BN/Prabhupada 1025 - শ্রীকৃষ্ণ শুধু অপেক্ষা করছেন, 'কবে এই বদমাশটা আমার দিকে মুখ ফিরে তাকাবে?'



731129 - Lecture SB 01.15.01 - New York

প্রদ্যুম্নঃ অনুবাদঃ "সূত গোস্বামী বললেনঃ কৃষ্ণসখা অর্জুনকে, শ্রীকৃষ্ণের বিরহে কাতর দেখে, তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা যুধিষ্টির মহারাজ এইভাবে নানা প্রকার আশঙ্কাযুক্ত প্রশ্ন করলেন।" (শ্রীমদ্ভাগবত ১.১৫.১)।

প্রভুপাদঃ সুতরাং এবম্‌ কৃষ্ণসখঃ কৃষ্ণঃ। অর্জুনের নাম হচ্ছে কৃষ্ণসখা, এবং তাঁকে কখনও কখনও কৃষ্ণ বলেও ডাকা হয়, কারণ অর্জুনের দেহাবয়ব প্রায় শ্রীকৃষ্ণের দেহাবয়বের মতো ছিল। তাই তিনি শ্রীকৃষ্ণের বিরহে বিষণ্ণ ছিলেন, এবং তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা তাঁকে জিজ্ঞাসা করছিলেন যে তাঁর কি এই কারণে অথবা অন্য কোন কারণে মন খারাপ কিনা। প্রকৃতপক্ষে, শ্রীকৃষ্ণের সাথে বিচ্ছেদ হওয়ার কারণে তিনি অসুখী হয়েছিলেন। একইভাবে, শুধু অর্জুনই নয়, আমরাও ... যেহেতু অর্জুনও জীব, আমরাও জীব, তাই আমরাও অসুখী, কারণ আমরা শ্রীকৃষ্ণের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছি। আধুনিক দার্শনিক অথবা বিজ্ঞানীরা, তারা অন্য কোন কিছু বলতে পারে বা চিন্তা করতে পারে যে, তারা নিজেদের মতো করে পৃথিবীর অবস্থার উন্নতি ঘটাবে, কিন্তু এটি অসম্ভব। আমরা শ্রীকৃষ্ণের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে অসুখী। এটা তারা জানে না। ঠিক যেমন একটি শিশু, একটি শিশু কাঁদছে, কেউ জানে না সে কেন কাঁদছে, কিন্তু আসলে একটি শিশু সাধারনত তার মায়ের কাছ থেকে আলাদা হলে কান্নাকাটি করে।

তো এই প্রশ্নটি শুধু অর্জুন অথবা শ্রীকৃষ্ণের ক্ষেত্রেই নয়, আমাদের প্রত্যেকের জন্য... উপনিষদে বলা হয়েছে যে পরমাত্মা শ্রীকৃষ্ণ এবং জীব, তাঁরা একই বৃক্ষে বসে আছে, সমানি বৃক্ষে। জীব সেই গাছের ফল আহার করছে, আর অন্যজন শুধু তা সাক্ষী হিসেবে দর্শন করছে, অনুমন্তা। সুতরাং শ্রীকৃষ্ণ, প্রত্যেকের হৃদয়ে অবস্থিত, ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠটি (ভগবদ্গীতা ১৮.৬১)। কারণ তাঁর অনুমোদন ছাড়া , জীবাত্মা কোন কিছুই পেতে পারে না। সর্বস্য চাহং হৃদিসন্নিবিষ্টো (ভগবদ্গীতা ১৫.১৫)ঃ শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন যে "আমি সকলের হৃদয়ে অবস্থিত।" তো জীবাত্মা যখন তার খেয়ালখুশি মতো কিছু চায়, শ্রীকৃষ্ণ তখন পরামর্শ দেন যে "এটি তোমাকে সুখী করবে না, এটি করো না।" কিন্তু সে জেদ ধরে, সে এটি করবেই। তখন শ্রীকৃষ্ণ,পরমাত্মা অনুমোদন দেন, "ঠিক আছে, তুমি নিজের ঝুঁকি নিয়ে তা কর।" এটিই চলছে। আমাদের প্রত্যেকেই শ্রীকৃষ্ণের সাথে অত্যন্ত অন্তরঙ্গভাবে সম্পর্কিত এবং শ্রীকৃষ্ণ প্রত্যেকের হৃদয়ে বসে আছেন। শ্রীকৃষ্ণ এতো দয়ালু যে, তিনি শুধু দেখছেন, "কখন এই বদমাশটা আমার দিকে মুখ ফিরে তাকাবে।" তিনি শুধু তাকিয়ে আছেন... তিনি এতো দয়ালু। কিন্তু আমরা জীবাত্মারা, আমরা এতো বদমাশ, আমরা শ্রীকৃষ্ণ ছাড়া আর সবকিছুর দিকে তাকাবো। এটি হচ্ছে আমাদের অবস্থা।