ্চ বংশে জন্ম, ভাল ধনসম্পদ, ভাল বিদ্যা এবং ভাল সৌন্দর্য। এইগুলো ব্যবহার করা যায়। যখন সেই একই ব্যক্তি কৃষ্ণভাবনাময় হন... ঠিক যেমন তোমরা আমেরিকান ছেলে মেয়েরা করছ। তোমরা নেশাগ্রস্ত ছিলে কিন্তু যক্ষণ সেই মত্ততা চলে গেছে তখন তোমরা আরও ভাল কৃষ্ণ ভাবনামৃত করতে পারছ ঠিক যেমন তোমরা যখন ভারতে যাও, তখন তারা আশ্চর্য হয়ে যায় এইসব আমেরিকান ছেলে মেয়েরা ভগবানের জন্য এতো পাগল কীভাবে। কারণ এই সব কিছু তাদের এই শিক্ষা দেয় যে, "তোমরা মূর্খরা এঁদের দেখে শেখ।" তোমরা পাশ্চাত্যের অনুকরণ কর। এখন এঁদের দেখ, সব পাশ্চাত্যের ছেলে মেয়েরা কৃষ্ণভাবনামৃতে নৃত্য করছে। এখন এঁদের অনুকরণ কর। এটাই ছিল আমার পরিকল্পনা।

এখন তা বাস্তবে রূপ পেয়েছে। হ্যাঁ। তাই সবকিছুই সেবায় লাগানো যায়। যদি তুমি ভাল অংশটা লাগাও... যদি তুমি মত্ত থাকো, এটা কাজে না লাগাও, তাহলে তা কোন ভাল সম্পদ নয় কিন্তু তুমি তা ভাল উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পার যদি তুমি তোমার সম্পদকে কৃষ্ণসেবায় লাগাও তাহলে তুমি ভাল অবস্থায় থাকবে সেই একই উদাহরণ। ঠিক যেমন শুন্য। শুন্যের কোন মূল্য নেই কিন্তু যেই মাত্র তুমি শুন্যের আগে একটা এক লাগাবে, সঙ্গে সঙ্গে তা দশ হয়ে যাবে তৎক্ষণাৎ দশ হয়ে যাবে। আরেকটা শুন্য একশ, আরেকটা, হাজার। তেমনই এই জন্ম-ঐশ্বর্য-শ্রুত-শ্রী । তুমি যতক্ষণ এসবের প্রতি নেশাগ্রস্ত থাক, এগুলো কেবল শুন্য কিন্তু যযেই মাত্র তুমি কৃষ্ণকে যোগ করলে, এটা দশ, একশ, হাজার, লক্ষ হয়ে যাবে।

ভক্তগণঃ জয়। হরিবোল। (হাসি)।

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। সেটিই হচ্ছে সুযোগ। তোমার এই সুযোগ আছে তোমরা যত আমেরিকান ছেলে মেয়েরা আছ, তোমাদের কাছে সেই সুযোগ আছে তোমাদের শুন্য আছে। কৃষ্ণকে রাখ। তা দশ হয়ে যাবে। (হাসি) হ্যাঁ।

অনেক ধন্যবাদ।

ভক্তবৃন্দঃ হরিবোল। জয় প্রভুপাদ। শ্রীল প্রভুপাদের জয়।