BN/Prabhupada 1020 - হৃদয় রয়েছে শুধু ভালোবাসার জন্য, তাহলে কেন তোমরা এতো নির্দয়



হৃদয় রয়েছে শুধু ভালোবাসার জন্য, তাহলে কেন তোমরা এতো নির্দয়? সুতরাং পাণ্ডবেরা, তাঁরাও শ্রীকৃষ্ণকে ভালোবাসার স্তরে ছিলেন। প্রত্যেকেই এই স্তরে রয়েছে, কিন্তু এটি বিভিন্ন মাত্রায় রয়েছে। একই ভালোবাসা। কেউ তার পরিবারকে ভালবাসছে, কেউ তার স্ত্রীকে ভালবাসছে, কেউ তার সমাজ বা বন্ধুকে ভালবাসছে, সমাজ, বন্ধুত্ব। বিভিন্নভাবে বিভক্ত থাকে। কিন্তু ভালোবাসার চূড়ান্ত পর্যায় হচ্ছে যখন তুমি শ্রীকৃষ্ণকে ভালবাসবে। স বৈ পুংসাং পরো ধর্মো (শ্রীমদ্ভাগবত ১.২.৬)। ধর্ম মানে কর্তব্য। এটি হচ্ছে ধর্ম। অথবা স্বভাব। ধর্ম বলতে অন্ধগোঁড়ামিকে বোঝায় না। এটি সংস্কৃতের অর্থ নয়। ধর্ম মানে প্রকৃত স্বভাব বা বৈশিষ্ট্য। আমি বেশ কয়েকবার ব্যাখ্যা করেছি যে জল হচ্ছে তরল; এটি হচ্ছে জলের নিত্য স্বভাব। জল যখন কঠিন হয়ে যায়, এটি জলের নিত্য ধর্ম নয়। জল প্রকৃতিগতভাবেই তরল। এমনকি জল যখন শক্ত হয়ে যায়, যেমন বরফ, এর পুনরায় তরল হওয়ার প্রবণতা থাকে। আবার। আবার তরল।

সুতরাং আমাদের প্রকৃত অবস্থান, স্বাভাবিক অবস্থান হচ্ছে, শ্রীকৃষ্ণকে ভালোবাসা। কিন্তু আমরা এখন শ্রীকৃষ্ণকে না ভালোবাসার কারণে নির্দয় হয়ে গিয়েছি। ঠিক যেমন জল কিছু অবস্থাগত কারণে শক্ত হয়ে বরফ হয়ে যায়। তাপমাত্রা যখন খুব কম থাকে, জল শক্ত হয়ে যায়। একইভাবে, যদি আমরা শ্রীকৃষ্ণকে ভালো না বাসি, তাহলে আমাদের হৃদয় কঠিন থেকে কঠিন, আরও কঠিন হয়ে যাবে। হৃদয় রয়েছে ভালোবাসার জন্য, তাহলে কেন তোমরা এতো নির্দয়? কেন আমরা এতো নির্দয় যে আমরা আমাদের সগোত্রীয় প্রাণী বা অন্য প্রাণীদের হত্যা করি- আমরা এটিকে পরোয়া করি না- আমার জিহ্বার লালসার কারণে? কারণ আমরা নির্দয় হয়ে গিয়েছি। কঠিন হৃদয়। শ্রীকৃষ্ণের প্রেমিক না হওয়ার কারণে, আমরা সবাই নির্দয় হয়ে গিয়েছি। তাই সারা পৃথিবী অসুখী। কিন্তু তুমি যদি, হৃদয়েণ... তাই এটি বলা হয়েছে, প্রেষ্ঠতমেনাথ হৃদয়েনাত্মবন্ধুনা। যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণকে ভালোবাসো, যিনি তোমার প্রকৃত বন্ধু, ভগবদ্গীতায় শ্রীকৃষ্ণ যেমন বলেছেন, সুহৃদং সর্বভূতানাং (ভগবদ্গীতা ৫.২৯)। তাই যখন আমরা প্রকৃতপক্ষেই শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত হয়ে উঠব, যেহেতু শ্রীকৃষ্ণের গুণগুলো তোমার মধ্যে রয়েছে, যদিও খুব অল্প পরিমাণে, তখন তুমিও সুহৃদং সর্বভূতানাং হয়ে উঠবে। সুহৃদং সর্বভূতানাং মানে সমস্ত জীবের বন্ধু। সুহৃদং। বৈষ্ণবদের কাজ কি? বৈষ্ণবদের কাজ হচ্ছে, যারা জাগতিক ভাবে খুব কষ্ট পাচ্ছে , তাদের প্রতি দয়াপরবশ হওয়া। এটিই হচ্ছে বৈষ্ণবতা। তাই বৈষ্ণবের বিবরণ হচ্ছে,

বাঞ্ছাকল্পতরুভ্যশ্চ
কৃপাসিন্ধুভ্য এব চ
পতিতানাং পাবনেভ্য
বৈষ্ণবেভ্য নমো নমোঃ
(শ্রীবৈষ্ণব প্রণাম)।

পতিতানাং পাবনেভ্যো। পতিত মানে "অধঃপতিত বা স্খলিত।"